পথে হলো দেরি : বছরের শেষ আলোচনায় যে নাটক
- আলমগীর কবির
- ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
সিনেমা আর ওটিটির হরেক চমক ও চাপে নাটক থেকে যখন এক এক করে সব তারকা আর বেশির ভাগ দর্শক ক্রমেই ছুটিতে যাচ্ছিলেন, তখনই যেন ভোজবাজির মতো সবাইকে চমকে দিলো ‘পথে হলো দেরি’ নামের একটি নাটক। এভাবেও বলা যায়, গোটা বছর নাটকের বাজার নড়বড়ে হলেও বছর শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন অপূর্ব-তটিনী।
জাকারিয়া সৌখিনের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় দেড় ঘণ্টা ব্যাপ্তির এই বিশেষ প্রজেক্ট প্রকাশ হয়েছে ২৪ ডিসেম্বর সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে। প্রকাশের পর থেকেই গত দু’দিনে এটি রয়েছে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে। ভিউ অতিক্রম করেছে ৫০ লাখ। তার চেয়ে বড় বিষয়, দর্শক ও সমালোচক প্রতিক্রিয়া।
দু’দিন ধরে ইউটিউবে নাটকটির মন্তব্যের ঘর আর সমালোচকদের ফেসবুক পোস্ট প্রমাণ করে, বছরের সেরা কাজের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাটকটি। বলা দরকার, নাটকটিতে অপূর্বর বিপরীতে অভিনয় করেছেন সময়ের অন্যতম তরুণ অভিনেত্রী তটিনী। আরো আছেন মনোজ প্রামাণিক ও সালাহ খানম নাদিয়া।
নাটকটি দেখার পর সোহেল রানা নামে এক দর্শক প্রতিক্রিয়া এমন- ‘নাটক তো এমনই হওয়া উচিত, যেখানে গ্রামের প্রকৃতি, কিছুটা রাগ-অভিমান, কিছুটা রোমান্টিক, কিছুটা দুষ্টুমি, কিছুটা বাস্তবতা, শেষে ভালোবাসা, ভালোবাসার মানুষকে ফিরে পাওয়া। এক কথায় নাটকটি অসাধারণ।’
ফয়সাল নামের একজন বলেন, ‘এখন সব ধরনের নাটক শহরকেন্দ্রিক হয়ে থাকে। এই নাটকটি পুরোপুরি ভিন্নধর্মী। প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য অসাধারণ হয়েছে।’
বলা দরকার, দীর্ঘ দৈর্ঘ্যরে বিশেষ নাটকটির পুরো শুটিং হয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে। যার ফলে গল্পের বাইরেও পুরো নাটকটিকে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’-এর অন্যতম স্মারকও বলা যেতে পারে।
আহমেদ রনি নামের এক দর্শক লিখেন, ‘২০২৩ এর শেষে এসে এমন একটি নাটক দেখতে পারব ভাবিনি। এত নিখুঁত অভিনয়। এই বছরের সেরা একটি নাটক। পাপিয়া ঘোষ লিখেন, ‘নাটকের ফিলিংসগুলো যেন নিজেই অনুভব করছিলাম। আবার যেন নতুন করে প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করল। হার্ট টাচিং।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘ঠিক ১ ঘণ্টা ৩৬ মিনিটের নাটকটি দেখা শেষ হলো। চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু ঝরছিল আমার। সবাই যদি এরকম সবার ভালোবাসার মানুষকে কোনো না কোনোভাবে পেয়ে যেত। তাহলে আমাদের ভালোবাসা নিয়ে এত আক্ষেপ থাকত না। দোয়া করি সবাই যেন সবার প্রিয় মানুষটিকে সারা জীবনের জন্য পায়।’ রকিব হোসাইন নামের এক দর্শক লিখেন, ‘ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি আমাদের নাটককে ছোট পর্দার নাটক বলা হয়। কিন্তু এই ছোট পর্দার নাটকটি বড় বড় ব্লকবাস্টার মুভিকেও হার মানায়।’ শুধু ইউটিউবের ঘরে প্রায় ১৫ হাজার এমন মন্তব্য পড়েছে গত দু’দিনে। যার মধ্যে শতভাগ পজিটিভ মন্তব্য। যেমনটি সচরাচর কোনো নাটক, সিনেমা বা গানের ক্ষেত্রে মেলে না।
প্রসঙ্গক্রমে নাটকটির জনক জাকারিয়া সৌখিন বলেন, ‘আমরা চেয়েছি বছর শেষে সবাই মিলে একটি মনের মতো প্রজেক্ট করতে। মনের মতো মানে, বেশির ভাগ সময়ে তো দর্শক চাহিদা বা ভিউ চিন্তা করে কাজ করতে হয়। তবে এবার আমরা অনেকগুলো মানুষ এক হয়েছি একটি নিজেদের মতো প্রজেক্ট করার। এই আমরা হলাম- আমি, শিল্পী ও প্রযোজক। তিন পক্ষ এক হয়েই কাজটি করেছি এবং এটি করার জন্য আমরা যে পরিমাণ এফোর্ট দিয়েছি, সেটি দিয়ে এখন আর নাটক হয় বলে আমার মনে হয় না। দিন শেষে দর্শক ও সমালোচকদের পক্ষ থেকে যে প্রতিধ্বনি পাচ্ছি, তাতেই আমরা হ্যাপি। এমন সাড়া পেলে সত্যিই মনে হয়, দেশে রুচিশীল দর্শকের সংখ্যা এখনো সর্বাধিক।’
বলা দরকার, ‘পথে হলো দেরি’ সিএমভির ব্যানারে ‘ক্লোজআপ রোমান্টিক ড্রামা ফেস্টিভাল’-এর তৃতীয় ও শেষ কাজ। এর আগে একই উৎসবের অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর মিজানুর রহমান আরিয়ান নির্মিত ‘হদয়ে হৃদয়’ ও ৭ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে প্রবীর রায় চৌধুরীর ‘ভালোবাসি তবুও’। দুটো নাটকই পেয়েছে দারুণ জনপ্রিয়তা। আর তৃতীয় ও শেষ কাজে এসে সেই উৎসবে যেন আগুন ধরালেন অপূর্ব-তটিনী।
পথে হলো দেরির মাধ্যমে ছোট পর্দার বড় নায়ক অপূর্বর পুনর্জন্ম হয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে। কারণ, চলতি বছরের প্রায় পুরোটাই সাদামাটা গেছে এই অভিনেতার। সেই হিসেবে বছর শেষের নাটকটি দিয়ে ফের জানান দিলেন নিজের তেজ। অভাবনীয় দর্শক সাড়া পেয়ে অপূর্ব উচ্ছ্বসিত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা