পৃথিবী পরিবর্তন করতে হবে সাংস্কৃতির মাধ্যমে : এভা লংগোরিয়া
- সাকিবুল হাসান
- ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং ‘ফ্লেমিন হট’ সিনেমার পরিচালক এভা লংগোরিয়া শনিবার জেদ্দার রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে অংশ নিয়ে চলচ্চিত্র শিল্প ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের গুরুত্ব নিয়ে নিজের চিন্তাভাবনা শেয়ার করেছেন। উৎসবের ‘ইন কনভারসেশন’ প্যানেলে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা পৃথিবী পরিবর্তন করতে চাই, সেটি হবে সংস্কৃতির মাধ্যমে। আর পপ সংস্কৃতিতে সবচেয়ে বড় প্রভাব কাদের? মিডিয়া-টিভি, সিনেমা। যদি আমি এমন কিছু তৈরি করতে পারি যা সংস্কৃতিকে বদলায়, তাহলে সংস্কৃতি মানুষ ও হৃদয় বদলাবে।’
লংগোরিয়া বলেন, চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সমাজের সঙ্কট, বাস্তবতা ও সামাজিক মূল্যবোধ তুলে ধরা সম্ভব। তিনি বিশ্বাস করেন, চলচ্চিত্র ও মিডিয়া সংস্কৃতি এবং সমাজকে পরিবর্তন করতে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে। ‘আমার কাজের ক্ষেত্রে, যখন আমি স্ক্রিপ্ট পড়ি, তখন খুব দ্রুত বুঝতে পারি যে এটি আমি পরিচালনা করতে চাই কিনা, অভিনয় করতে চাই কিনা, বা এতে কাজ করতে চাই কিনা। আমাদের প্রয়োজন এমন একটি সাংস্কৃতিক বা নারীর দৃষ্টিভঙ্গি যা আমাদের দেখতে ও শুনতে হবে’ বললেন লংগোরিয়া।
তিনি বলেন, ‘যদি আপনি কোনো প্রকল্পে কাজ করতে চান, তার মধ্যে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক বা নারীর দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। সেটি যদি না থাকে, আমি কখনোই সেই প্রকল্পে যুক্ত হবো না। আমি বিশ্বাস করি, যে ধরনের সিনেমা আমি নির্মাণ করি, তা যেন সমাজে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে।’
লংগোরিয়া একজন সফল পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেত্রী। তার ক্যারিয়ারে বহুবার নারীর ক্ষমতায়ন এবং বৈচিত্র্যবাদের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, নারী হিসেবে তিনটি ভূমিকায় কাজ করতে পছন্দ করেন, কারণ এটি তাকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দেয়। ‘আমি সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, কারণ আমরা নারীরা প্রাকৃতিকভাবে পরিচালক, সিদ্ধান্ত-নেতা এবং মাল্টিটাস্কিং। সবকিছু করার ব্যাপারে সন্তুষ্টি পাওয়া যায়’ বলেন লংগোরিয়া।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি যেটি করি, তাতে নারীদের ভূমিকা ও তাদের ক্ষমতায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নারীরা যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, তাহলে তারা শুধু নিজেদেরই নয়; বরং পুরো পরিবারকে সাহায্য করতে পারে। আর যদি আপনি একজন মহিলার জীবন উন্নত করতে পারেন, তাহলে আপনি একটি পরিবার এবং একটি জাতির জীবন পরিবর্তন করতে পারেন।’
লংগোরিয়া চলচ্চিত্র শিল্পে নারীদের জন্য আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এটি সত্যি যে, নারীদের জন্য এই শিল্পে প্রবেশ করা অনেক কঠিন। কিন্তু সেটি কোনোভাবে ইচ্ছাকৃত বাদ দিয়ে দেয়া যানে না; বরং এটি ঘটে কারণ মানুষ তাদের পরিচিতদের নিয়েই কাজ করতে পছন্দ করে। তাদের কাছে যাদের অভিজ্ঞতা আছে, যারা আগে কাজ করেছে, তারা তাদেরকেই নিয়োগ দেয়। এ জন্য আমাদের পাইপলাইন তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে নারীরা এবং বিভিন্ন জাতির মানুষদের জন্য সুযোগ থাকবে।’
এছাড়া, লংগোরিয়া ভবিষ্যত প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি কাজের অভিজ্ঞতা না অর্জন করেন, তাহলে আপনি সেই কাজ পেতে পারবেন না। কাজের অভিজ্ঞতা এবং শিখে শিখে কাজ করার মাধ্যমে আপনি নিজের দক্ষতা অর্জন করবেন। নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং যাদের কাছে সুযোগ রয়েছে, তাদের কাছে আপনার প্রতিভা দিয়ে সাহায্য করুন।’
এভা লংগোরিয়া তার শিল্পীজীবনের অভিজ্ঞতায় নারী এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মূল্য তুলে ধরেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, চলচ্চিত্র এবং মিডিয়া শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি সংস্কৃতি পরিবর্তন এবং সমাজের ধারণাগুলো বদলানোর জন্য শক্তিশালী অস্ত্র হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা