২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাংলাদেশে গান এখন ভিডিওকেন্দ্রিক : হাবিব ওয়াহিদ

বাংলাদেশে গান এখন ভিডিওকেন্দ্রিক : হাবিব ওয়াহিদ -

হাবিব ওয়াহিদ। পরিচিতিটা এসেছিল ভিন্ন ধারার সঙ্গীতায়োজনের জন্য। তবে এখন তিনি সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীতপরিচালক হিসেবে বেশি জনপ্রিয়। ইদানীং ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে নিয়মিত গান প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি স্টেজ শোও করছেন। নতুন গান, বর্তমান ব্যস্ততা ও সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাকিবুল হাসান-

নতুন গান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন দিকটি প্রাধান্য দেন?
- গান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে শ্রোতাদের টেস্ট লেবেলটি আমার কাছে সবসময় অগ্রাধিকার পায়। সময়ের সাথে মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়। যেকোনো নতুন গানের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি আমার বিবেচনায় থাকে। একটি গান যদি অনেক যতœ করে করা হয়, সেটি যদি শ্রোতা পর্যন্ত না পৌঁছায় তবে ভালো কাজের আগ্রহ থাকে না। তাই শ্রোতাদের রুচির প্রতি খেয়াল রাখাটা জরুরি।
নতুন গান ‘মন বোঝে না’তে কি এ বিষয়গুলো বিবেচনায় ছিল?
- অবশ্যই ছিল। তবে গানের মুডটি অন্য গান থেকে আলাদা। দেবশ্রী অন্তরার কণ্ঠ আমার কাছে বেশ আলাদা মনে হয়েছে। বলিউডে ইদানীং জনপ্রিয়তা পাওয়া শিল্পা রাওয়ের ভয়েসের ধরন যেমন একটু ডিফরেন্ট, দেবশ্রীর কণ্ঠটা ঠিক তেমন।
নতুনদের নিয়ে আপনি বেশি কাজ করেন, এর কারণ কি?
- নতুনদের সাথে কাজ করতে আমার ভালো লাগে। আবার গানগুলো যে শুধু নতুনদের সুযোগ দেয়ার জন্য করছি, ব্যাপারটি সেরকমও নয়। প্রতিটি মানুষের কণ্ঠে নিজস্বতা থাকে। একজন সুরকার ও সঙ্গীতপরিচালক হিসেবে সবসময় এ জিনিসগুলো খোঁজার চেষ্টা করি। ভিন্ন ধরনের কণ্ঠ আমাকে ভিন্ন ধরনের গান বানাতে সাহায্য করে। একটি কণ্ঠ নিয়ে যদি নিয়মিত কাজ করি তাহলে ঘুরেফিরে এক ধরনের গান তৈরি হবে। এ কারণেই নতুন কণ্ঠ খুঁঁজি। তাই নতুনদের সাথে আমার কাজের সংখ্যা বেশি।
ইদানীং আপনাকে ফোক ঘরানার গানে কম দেখা যায় কেন?
- একেবারেই যে ফোক গান করছি না, ব্যাপারটি তেমন নয়। দুই মাস আগে ‘জোনাক জ্বলে’ শিরোনামে একটি গান করেছি। এতে আমার সাথে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যান্স। ইউটিউবে গানটির টিজার ছাড়ার পর থেকে শ্রোতাদের থেকে অনেক সাড়া পাচ্ছি।
কবে আসবে সে গান?
- প্রথমে চিন্তা করেছিলাম অডিও আকারে প্রকাশ করার। তাই সে সময়ে টিজার ছাড়া হয়েছিল। পরে পরিকল্পনা করা হয়, শুধু অডিও নয়, ভিডিও আকারে প্রকাশ করা হবে। এ কারণেই একটু দেরি হচ্ছে।
সিনেমার গানেও আপনাকে কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?
- এখন সিনেমা তো আর খুব বেশি হয় না। যখন একটি ভালো কাজের জন্য আমাকে প্রেফার করা হয়, তখন আমার পক্ষ থেকে ইতিবাচক রেসপন্স থাকে। সর্বশেষ ‘গলুই’ সিনেমার দু’টি গান করেছিলাম। এরপর আসলে সে রকম কোনো প্রস্তাব আসেনি। তবে দু-একটি গানের কথা চলছে। সেগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভালো সিনেমায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা সবসময় আমার আছে। এখন দারুণ কিছু সিনেমা তৈরি হচ্ছে। ব্যবসায়িকভাবে সফল হচ্ছে। সিনেমার গানগুলোও মানুষ গ্রহণ করেছে। সেই জায়গা থেকে সিনেমার গান নিয়ে নতুন করে উৎসাহ পাচ্ছি।
শিল্পীরা নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকেই গান প্রকাশ করছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
- এটি কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির জন্য ইতিবাচক দিক। সময় ও টেকনোলজির কারণে এখন একজন শিল্পী নিজেই পারে নতুন গান তৈরি করে প্রকাশ করতে। এটি অনেক বড় অ্যাডভান্টেজ। কিন্তু এখনো আমাদের গানগুলো ভিডিওর ওপর নির্ভরশীল। ভারতে যেমন বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে অডিও গান শুনছে। আমাদের এখানে এমনটি নয়। অ্যাপে শুধু গান শোনার কালচারটি এখনো তৈরি হয়নি। বাংলাদেশে গান এখনো ভিডিওকেন্দ্রিক। মানুষ এখনো গানের সাথে ভিডিও দেখতে চায়। তবে একটি ভালো মিউজিক ভিডিও তৈরি করা চ্যালেঞ্জের বিষয়।
এখন অনেক কনটেন্ট। কিন্তু ভালো কনটেন্টের সংখ্যা কি বাড়ছে?
- টেকনোলজি এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, এখন যে কেউ চাইলে যেকোনো কিছু করতে পারে। সবার কাছ থেকে শুধু ভালোটাই বেরিয়ে আসবে, এমনটি প্রত্যাশা করা লজিক্যাল নয়। কারণ সবার হাতেই একই জিনিসের অ্যাকসেস আছে। ব্যাপারটিকে এভাবে চিন্তা করতে হবে, যেটি মানুষের কাছে ভালো লাগবে, তারাই সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
নিজেরও ইউটিউব চ্যানেল থাকায় গানের রয়্যালটির ব্যাপারে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় কি না?
- প্রথম দিকে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকলেও সেটি এখন নেই। আর সামাজিক মাধ্যম থেকে রয়্যালটির বিষয়টি নির্ভর করে ভিউয়ের ওপর। যত বেশি ভিউ তত বেশি উপার্জন। আগেই বলেছি, এখনো আমাদের এখানে ভিডিওর ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। তাই ভিডিওর ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বাজেটের একটি বিষয় থাকে। এ ছাড়া আরো কিছু বিষয় আছে। তবে এখন যারা কাজ করছেন তারা বিষয়টি জানেন।


আরো সংবাদ



premium cement