২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

একাডেমিক জ্ঞানের পাশাপাশি মূল ইন্ডাস্ট্রিতেও সময় দিতে হবে - মনোজ

একাডেমিক জ্ঞানের পাশাপাশি মূল ইন্ডাস্ট্রিতেও সময় দিতে হবে - মনোজ -


মনোজ প্রামাণিক। মডেল ও অভিনেতা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রযোজক হিসেবে অনুদান পেয়েছেন অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক। ‘সেয়ানা’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ইকবাল হাসান খান। এ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাকিবুল হাসান

আপনার অভিনয়ের শুরুর দিকটা একটু জানতে চাই?
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একটা ডিজিটাল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো একটা পাগলের চরিত্রে। তার পর তো ঢাকায় এসে নানা ধরনের কাজ করেছি। সত্যি কথা বলতে অভিনয়কে ভালোবেসে আমি শোবিজে নাম লিখিয়েছি।
কিন্তু আপনি নাকি সহকারি পরিচালক হওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন?
এটা সত্যিই শোনেছেন। তবে আমি জীবনের লক্ষ্য কখনোই নির্ধারণ করতে পারিনি। তাই ঠিক আছে কি না, বলতে পারছি না। আমি আসলে কনফিউজড ছিলাম সব সময়। অভিনয় করব? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করব? পরিচালনা করব? নাকি অন্য কিছু? অনেক ভাবনা চিন্তা করে এবং কাজের মধ্য দিয়ে এসেও নির্ধারণ করতে পারছিলাম না আমার আসলে লক্ষ্য কী? তাই নিজেকে ছেড়ে দিয়েছিলাম। যখন যেটা ইচ্ছা হয়েছে, সেটাই করেছি। শেষ পর্যন্ত যেখানে গিয়ে দাঁড়াব, সেটাই হয়তো চূড়ান্ত। তাই এখন এসব নিয়ে অত ভাবি না।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফিল্ম স্টাডিজ’ বিভাগে শিক্ষকতার সাথে যুক্ত আছেন। এ মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে কেমন করছে বলে মনে করেন?

আমাদের দেশে তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিষয়ে পড়ালেখা করানো হয়। তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি অথবা দুটি ব্যাচ বেরিয়েছে। তারা এখনই যে সিনেমায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে, এমনটা আশা করি না। কারণ একাডেমিক জ্ঞানের পাশাপাশি মূল ইন্ডাস্ট্রিতেও তাদের সময় দিতে হবে। তবে আমার বিশ্বাস, একটা সময় এসব শিক্ষার্থী নিজেদের আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।
সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘সেয়ানা’র কাজ কতটুকু এগিয়েছে?
গবেষণা ও চিত্রনাট্য ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে আছে। তাড়াহুড়া করতে চাইছি না। ধীরে-সুস্থে পরিকল্পনামাফিক এগোতে চাই। প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা করেছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে শুটিং শুরু করব।

সেয়ানা সিনেমার গল্প কী নিয়ে?
ইংরেজ আমলের বিপ্লবী উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের ‘সেয়ানা’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হবে সিনেমাটি। গল্পের প্রেক্ষাপট ১৯৪৭ সালের আগের সময় থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত। সেই সময়ের নিম্নবর্গীয় পকেটমারদের জীবন, তৎকালীন রাজনীতি, অর্থনৈতিক অবস্থা ও দেশভাগের প্রভাব উঠে আসবে সিনেমার গল্পে।
সরকারি অনুদানের সিনেমা নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেয়া থাকে। সময়মতো কাজ শেষ করতে পারবেন?
মন্ত্রণালয় থেকে সিনেমা বানানোর জন্য যে সময় দেয়া থাকে, এর মধ্যে শেষ করা অনেক চ্যালেঞ্জিং। গবেষণা, শুটিং লোকেশন নির্বাচন, শিল্পী বাছাই, শুটিং, পোস্ট প্রোডাকশন- সব মিলিয়ে অনেক কাজ থাকে। যারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তারা এই বিষয়গুলো জানেন। সেই জায়গা থেকে এক বছরের সময়সীমা কোনো সিনেমার ক্ষেত্রে ঠিক আছে, আবার কিছু সিনেমার ক্ষেত্রে সময় বাড়ানোর প্রয়োজন। আমাদের সিনেমাটি পিরিয়ডিক্যাল, তাই একটু বেশি সময় লাগতে পারে। আমরা অবশ্যই কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করেই এগোব।

পুরনো সময়ের চিত্র এখন এসে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এটি নিয়ে আপনাদের প্রস্তুতি কেমন?
এ বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্বের সাথে দেখছি। চিত্রনাট্যের ফাইনাল ড্রাফট তৈরি হওয়ার পর শুটিং লোকেশন চূড়ান্ত করব। সব লোকেশন হয়তো পাওয়া যাবে না। তাই কিছু সেট নির্মাণ করে শুটিং করার ভাবনা আছে।
অনেক অভিনয়শিল্পী প্রযোজনায় আসেন। তবে নিয়মিত থাকেন না। আপনার ক্ষেত্রেও তেমনটা হবে?
আমি কিন্তু হুট করে সিনেমা প্রযোজনায় চলে আসিনি। তিন বছর ধরে প্রযোজনার সাথে জড়িত। মনপাচিত্র নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে। আমরা নিয়মিত টেলিভিশন নাটক, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও বিজ্ঞাপনের কাজ করছি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও আমাদের কাজ প্রদর্শিত হয়েছে। একটি ফিচার ফিল্ম করেছি। ভবিষ্যতে কী হবে, এটা তো বলতে পারব না। এখন শিক্ষকতা করছি, অভিনয় করছি, প্রযোজনা করছি, সামনে হয়তো না-ও করতে পারি। তবে আমি চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। সরকারি অনুদান পাওয়াটা আমার জন্য অনুপ্রেরণার।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement