চলমান ইস্যুতে দুই ভাগ হয়ে শিল্পীদের প্রতিবাদ
- আলমগীর কবির
- ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান ইস্যুতে দুভাগ হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিল্পীরা। গত বৃহস্পতিবার একটি ভাগ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে, অন্যটি ‘সব সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা’-এই স্লোগান ব্যানারে ধারণ করে।
‘দৃশ্যমান শিল্পীসমাজ’ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ফার্মগেট সেজান পয়েন্টের সামনে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে রাষ্ট্রের প্রতি দাবি জানান ভয়হীন, ন্যায্য ও মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ গড়ার, সব হত্যার বিচার করার এবং চলমান হত্যা, সহিংসতা, গণগ্রেফতার আর হয়রানি বন্ধ করার। এই দাবি জানানোর সময় হাজির ছিলেন মামুনুর রশীদ, মোশাররফ করিম, আজমেরী হক বাঁধন, সাবিলা নূর, আশফাক নিপুণ, নুরুল আলম আতিক, অমিতাভ রেজা, পিপলু আর খান, শিবু কুমার শীল, রেদওয়ান রনি, জাকিয়া বারী মম, সোহেল মণ্ডল, সিয়াম আহমেদসহ অনেকে। প্রায় প্রত্যেকেরই একই দাবি- হত্যার বিচার এবং হত্যা বন্ধ করা। সাথে সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতিও।
পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘এই রাজনীতি, ভয়ের রাজনীতি, এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে রাজনীতি, যেভাবে গুলি করা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল আরো আগে। বড্ড দেরি হয়ে গেছে।’ অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘আমাদের দেশে যে অবস্থা বর্তমানে সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা ঘরে বসে থাকার মতো অবস্থায় নেই। আমরা শান্তি চাই। রক্ত দেখতে চাই না। গোলাগুলি, রক্ত দেখতে চাই না। আমি ও আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা শান্তি চাই। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘আমিও কিন্তু অন্য অনেকের মতো এই রাষ্ট্র বা সরকারের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী একজন মানুষ। আমার তো দরকার ছিল না সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে এভাবে বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তায় এসে স্লোগান ধরার। বাকি জীবনটা আমি খুব আরামেই কাটাতে পারি চুপচাপ। প্রশ্ন আসবে আরাম ফেলে কেন আমি এমনটি করছি? উত্তরও দিচ্ছি। আমি তো শুধু অভিনেত্রী নই। এর বাইরেও আমি একজন মা, একজনের সন্তান এবং এই দেশের একজন সচেতন নাগরিক। যে বাচ্চাটা ছাদে খেলতে গিয়ে গুলি খেয়ে মরে গেল, সে তো আমারও মেয়ে হতে পারত। তখন কি আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে এর বিচার চাইতাম না? যে হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল এবং ঘটছে, সেটির বিচার কি আমি চাইব না? যদি না চাই, তাহলে তো আমি এই রাষ্ট্রের কেউ না। অথবা বোধশূন্য অমানুষ।
নায়ক সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘আমার আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কারণ, পুরো দেশের মানুষ একই কথা বলছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ যখন কোনো দাবি রাখে, তখন সেটি মাথায় আনা দরকার। আপনি যদি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হন, মৃত্যুগুলো দেখে আপনি রাতে ঘুমাতে পারবেন না। সত্যি কথা বলতে আমার কানে এখনো বাজে- কারো পানি লাগবে? এটি যতদিন আমার মাথায় থাকবে ততদিন মনে হয় আমি শান্তিতে ঘুমাতেও পারব না।’
অন্যদিকে ‘সব সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা’-এই স্লোগান ব্যানারে বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছিলেন সংস্কৃতি অঙ্গনের একঝাঁক তারকা। এদের মধ্যে ছিলেন সুজাতা, অরুণা বিশ্বাস, শমী কায়সার, ফেরদৌস, রিয়াজ, আজিজুল হাকিম, রোকেয়া প্রাচী, সুইটি, হৃদি হক, নিপুণ, জ্যোতিকা জ্যোতি, সাজু খাদেম, সোহানা সাবা, চন্দন রেজা, শুভ্র দেব, মুশফিকুর রহমান গুলজার, এস এ হক অলিক, খোরশেদ আলম খসরুসহ নাটক ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকেই। বিটিভিতে এ ধ্বংসযজ্ঞ কেন, এর পেছনে কারা? এমন প্রশ্ন তুলে এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান শিল্পীরা। পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন তারা।
শুভ্র দেব বলেন, ‘এই বিটিভি ছিল বাংলাদেশের প্রখ্যাত সব শিল্পীদের পদচারণামুখর একটি পবিত্র জায়গা। আমি বিশ্বাস করি, কোনো বাংলাদেশী এই বিটিভিতে আক্রমণ করতে পারে না। প্রত্যেকটি শিল্পীর হৃদয়ে যে ক্ষরণ হয়েছে, যে ক্ষত হয়েছে তা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। যারা এ ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদের সবাইকেই বিচারের আওতায় আনতে হবে। যে সব প্রাণহানি হয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সেসবের বিচার হবে- এটিই আমার কাম্য।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা