উপস্থাপিকার নতুন চ্যালেঞ্জ : অভিনয়ে পা রাখছেন জেবিন

দেশের টেলিভিশন পর্দায় এক পরিচিত মুখ, কুষ্টিয়ার শাহরিন মাহফুজা জেবিন। দীর্ঘ এক দশক ধরে উপস্থাপনা ও সাংবাদিকতায় সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। তবে এখন অভিনয়ের নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত হচ্ছেন। যদিও তার কাছে দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ের প্রস্তাব আসছিল, তবে উপস্থাপনার প্রতি তার একনিষ্ঠ ভালোবাসার কারণে তা উপেক্ষিত ছিল। ২০২৫ সালে এসে, তিনি বুঝতে পেরেছেন-এখনই অভিনয়ে তার পা রাখার সময় এসেছে।
জেবিনের উপস্থাপনার ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৫ সালে, এটিএন বাংলা টিভির মাধ্যমে। পরবর্তীতে এনটিভি, যমুনা ও ৭১’র মতো তিনটি জনপ্রিয় চ্যানেলে তিনি উপস্থাপনা এবং সাংবাদিকতায় কাজ করেছেন। তার পরিশ্রম এবং সৃজনশীলতার কারণে তিনি খুব দ্রুত টেলিভিশন দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। বর্তমানে, তিনি ‘চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর’ এর সেলিব্রিটি টকশো কালার্স টোয়েন্টি ফোর-এ উপস্থাপনা করছেন, যা জনপ্রিয়তার দিক থেকে একটি বিশেষ স্থান দখল করেছে।
এতদিনে উপস্থাপনা ও সাংবাদিকতার প্রতি তার একনিষ্ঠ আগ্রহ ছিল। তবে, বহু বছর ধরে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে এলেও, তিনি কখনো এই দুনিয়ায় পা রাখেননি। তার ভাষায়, ‘এনটিভিতে থাকাকালীন কামাল স্যার বলেছিলেন, ‘কোনো কাজ অর্ধেক সম্পন্ন রেখে অন্য কাজ না করতে।’ তো অভিনয় নিয়ে এতদিন ভাবিনি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে যে অভিনয়টা করা যায়। তাই এতদিন অভিনয় নিয়ে না ভাবলেও, এখন অভিনয় নিয়ে ভাবব।
ছোটবেলা থেকেই তার সৃজনশীলতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার মা সাবিনা ইয়াসমিন নিলুর ইচ্ছা ছিল তিনি আবৃত্তি করেন, যা তিনি বাংলাদেশ বেতারের কলকাকলী অনুষ্ঠানে শৈশবে পূরণ করেছিলেন। ছড়া গান এবং কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে তার প্রকাশনামূলক দক্ষতা শুরু হয়েছিল, যা পরে উপস্থাপনায় রূপ নেয়। এখন, সেই আগ্রহ থেকেই অভিনয়ের দিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে যেতে চান তিনি।
জেবিনের পারিবারিক জীবনও ছিল সমর্থনমূলক। তার বাবা মো: নেয়ামত আলী এবং মা সাবিনা ইয়াসমিন নিলু, সবসময় তার পাশে ছিলেন। তার প্রিয় শিক্ষক প্রয়াত নজরুল ইসলাম এবং প্রিয় বান্ধবী তাম্মি তাকে সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। পারিবারিক ও বন্ধুদের সহায়তা তাকে বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে জয় করার শক্তি দিয়েছে।
এখন, উপস্থাপনার পাশাপাশি অভিনয়ে পা রাখতে চান তিনি। যদিও অভিনয়ে তার যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে, তবে তিনি নিজের ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই আশাবাদী। পরবর্তী সময়ে তার অভিনয় দর্শকদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে, তার দৃঢ় সংকল্প এবং পরিশ্রম তাকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।