মিথিলার কঠিন সময়ের গল্প
- সাকিবুল হাসান
- ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
‘ব্র্যাক’-এর আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন নন্দিত মডেল, অভিনেত্রী মিথিলা। চাকরির কারণেই বিভিন্ন দেশে তাকে যেতে হয়। সেখানকার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ছবি তিনি ফেসবুকেও পোস্ট করেন। আর সেসব ছবি দেখে অনেকেই তার চাকরি এবং ঘুরে বেড়ানোর আনন্দের কথা বেশি বেশি বলে থাকেন। কিন্তু আনন্দের মধ্যেও যে কষ্ট আছে তা সবার অজানাই থেকে যায়। সেই অজানা গল্পের কিছুটা জানান দিয়েছেন তিনি।
মিথিলা জানান, গত দুই সপ্তাহ তিনি উগান্ডায় বিভিন্ন রকম ট্রেনিং, ওয়ার্কশপ, ফিল্ড ভিজিট শেষ করে উগান্ডা থেকে ওয়েস্ট আফ্রিকার সিয়েরা লিওনে আসেন এখানকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে একটা আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করতে। কর্মশালা গত শুক্রবার শেষ হয় এবং শুক্রবার রাতেই তার সিয়েরা লিওন থেকে কলকাতায় যাবার ফ্লাইট ছিল। একমাত্র মেয়ে আয়রাকে যেহেতু বাড়িতে রেখে এসেছেন তিনি, কাজের বাইরে তার একদিনও থাকতে ইচ্ছা করেনি। শুক্রবার বিকাল থেকেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি। সিয়েরা লিওনের রাজধানী, ফ্রি টাউন, আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে এবং সিয়েরা লিওনের এয়ারপোর্ট ফ্রি টাউন থেকে দূরে একটা বিচ্ছিন্ন জায়গায় অবস্থিত, যার নাম ‘লুংগি’। ফ্রি টাউন থেকে ১ ঘণ্টা একটি ছোট ফেরিতে আটলান্টিক পার হয়ে লুংগি এয়ারপোর্টে যেতে হয়। ঝড়বৃষ্টির কারণে তিনি একটু বেশিই চিন্তিত ছিলেন। কারণ সমুদ্র যেমন তার ভালো লাগে, তেমনি উত্তাল সমুদ্রে ভয়ও লাগে তার। তার ফেরি, যেটাকে ‘সি-কোচ’ বলা হয়, সেটার টাইম ছিল রাত ২টায়। শেষ পর্যন্ত ভয়ে ভয়ে রাত ১টায় ‘সি-কোচ’ টার্মিনালে গেলেন তিনি। ফেরি থেকে নেমে টার্মিনাল অবধি বৃষ্টির মধ্যে দৌড়ে যেতে যেতেই ভেজা কাক হয়ে গেলেন। তারপর একটি বাসে চড়ে লুংগি এয়ারপোর্টে পৌঁছাতে বাজল ভোর ৪টা। তার ফ্লাইট ছিল ‘এয়ার মারোক’ যেটা লাইবেরিয়ার রাজধানী ‘মনরোভিয়া’ হয়ে ক্যাসাব্লাঙ্কা যাবে। ৭ ঘণ্টার মতো জার্নি করে দুপুর ২টায় ক্যাসাব্লাঙ্কায় পৌঁছান। পরে টার্কিশ এয়ারলাইনসে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পেরিয়ে ঢাকায় আসেন তিনি। মিথিলা বলেন, ‘এই গল্পটা শেয়ার করেছি শুধু তাদের জন্য যারা শুধু সুন্দর ছবিগুলোই দেখে, তার পেছনের কঠিন সময়ের গল্পগুলো জানে না। এই যে গত তিন সপ্তাহ ধরে, মেয়েকে বাড়িতে রেখে, হাজার হাজার মাইল বিভিন্ন দেশে, শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে, জার্নি করে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে কাজ করা, সেটা নিতান্তই জীবিকার তাগিদে; আমোদ ফুর্তির জন্য নয়। সবসময় সুন্দর ছবি আর ভালো কথাগুলো শেয়ার করি কারণ আমি যা কিছু ভালো, আর পজিটিভ সেটাই ভাগ করে নিতে চাই। একজন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কর্মী হিসেবে আমার কাজ এবং বিভিন্ন দেশে ব্র্যাক’র কন্ট্রিবিউশন নিয়ে আমি ভীষণ গর্ববোধ করি। তাই পেছনের কঠিন সময়গুলোকেও অভিজ্ঞতা হিসেবেই দেখি।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা