২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ছোটদের সিনেমা ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’

-

ছোটদের নিয়ে সিনেমা দেখার কথা ভাবলেই মাথায় হাত দিতে হবে। আজিজুর রহমানের ছুটির ঘণ্টা, বাদল রহমানের এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী, সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘ডুমুরের ফুল’, শহিদুল আমিনের ‘রামের সুমতি’ মোরশেদুল ইসলামের দীপু নাম্বার টু ছবির বাইরে খুব বেশি নাম খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ ছোটদের উদ্দেশ্য সিনেমা এখন খুব একটা নির্মাণ হয় না।
তবে সম্প্রতি নতুন একটি সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে। নাম ‘কাঁঠালের ছুটি’। শরীফ উদ্দিন সবুজের ছোটগল্প অবলম্বনে শিশুতোষ ঘরানার এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। সিনেমাটি প্রযোজনাও করেছেন তিনি। এর মুক্তি নিয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান জানান, আগামী ১৮ আগস্ট প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আম-কাঁঠালের ছুটি।
দেশের মাটিতে মুক্তির আগেই সিনেমাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা পাচ্ছে। একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গেছে এটি। নির্মাতা জানান, মুক্তির আগেই কাঁঠালের ছুটি আর্জেন্টিনার ইউবিএ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাচ্ছে। ২৫-৩০ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্স শহরে চলবে এ চলচ্চিত্র উৎসব, যার ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম’ বিভাগে প্রতিযোগিতা করার জন্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা আম-কাঁঠালের ছুটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জমা পড়া প্রায় ৮০০ চলচ্চিত্র থেকে বাছাইকৃত ১২টি চলচ্চিত্র স্থান পেয়েছে এ বিভাগে।
সত্তর-আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকে যারা শৈশব-কৈশোর পার করেছেন, তাদের সে বয়সের যাপিত জীবনের নস্টালজিক আবহে তৈরি এ সিনেমা। সেই সাথে হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের পরিচয় করে দিতেই সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন বলে জানান মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। এর আন্তর্জাতিক সংস্করণের নামকরণ হয়েছে সামার হলিডে। কারো সাথে মিশতে না পারা আট বছর বয়সী একটি শহুরে ছেলে গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে কীভাবে নতুন এক জগৎ আবিষ্কার করে, খুঁজে পায় বন্ধুত্ব আর রোমাঞ্চের স্বাদ, এ নিয়েই পূর্ণদৈর্ঘ্য এ চলচ্চিত্র।
উৎসবে সালা মানুয়েল আন্তিন মিলনায়তনে ২৬ ও ২৮ জুলাই আম-কাঁঠালের ছুটি সিনেমাটির দু’টি প্রদর্শনী থাকছে যথাক্রমে বুয়েন্স আয়ার্স সময় সন্ধ্যা ৬টা ও বেলা দেড়টায়। প্রতিটি শোতেই থাকবে দর্শকের সাথে নির্মাতার প্রশ্নোত্তর পর্ব।
সিনেমাটি নিয়ে নয়া দিগন্তকে নূরুজ্জামান বলেন, ‘কাঁঠালের ছুটি আমার প্রথম সিনেমা। ২০১৫ সালে আমি এ সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম, তখন আমার মেয়ের বয়স ছয় বছর ছিল। বর্তমান সময়ের শিশুরা, বিশেষ করে যারা শহরে থাকে, তারা অনেকটা বন্দী জীবন কাটায়। আমার কাছে মনে হয়েছিল, আমাদের শৈশবটা কেমন ছিল, সেটি আমার মেয়েকে দেখাই। সে ভাবনা থেকেই সিনেমাটি নির্মাণ। আমাদের শৈশবের গল্প নিয়েই এ সিনেমা। আমার ছোটবেলার বন্ধু শরীফ উদ্দিন সবুজের বই থেকে এটি নির্মাণ করা। কারণ বইটি পড়ার পর মনে হচ্ছিল আমাদের ছোটবেলার সব চরিত্র আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম। এমনকি এ গল্পে আমার চরিত্রও আমি খুঁজে পেয়েছি। সিনেমাটি ফের একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছে, এটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।’
সম্প্রতি স্পেনের বার্সেলোনা ইন্ডি ফিল্মমেকার্স ফেস্ট-২০২৩ থেকেও অফিসিয়াল সিলেকশন পেয়েছে আম-কাঁঠালের ছুটি। রাশিয়ার চেবাক্সারিতে অনুষ্ঠিত চেবাক্সারি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে সিনেমাটি।


আরো সংবাদ



premium cement