ভীষণ একা হয়ে গেলাম - সূচরিতা

একজন শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে অভিষেক হয়েছিল সূচরিতার। ওই বয়সে চলচ্চিত্রে আসার ক্ষেত্রে তিনজন মানুষ তাকে সামনে থেকে সহযোগিতা করেছিলেন। তারা হলেন, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, দীলিপ বিশ^াস ও আজিজুর রহমান। সময়ের ধারাবাহিকতায় এই তিনজনের কেউই আজ বেঁচে নেই। দীলিপ বিশ^াস ও আজিজুর রহমান আগেই মারা গেছেন। ৪ সেপ্টেম্বর সকালে ইন্তেকাল করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার মৃত্যুতে যেন সূচরিতা সত্যিকার অর্থেই ভীষণ একা হয়ে গেছেন। রাজধানীর বারিধারার পার্ক রোডেই পাশাপাশি দু’জনের বসবাস। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুর খবর শুনে সূচরিতা ছুটে এসেছিলেন বাসায়। ভীষণ শোকাহত মন নিয়ে তিনি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্ত্রী ও ছেলে উপলকে সান্ত¡না দেয়ার চেষ্টা করেছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে নিজের বাবার মতোই শ্রদ্ধা করতেন সূচরিতা। ছোটবেলা থেকেই মামা বলে সম্বোধন করতেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার সূচরিতাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। তাকে বড় মেয়ে বলেই গণ্য করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার চোখের সামনেই শিশুশিল্পী থেকে নায়িকা হওয়া সূচরিতার। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিচালনায় সূচরিতা নায়িকা হিসেবে ‘নান্টু ঘটক’, ‘সন্ধি’, ‘আর্তনাদ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সূচরিতা বলেন, ‘আমার পরম সৌভাগ্য যে- গাজী মামা, আজিজ মামা, দীলিপ কাকুর মতো গুণীজনের সাহচর্যে এসেছি সেই ছোট্টবেলাতেই। তারাই আমাকে মানুষের মতো মানুষ করেছেন। আজিজ মামা তো আমাকে ছোটবেলায় নিজের হাতে কাপড় পরিয়েছেন। তাদের চোখের সামনে আমি নায়িকা হয়েছি। আমি তাদের স্নেœহধন্য ছিলাম। তাদের স্নেœহ, ভালোবাসায় দিকনির্দেশনায় নিজেকে নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। এ দেশের কোটি কোটি দর্শকের ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত করেছি। কিন্তু যাদের কারণে ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছি, সেই তারাই আজ আমাকে একা করে চলে গেলেন। শেষমেশ গাজী মামাও চলে গেলেন। সত্যিই, ভীষণ একা হয়ে গেলাম। এই একাকিত্ব আসলে বোঝানোর মতো নয়। শুধু দোয়া করি গাজী মামাকে আল্লাহ বেহেশত নসিব করুন।’ সূচরিতা জানান, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বিয়ের সময় গায়ে হলুদে ভীষণ মজা করেছিলেন তিনি। সেসব স্মৃতি আজও চোখে উজ্জ্বল। মুস্তাফিজের ‘কুলি’ চলচ্চিত্রে শিশুচরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন সূচরিতা। তখন তার নাম ছিল হেলেন। ‘কুলি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর তিনি শিশুচরিত্রে আরো অভিনয় করেন ‘নিমাই সন্ন্যাসী’, ‘অবাঞ্ছিত’, ‘রং বেরং’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘কত যে মিনতি’, ‘রাজ মুকুট’, ‘বাবলু’সহ আরো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে। নায়িকা হিসেবে আজিজুর রহমানের নির্দেশনায় ‘স্বীকৃতি’, দীলিপ বিশ্বাসের ‘সমাধি’ ও অশোক ঘোষের ‘মাস্তান’ চলচ্চিত্রে পরপর অভিনয় করেন।