১৫-১৬ কেজি ওজন বাড়িয়েছি : নাঈম
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা এফ এস নাঈম। অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে এরই মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন দর্শক হৃদয়ে। তবে সম্প্রতি তিনি আলোচনায় ‘কারাগার’ ওয়েব সিরজ নিয়ে। এটি মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়- ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০৫
প্রশ্ন : অন্য তারকাদের তুলনায় আপনাকে সামাজিক মাধ্যমে কম দেখা যায়। কারণ কী?
নাঈম : আমি সব সময় নিজেকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করতাম। আমার মনে হতো নীরবে কাজ করে যাওয়াটাই ক্যারিয়ারের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে। তবে এখন কিন্তু আমি সামাজিক মাধ্যমে বেশ সরব।
প্রশ্ন : হঠাৎ এমন পরিবর্তন কেন?
নাঈম : আমি এক সময় ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছিলাম। নতুন করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট করে দিয়েছিল নাদিয়া আহমেদ (অভিনেত্রী, স্ত্রী)। সেখানে দেশ-বিদেশ থেকে প্রশংসাসূচক বার্তা পাচ্ছি। রাশি রাশি ভালোবাসা মিলছে। ওপার বাংলায়ও পরিচিতি বেড়েছে। অনেকেই বলছেন, আশফাক চরিত্রটি দিয়ে এক নতুন নাঈমের উপস্থাপন হয়েছে।
প্রশ্ন :‘কারাগার’ সিরিজে আশফাক চরিত্রে চমকে দিয়েছেন। রহস্যটা কী?
নাঈম : প্রথমে বলতে হবে আমি এই আশফাক চরিত্রে কেন? আমাকে শাওকির টিম অফিসে ডাকল। গিয়ে দেখি আমার লাইফের সব কাজের একটি তালিকা তৈরি করে আমার সাথে কথা বলছে। ওরা আমাকে বোঝাল, আশফাক চরিত্রে আমি কেন? বলল, ‘আশফাক দায়িত্ববান চরিত্র। আমরা এমন কাউকে চাই, যাকে অন্য চরিত্রগুলোর সাথেও খাপছাড়া না লাগে। আমরা আপনার সম্পর্কে ডিটেইল খোঁজখবর নিয়েছি।’ এমন অভিজ্ঞতা এবারই প্রথম। তারা কী চাচ্ছে, খুবই স্পষ্ট। প্রথম সিটিংয়েই আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মনে মনে ঠিক করলাম, এ কাজটি করার জন্য যত কষ্টই করতে হয়, আমি করব।
প্রশ্ন : চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল?
নাঈম : মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতির পাশাপাশি শারীরিক প্রস্তুতিও ছিল দীর্ঘ। আমার যে বয়স, তা একটু বাড়িয়ে কাঁচা-পাকা চুলে পাওয়া গেছে। শুধু চুলটা কাঁচা-পাকা নয়, ওজনটাও বাড়াতে হয়েছে। আমাকে ফিট বা নাঈম হয়ে থাকতে হবে এমন ভাবনাই কাজ করেনি। আমাকে আশফাক হয়ে উঠতে হয়েছে। ১৫-১৬ কেজি ওজন বাড়িয়েছি। দৈনন্দিন যে খাবার খাই, সেটি একটু বাড়িয়েছি। তাতেই ওজন বেড়ে গেছে।
প্রশ্ন : মাঝে তো ওজন কমিয়ে ছিলেন?
নাঈম : কাজ থেকে অনেক দিনের একটি বিরতি নিয়ে ছিলাম। যখন কাজে ফিরলাম, নিজেকে নতুন করে তৈরি করেছিলাম। যখন মেদ ঝরিয়ে নতুন লুকে ফিরেছি, অনেকেই চমকে গেছেন! বলছেন, ‘আপনি তো একেবারেই শিশু হয়ে গেছেন।’ লুক বদলের সাথে সাথে আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে।
প্রশ্ন : সেই নাঈম আবার আশফাক চরিত্রের জন্য ওজন বাড়িয়েছেন?
নাঈম : এটি হয়েছে পরিচালকের প্রতি মুগ্ধতার কারণে। শাওকির পরিচালন-দক্ষতায় মুগ্ধ হয়েছি। আশফাক চরিত্র হয়ে ওঠার পাশাপাশি নিজের দর্শনও পরিবর্তন করেছে কারাগার সিরিজটি। শাওকি সৎ একজন ছেলে। কারাগারে অনেক চরিত্র আছে। তাদের যাকে ইচ্ছে জিজ্ঞেস করবেন, বলবে শাওকি প্রচণ্ড সৎ ছেলে। আমিও তার ভক্ত হয়ে গেছি। আমি সব সময় একটি জিনিস চেষ্টা করি, যখন দেখি পরিচালক তার কাজের ব্যাপারে স্পষ্ট, তখন নিজেকে ওয়াটার লেভেলে রাখি। যাতে উনি যা চাইছেন, সেটি যেন হয়ে উঠতে পারি। পরিচালক শাওকি আমাকে যেভাবে ড্রাইভ করেছে, সেভাবেই চলার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন : কারাগার সিরিজে ইন্তেখাব দিনারের সাথে আপনার কেমিস্ট্রি নিয়ে বলুন?
নাঈম : দিনার ভাইয়ের সাথে যতদিন কাজ করেছি, সব সময় দেখেছি স্ক্রিপ্টের সাথে কীভাবে যেন একটি অদ্ভুত সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করে নেন। স্ক্রিপ্টটা তিনি অনেকবার পড়েন। মানে ফাইনাল পরীক্ষার মতো ওনার হাতে স্ক্রিপ্টটি থাকবেই। আশপাশের শিল্পীদের সাথে বারবার কথা বলা। পরিচালকদের সাথে কথা বলা। দৃশ্যের মধ্যেও ছোট ছোট ডেভেলপ হয়েছে। আমি সেই একই নাঈম শুটিং করছি। কিন্তু পরিচালক, স্ক্রিপ্ট রাইটার আর সহশিল্পীদের কারণে নতুনভাবে উপস্থাপন হয়েছি।
প্রশ্ন : দেশের চ্যানেলগুলোর দর্শক দিন দিন কমছে, এর কারণ কী?
নাঈম : আমার মতে, দর্শক মোটেই কমছে না। বরং বলা যায়, অনেক চ্যানেলের কারণে দর্শক ভাগ হয়ে গেছে। ইদানীং প্রায় বাসায় শিশুরা বিকেল হলেই দুরন্ত টিভি দেখছে, এটি একটি ভালো দিক। অন্য দিকে, সন্ধ্যার পর যখন বিভিন্ন চ্যানেলে নাটক প্রচার শুরু হয়, তখন দিনের তুলনায় দর্শক কয়েকগুণ বেড়ে যায়। অর্থাৎ দেশীয় নাটকগুলো এখনো মানুষ দেখছে। এ ক্ষেত্রে দর্শক কমেনি বরং বেড়েছে।
প্রশ্ন : ক্যারিয়ারের যুগপূর্তিতে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
নাঈম : এক যুগ পরে তো একটি মানুষের নতুন হওয়াই উচিত। ওটিটির যুগ চলছে। নতুন ভাবনা আসছে। আমিও না হয় নতুন হলাম।
প্রশ্ন : বর্তমান ব্যস্ততা ও পরিকল্পনা কী?
নাঈম : নতুন কাজ নিয়ে কথা চলছে। সময় নিয়ে কাজগুলো করতে চাচ্ছি। প্রতিদিন শুটিং থাকতে হবে এমন পথে হাঁটতে চাইছি না। নিজেকে আরো গোছাতে চাই।
প্রশ্ন : অভিনয়ের পাশাপাশি আপনি সংসারে কতটুকু মনোযোগী?
নাঈম : যতটুকু থাকা দরকার ঠিক ততটুকু। তা ছাড়া নাদিয়াও একজন ভালো অভিনয়শিল্পী। সেও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই যখন আমরা একসাথে থাকি তখন দু’জন মিলে ভালো থাকার চেষ্টা করি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা