২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আফগান নারীদের সংগ্রাম নিয়ে মালালা-লরেন্সের ডকুমেন্টারি

আফগান নারীদের সংগ্রাম নিয়ে মালালা-লরেন্সের ডকুমেন্টারি -


আফগানিস্তানে নারীদের সংগ্রামের গল্প তুলে ধরতে একত্রিত হয়েছেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই এবং হলিউড অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্স। তাদের উদ্যোগে নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেস’ দেশটির নারীদের দুঃখ, আশা এবং প্রতিরোধের কাহিনী বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করছে। ডকুমেন্টারিটি পরিচালনা করেছেন আফগান চলচ্চিত্র নির্মাতা সাহরা মানি, প্রযোজক হিসেবে রয়েছেন জেনিফার লরেন্স এবং এক্সিকিউটিভ প্রযোজক হিসেবে আছেন মালালা ইউসুফজাই।

এই ডকুমেন্টারিতে তিনজন সাহসী আফগান নারী চলমান শাসন ব্যবস্থার মধ্যে তাদের দৈনন্দিন জীবন, সংগ্রাম এবং প্রতিরোধের নানা মুহূর্ত ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করেছেন। তাদের গল্পগুলো শুধু আফগান নারীদের কথা নয়, বরং পুরো আফগান সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্র তুলে ধরে।
মালালা ইউসুফজাই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আফগানিস্তানে নারীদের পরিস্থিতি দেখে আমি স্তম্ভিত। মানুষ যারা বেঁচে গেছেন, তাদের পাশে দাঁড়ায়, কিন্তু যারা এখনো বিপদের মধ্যে আছেন, তাদের দিকে কেউ মনোযোগ দেয় না। আমি ভাবছি, যদি শুধু পুরস্কারের জন্য কাজ করা হয়, তবে কি কখনো সঠিক ন্যায়বিচার আসবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখার জন্য যেসব ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অজুহাত দেয়, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকৃত আফগান সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করেন আফগান নারীরা এবং এই ডকুমেন্টারি তারই প্রমাণ।’ জেনিফার লরেন্স আফগানিস্তানের নারীদের বিপদের মধ্যে থাকার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি কল্পনাও করতে পারি না এমন একটি পৃথিবী যেখানে আমি কথা বলতে পারব না, ট্যাক্সি নিতে পারব না, গান শুনতে পারব না। আফগান নারীদের এই অবস্থা মনে হলে আমি আশ্চর্য না হয়ে পারি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রজেক্টে যোগ দেয়ার সময় আমার পরিবার ও বন্ধুদের অনেকেই আমাকে সাবধান করেছিলেন, কিন্তু আমি জানতাম, এই ২০ মিলিয়ন নারী তাদের সংগ্রামের জন্য বিশ্বের সমর্থন এবং মনোযোগ চায়।’

ডকুমেন্টারির পরিচালক সাহরা মানি জানান, তিনি আফগান নারীদের জীবনের অজানা দিকগুলো সবার সামনে আনতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, মালালা ইউসুফজাইয়ের ২০১৩ সালের জাতিসঙ্ঘে দেয়া বক্তব্য ‘একটি বই, একটি কলম, একটি শিক্ষক পৃথিবী বদলে দিতে পারে’ আমাকে প্রভাবিত করেছিল। আমি বিশ্বাস করি, এক একটি সিনেমাও সমাজে পরিবর্তন আনতে পারে। এই ডকুমেন্টারিটি শুধু আফগান নারীদের দুর্দশার গল্প নয়, এটি তাদের সাহস, দৃঢ়তা এবং ভবিষ্যতের প্রতি আশা নিয়ে একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করে। এটি বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আফগান নারীদের সংগ্রাম একা নয়
—তারা সমর্থন এবং সহানুভূতির জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
মালালা ইউসুফজাই বলেন, ‘এরা তিনজন নারীর কণ্ঠস্বর, তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আফগানিস্তানে আরো ২০ মিলিয়ন নারী রয়েছেন, যাদের কথা আমাদের শুনতে হবে। তাদের সংগ্রাম আমাদের সমর্থন ও সহানুভূতি প্রয়োজন।’ সূত্র ডন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement