২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
শুভ জন্মদিন গজল সম্রাজ্ঞী মিতালী মুখার্জি

এ প্রজন্মের গায়িকাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

-

মিতালী মুখার্জি, ভারতের গজল সম্রাজ্ঞী, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী, বাংলাদেশের গর্ব। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে জন্ম গুণী এই সঙ্গীতশিল্পীর। তার সময়কাল থেকে আজকের প্রজন্মের কাছেও মিতালী মুখার্জি একজন প্রিয় শিল্পীর নাম। মিতালী মুখার্জির কণ্ঠের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই, আমি সুরের পিয়াসী, হারানো দিনের মতো, আজ ফিরে না গেলেই কী নয়, হবে না হবে না দেখা সজনী গো আর, শতবার পৃথিবীতে আসব আমি, ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, এ জীবন তোমাকে দিলাম বন্ধু, তোমার চন্দনা মরে গেছে, এবার যাবার বেলায় পিছু ফিরে চেয়ে দেখনি তো, আমি কী তোমার মতো এত ভালোবাসতে পারি ইত্যাদি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য এই সঙ্গীতশিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আজ তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিতালী মুখার্জিকে ঘিরে তাদের ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন এই প্রজন্মের কয়েকজন গায়িকা।
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল তার সামনে তারই গান গাইবার, কণা : এই প্রজন্মের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কণা বলেন, ‘আমার ভীষণ সৌভাগ্য হয়েছিল যে কিছু দিন আগে ঢাকায় তাকে একটি অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়। তারই সামনে তার কণ্ঠের জনপ্রিয় গানগুলো আমাকেই গাইতে হয়েছিল। এটা সত্যিই আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া ছিল। গুণী এই শ্রদ্ধেয় শিল্পীর গান ছোটবেলায় যখন গাইতাম বিশেষত হারানো দিনের মতো, আমি কী তোমার মতো, আমি সুরের পিয়াসী গানগুলো যখন মঞ্চে গাইতে পারতাম তখন ভীষণ ভালো লাগা কাজ করত।
তিনি বললেন, বাহ মেয়েটির কণ্ঠ তো বেশ মিষ্টি, লিজা : ঘটনাটা ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বরের। আমি ধানমণ্ডির পারসোনাতে শোতে যাওয়ার আগে মেকআপ নিচ্ছিলাম। তখন গুনগুন করে গান গাইছিলাম। আমার কণ্ঠ শুনে শ্রদ্ধেয় মিতালী ম্যাডাম তখন সেখানে উপস্থিতি একজনকে বলেছিলেন, বাহ মেয়েটির কণ্ঠ তো বেশ মিষ্টি। তখনো আমি জানি না যে তিনি আমার থেকে কিছুটা দূরেই বসে আছেন। পরে যখন আমি জানলাম যে মিতালী ম্যাডাম বসে আছেন, তখন আমি তার সাথে পরিচিত হলাম। তিনি আমাকে অনেক স্নেহ করলেন। ২০০৮ সালে ময়মনসিংহে আমি ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতার শুরুতে যখন গান গাই, তখন মিতালী ম্যাডামেরই গান ‘হারানো দিনের মতো’ গেয়েছিলাম। আমি জানতাম যে তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ, আমার সেখানেই। আমার গানের ওস্তাদ আনোয়ার হোসেন আনোয়ার স্যারের কাছে মিতালী দিদির অনেক গল্প শুনেছি। ওস্তাদজিই মূলত আমাকে মিতালী ম্যাডামের গানগুলো গাইতে বলতেন। তখন থেকেই তার গানের প্রতি অন্যরকম দুর্বলতা। শ্রদ্ধেয় মিতালী ম্যাডামের জন্মদিনে অনেক অনেক ভালোবাসা, শ্রদ্ধা। তিনি আমাদের দেশের গর্ব।
এই দুনিয়া এখন তো আর অসংখ্যবার গেয়েছি, লুইপা : শ্রদ্ধেয় মিতালী মুখার্জি দিদির গানের ভক্ত আমি সেই ছোট্টবেলা থেকে। যদিও তার সাথে আমার কখনোই পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি, কিন্তু আমি তার গান শোনার জন্য কয়েকটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানেও পরিচয় হওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তার জনপ্রিয় অনেক গানই ছোটবেলা থেকে এই বড় বেলাতে এসেও নিজের কণ্ঠে তুলে নিয়েছি। স্টেজ শোতে তার গান গেয়ে দর্শক-শ্রোতাদের কাছ থেকে বেশ সাড়াও পেয়েছি। স্টেজে কিংবা লাইভ শোতে তার গাওয়া জনপ্রিয় গান ‘এই দুনিয়া এখনতো আর সেই দুনিয়া নাই’ গানটি আমি সবচেয়ে বেশি গেয়েছি। তিনি ভারতের গজল সম্রাজ্ঞী, কিন্তু তিনি আমাদের দেশের গর্ব।
নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কাছে তিনি আদর্শ, স্মরণ : যে অসাধারণ, সম্মোহনের সুর আমাকে বিমোহিত করেছে ছোটবেলা থেকেই, অসম্ভব নেশাতুর একটা মোহমায়া আছে যার সুরে, সেই সুর আমি বরাবরই খুঁজে পেয়েছি প্রখ্যাত সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব, কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শ্রদ্ধেয় মিতালী মুখার্জির কণ্ঠে। তুলনাহীনা, অসম্ভব সুরেলা কণ্ঠস্বরের অধিকারিণী শ্রদ্ধেয় মিতালী ম্যাডামের জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এবং ভালোবাসা। তার গান আমার কাছে সেতারের সুরের মতো সর্বাঙ্গে অদ্ভুতভাবে ঝঙ্কার তোলার মতো শ্রবণেন্দ্রিয়ে লেগে থাকে। তার মতো খুব মিষ্টি, অনন্য অনবদ্য গায়কীর শিল্পী শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও জন্মাবেন না। আল্লাহ তাকে দীর্ঘজীবী করুন। সুরের মাঝেই সুরপ্রেমী মানুষের মন মণিকোঠায় আমাদের প্রিয় মিতালী ম্যাডাম বেঁচে থাকুন অনন্তকাল। নতুন প্রজন্মের প্রতিটি প্রতিশ্রুতিশীল, উদীয়মান কণ্ঠশিল্পীর কাছে তিনি আদর্শ।
তিনি বলেছিলেন আমার কণ্ঠটি প্লে-ব্যাকের জন্যই পারফেক্ট, আতিয়া আনিসা : যে বছর সেরা কণ্ঠ প্রতিযোগিতায় আমি নাম লেখাই সে বছর প্রধান বিচারক হিসেবে আমার সবচেয়ে প্রিয় শিল্পী শ্রদ্ধেয় মিতালী মুখার্জি ম্যামকে পেয়েছিলাম। তার সামনে আমি তারই গাওয়া ‘জীবনের এই যে রঙিন দিন’ ও ‘কেন আশা বেঁধে রাখি’ গান দু’টি গেয়েছিলাম। এর মধ্যে ‘জীবনের এই যে রঙিন দিন’ গানটি ইউটিউবে প্রকাশিত আছে। আমার গান শুনে ম্যাম খুব মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, আমার কণ্ঠটি নাকি সিনেমার গানের জন্য যথার্থ। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি ছিল। ম্যাম সত্যি কথাই বলেছিলেন। আসলে তিনি এত গুণী একজন শিল্পী, যে কারণে আমাকে নিয়ে তার অনুমান হয়তো অনেকটাই আজ সত্যি হতে চলেছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি সিনেমার গানে বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছি। সিনেমার গান গাইছি।
তিনি তার সব গান হৃদয় দিয়ে গেয়েছেন, অনন্যা আচার্য্য : বলা যেতে পারে এটি আমার সঙ্গীত জীবনের একটা দুঃখ বা কষ্টই যে, এখন পর্যন্ত কোনোভাবেই শ্রদ্ধেয় মিতালী মুখার্জি ম্যামের সাথে দেখা হয়নি। তবে আমি চাই, কোনো এক শুভক্ষণেই যেন তার সাথে আমার দেখা হয়। কারণ তার গায়কী, তার কণ্ঠ, তার ব্যক্তিত্ব আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করে। শ্রোতারা আমার কণ্ঠে মিতালী ম্যামের গান শুনে মুগ্ধ হয়েছেন। কিন্তু সত্যি বলতে কী, তার মতো করে গাইতে পারটা তো আসলে অনেক কঠিন ব্যাপার।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement