২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যেভাবে এ আর রহমানের সাথে সাইরা বানুর সাক্ষাৎ হয়েছিল

যেভাবে এ আর রহমানের সাথে সাইরা বানুর সাক্ষাৎ হয়েছিল -

অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রাহমান ও তার স্ত্রী সায়রা বানু ২৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘোষণা করেছেন। যা ভক্তদের বিস্মিত করেছে। এই দম্পতির বিচ্ছেদ নিয়ে এখন সর্বত্র আলোচনা। তবে তাদের সম্পর্কের পেছনের ইতিহাস এবং সাইরা বানুর ভূমিকা জানলে এই খবর আরো বেশি হৃদয়বিদারক মনে হয়।
বিয়ে ও প্রথম সাক্ষাৎ : এ আর রহমান এবং সাইরা বানুর বিয়ের ইতিহাস একটি চমৎকার গল্প। ১২ মার্চ, ১৯৯৫ তারিখে চেন্নাইতে অনুষ্ঠিত এক ঐতিহ্যবাহী ইসলামী পদ্ধতিতে তারা বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই বিয়েটি ছিল পারিবারিকভাবে আয়োজিত, যা তাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পরিচায়ক। রহমান ও সাইরার প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল একটি পারস্পরিক বন্ধুর মাধ্যমে এবং সেখান থেকে সম্পর্কের শুরু। বিয়ের সময়, রহমান তখন ভারতের একজন উদীয়মান সঙ্গীতজ্ঞ, যার প্রতিভা সারা বিশ্বে পরিচিতি পাচ্ছিল। তাদের বিয়ে ছিল একটি বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের মধ্যে গোপনীয়ভাবে অনুষ্ঠিত এক আনন্দঘন মুহূর্ত।
সাইরা বানুর ভূমিকা : সাইরা বানু, যিনি চলচ্চিত্র জগতের বাইরে এক সাধারণ পরিবার থেকে এসেছেন, সবসময় মিডিয়ার আড়ালে থাকতে পছন্দ করেছেন। তিনি নিজের জীবনকে গৃহিণী এবং এ আর রহমানের সহায়ক স্ত্রীরূপে গড়ে তুলেছেন। রহমান বারবার বলেছেন, সাইরার সমর্থন তার ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে সাহায্য করেছে। তিনি সাইরাকে তার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যিনি তার সঙ্গীতের প্রচেষ্টায় অবিচল সমর্থন দিয়েছেন। সাইরার সহায়তায়, রহমান তার পরিবার ও সঙ্গীতজীবন উভয় ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করেছেন।
পরিবার এবং সন্তানরা : এ আর রহমান এবং সাইরা বানুর তিনটি সন্তান রয়েছে- খতিজা, রাহিমা এবং আমিন। তাদের মধ্যে খতিজা রহমানের সাথে সঙ্গীত জগতে কাজ করছেন এবং নিজে একজন পরিচিত গায়িকা হয়ে উঠেছেন। রহমান সবসময় বলেছেন, সাইরা তাদের সন্তানদের সৃজনশীলতা ও মূল্যবোধের প্রতি সংবেদনশীলতার দিকে নজর রেখেছেন এবং তাদের শিকড় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকে কখনো বিচ্যুত হতে দেননি।
বিচ্ছেদ এবং গোপনীয়তা : এখন, ২৯ বছরের বিবাহিত জীবন শেষ করে, এ আর রহমান এবং সাইরা বানু তাদের বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা একটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের পরেও তাদের মধ্যে গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা রয়েছে, তবে সম্পর্কের মধ্যে যেসব চ্যালেঞ্জ ছিল, তা তারা অতিক্রম করতে পারছেন না। তাদের সন্তান এবং পরিবার এই সময় তাদের গোপনীয়তা এবং সমঝোতা চেয়ে অনুরোধ করেছেন। এ আর রহমান তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম ৩০ বছরে পৌঁছাব, কিন্তু সব কিছুরই একটি অদেখা শেষ থাকে।’
এছাড়া, তাদের সন্তানও গোপনীয়তা চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন, যাতে সবার কাছে তাদের ব্যক্তিগত জীবনকে সম্মান জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ আর রহমান ও সাইরা বানুর বিচ্ছেদ শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিগত জীবনকেই স্পর্শ করেনি; বরং তাদের ভক্ত ও শুভাকাক্সক্ষীদেরও মর্মাহত করেছে। তবে, তাদের দীর্ঘ বৈবাহিক জীবন এবং একে অপরকে সমর্থন করার গল্পটি সর্বদাই স্মরণীয় থাকবে। তাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্মান ছিল এবং বিচ্ছেদের পরেও তা অব্যাহত থাকবে- তাদের সন্তানদের মাধ্যমে।


আরো সংবাদ



premium cement