২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

এক জীবনে অগণিত মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি : জেমস

-


ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস। অনেকের কাছে তিনি গুরু, অনেকে তাকে বলেন বাংলাদেশের শীর্ষ রকস্টার। মঙ্গলবার দেড় মাসের সফরে কানাডার পথে রওনা হয়েছেন। এই সফর ও সঙ্গীত জগতে দীর্ঘ ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাকিবুল হাসান
প্রশ্ন : সম্প্রতি লন্ডন মাতিয়ে এসেছেন। এবার যাচ্ছেন কানাডায়। কত দিনের সফর?
জেমস : সাধারণত আমার বিদেশ ট্যুরগুলোর উদ্দেশ্য থাকে কনসার্ট। এবারো ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কানাডার বিভিন্ন শহরে এবার কনসার্ট করব। এ জন্য দেড় মাসের মতো শিডিউল বুকিং দেয়া আছে।
প্রশ্ন : কোন কোন শহরে কবে কনসার্টগুলো হবে?

জেমস : ২২ জুন টরন্টো থেকে শুরু হবে কানাডায় গানের সফর। দ্বিতীয় কনসার্ট ৩০ জুন ভ্যানকুভারে। তৃতীয় কনসার্ট আগামী ৬ জুলাই ক্যালগেরিতে। সপ্তাহখানেকের বিরতির পর ১৩ জুলাই কানাডার সাসকাচুয়ানে কনসার্ট। তার এক সপ্তাহ পর সফরের পঞ্চম কনসার্ট ২০ জুলাই অন্টারিওর বন্দর শহর হ্যামিলটনে। এরপর ষষ্ঠ কনসার্ট করতে গোলাপের শহর উইন্ডসরে যাব ২১ জুলাই।
তারপর ২৭ জুলাই মনকটন ও ২৮ জুলাই মন্ট্রিয়ালে কনসার্ট করে দেশে ফিরব।
প্রশ্ন : নিয়মিত কনসার্ট করলেও নতুন গান নেই অনেক দিন ধরে। মাঝে ২০২২ ও ২৩ সালে দুটি গান আসলেও সেরকম সারা নেই। এর কারণ কি বলে মনে করেন আপনি?
জেমস : নতুন গান আবার কী! এক জীবনে যা গান গেয়েছি, এগুলো তো শুনে শেষ হবে না। তা ছাড়া এখন মন চাইছে না নতুন গান করি। আবার যদি মন বলে গান গাওয়ার জন্য, তখন অবশ্যই করব। ২০২২ সালে ‘আই লাভ ইউ’ শিরোণামে গানটি আমি আমার ভক্তদের উদ্দেশ্যে করে বেঁধেছি, সুর করেছি, কম্পজিশন করেছি। এর বিষয় বৈচিত্র্যে ঠাঁই পেয়েছে দীর্ঘ চার দশক ধরে মঞ্চ কিংবা সর্বত্র আমার সাথে ভক্তদের বয়ে চলা, অপরিসীম ভালোবাসার সম্পর্ক। এই গানটি ভক্তদের উদ্দেশ্যে গেয়েছি এবং তাদেরই উৎসর্গ করেছি। ২০২৩ সালে এসেছিল ‘সবই ভুল’। প্রথম গানের শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখে সময় নিয়ে দ্বিতীয় গানটি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো কিছু একক গান তাদের সাথে করব।
প্রশ্ন : আপনি গানের জগতের অনেক পরিবর্তন দেখেছেন। শুরুতে ক্যাসেট চলত, এরপর সিডি, এফএম রেডিও, এখন মানুষ ইউটিউবে গান শোনে। এই পরিবর্তনগুলাকে কিভাবে দেখেন?
জেমস : পরিবর্তনকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখছি। আগে একটা গান শ্রোতার কাছে পৌঁছতে অনেক সময় লাগত, এখন দ্রুত তা সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তা ছাড়া এখন শিল্পীকে গান প্রকাশের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হচ্ছে না। ছেলেমেয়েরা একটা গান বানিয়ে, ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে ছেড়ে দিচ্ছে। স্বাধীন একটা মাধ্যম, কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য নেই। কারো সহযোগিতা ছাড়াই একজন শিল্পী গান নিয়ে তার কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারছেন। আর কোনোভাবে একজন শিল্পীর একটা গান যদি হিট হয়ে যায়, তাহলে তো কথাই নেই। কারও দয়ায় বাঁচতে হচ্ছে না।
প্রশ্ন : অনেক শিল্পী অভিযোগ করেন, পাইরেসির কারণে এখন আর সিডি চলে না।

জেমস : না চলুক। সিডি চলতে হবে কেন? সিডি ছাড়াই তো এখন কত প্রতিভাবান শিল্পী আসছে, তাদের গান শ্রোতারা শুনছেন। সিডির বিকল্প হিসেবে তারা ইউটিউবকে বেছে নিয়েছে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে এভাবে মানুষ তার প্রয়োজনের ব্যাপারটি খুঁজে নেয়। অনেক শিল্পী হিট হচ্ছে। এরা তো কোনো সিডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে হয়নি। ইন্টারনেটের যুগ, তাই এটা সম্ভব হয়েছে।
প্রশ্ন : গানের জগতে অনেক বছরের পথচলা। পেছন ফিরে তাকালে কেমন লাগে?
জেমস : দারুণ অনুভূতি হয়। এক জীবনে অগণিত মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। মানুষের ভালোবাসা পেতে কার না ভালো লাগে।
এ এক স্বর্গীয় অনুভূতি। তবে এটাও ঠিক, পথটা মোটেও মসৃণ ছিল না। অনেক ওঠানামা ছিল। কিন্তু কখনোই হাল ছাড়িনি। গান করছি এটাই আমার আনন্দ, এটাই ছিল আমার ভালো লাগা-ভালোবাসা। তারপর কী হয়েছে, না হয়েছে এটা নিয়ে ভাবিনি। কিছু না হলেও গানই গাইতাম।

 


আরো সংবাদ



premium cement