১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আজীবন সঙ্গীতের সাথেই ছিলেন পাপিয়া সারোয়ার

আজীবন সঙ্গীতের সাথেই ছিলেন পাপিয়া সারোয়ার -

অসামান্য গায়কী দিয়ে মানুষের মন জয় করেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে শ্রোতাদের কাছে পরিচিত করেছিল। সঙ্গীতে তার অসামান্য দক্ষতা ও নিখুঁঁত পরিবেশনার জন্য সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাঙালি সংস্কৃতি ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের সাথে পাপিয়ার ছিল আত্মার সম্পর্ক। সে সম্পর্ক ছেদ করে চিরতরে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কয়েক বছর ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন পাপিয়া। গত মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না, চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে চলে গেলেন গুণী এ শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। মৃত্যুর সময় তিনি স্বামী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে, ১৯৫২ সালে ২১ নভেম্বর। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্র অনুরাগী ছিলেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে ছায়ানট ও পরে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সাল থেকে বেতার ও টিভিতে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে গান করেন তিনি। পাপিয়া সারোয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।

১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীতে ডিগ্রি নিতে ভারতে যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম বৃত্তি নিয়ে সেখানে স্নাতক করার সুযোগ পান। এর আগে তিনি ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে গানের দীক্ষা নেন। তার প্রথম অডিও অ্যালবামটি প্রকাশ হয়েছিল ১৯৮২ সালে। শিল্পীর নামেই অ্যালবামটির নাম ছিল ‘পাপিয়া সারোয়ার’।
শান্তিনিকেতনে অধ্যয়নের জন্য ভারত সরকারের বৃত্তি লাভের পাশাপাশি আধুনিক গানেও দাপট ছিল তার। পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার পান।
২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০২১ সালে পেয়েছেন একুশে পদক। ১৯৯৬ সালে ‘গীতসুধা’ নামে একটি গানের দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ সঙ্গীত ক্যারিয়ারে এ শিল্পী রবীন্দ্র সঙ্গীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement