চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে নিজেকে মূর্খ ভাবতে হবে : এমিলি ওয়াটসন
- সাকিবুল হাসান
- ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিখ্যাত ব্রিটিশ অভিনেত্রী এমিলি ওয়াটসন। অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনয়শৈলীর জন্য যার পরিচিত বিশ^জুড়ে। ‘ব্রেকিং দ্য ওয়েভস’ (১৯৯৬) সিনেমায় অভিষেকের পর থেকে তিনি একের পর এক অসাধারণ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। প্রথম সিনেমার জন্যই তিনি অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তবে তার মতে, অভিনয়ের জন্য কখনো কখনো নিজেকে ‘মূর্খ’ ভাবতে হয়। তিনি বলেন, ‘অভিনেতা হতে হলে আপনাকে এমন এক অবস্থা তৈরি করতে হবে, যেখানে আপনি সত্যিই বিশ্বাস করেন যে আপনি যা করছেন, সেটি বাস্তব। কিছুটা বোকামি দরকার, কারণ সেই বোকামি থেকেই আসে সৎ ও আবেগপূর্ণ অভিনয়।’ তিনি ‘স্মল থিংস লাইক দিজ’ সিনেমায় সিলিয়ান মারফির সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। তার নতুন কাজ ‘ডিউন : প্রফেসি’ সিরিজ। এ ব্যাপারে তিনি সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের সাথে কথা বলেছেন।
অভিনয়ের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি :
বিশ্বাস ও ‘শার্ক আইস’
অভিনয় সম্পর্কে ওয়াটসনের একটি অদ্ভুত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তিনি নিজেকে ‘মূর্খ’ বলেই মনে করেন। কারণ তার মতে, একজন অভিনেতা যদি নিঃসঙ্কোচে চরিত্রে ডুব দিতে চায়, তবে তাকে বাস্তবতার বোধ কিছুটা ভুলে যেতে হয়। তার মতে, এটা ঠিক যেমন ছোট শিশুরা সান্তা ক্লজে বিশ্বাস করে; একদিক থেকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করলেও, তাদের মন সেই বিশ্বাসের সাথে একাত্ম হয়ে যায়। এই অদ্ভুত বিশ্বাস এবং আত্মসমর্পণের কারণে অভিনেতারা চরিত্রে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন।
এছাড়াও, তিনি একবার ‘দ্য প্রপোজিশন’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় রে উইনস্টোনের সাথে একটি মজার ঘটনা শেয়ার করেন। উইনস্টোন মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি ‘শার্ক আইস’ (শীতল দৃষ্টি) দিয়েছেন, যা হলো এমন একটি শক্তিশালী দৃষ্টি, যা সাধারণত ক্ষমতা বা নিয়ন্ত্রণের প্রতীক হয়। ওয়াটসন এই দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করেন যখন তাকে শক্তিশালী বা ভয়ঙ্কর চরিত্রে অভিনয় করতে হয়, যেমন তার বর্তমান সিনেমা ‘স্মল থিংস লাইক দিজ’-এ, যেখানে তিনি এক শক্তিশালী এবং ভীতিকর চরিত্র, সিস্টার মেরি।
স্মল থিংস লাইক দিজ :
সিলিয়ান মারফির সাথে তীব্র দৃশ্য
স্মল থিংস লাইক দিজ সিনেমায় ওয়াটসন একটি অন্ধকার এবং গোপনীয় দুনিয়ায় প্রবেশ করেছেন। যেখানে তার চরিত্র সিস্টার মেরি। একটি মাগডালেন লন্ড্রি পরিচালনা করেন। সেখানে সিলিয়ান মারফির চরিত্র বিলের সাথে তার একটি তীব্র দৃশ্য রয়েছে, যেখানে সিস্টার মেরি তার ক্ষমতার শেষটুকু আঁকড়ে ধরে থাকে। ওয়াটসন বলেন, ‘এই দৃশ্যটি ছিল একদম রসালো পিঠে এক টুকরা মিষ্টি!’ এ ধরনের চরিত্র এবং দৃশ্য তার জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, কারণ এতে মানবিক দিকগুলো এবং সিস্টেমের অন্ধকার দিকগুলোর মধ্যে শক্তিশালী সঙ্ঘাত দেখা যায়।
ডিউন : প্রফেসি-অন্ধকার ও জটিল পৃথিবী
এমিলি ওয়াটসন বর্তমানে ‘ডিউন : প্রফেসি’ সিরিজে অভিনয় করছেন, যেখানে তিনি বেনি জেসেরিট সিস্টার হুডের নেতা ভাল্যা হারকোনেন চরিত্রে অভিনয় করছেন। এই সিরিজটি ডেনিস ভিলনিউভের সিনেমাগুলোর আগে ঘটানো ঘটনা নিয়ে তৈরি এবং এতে বেশ কয়েকটি জটিল নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে।
ওয়াটসন বলছেন, ডিউন হলো এক ধরনের জটিল নৈতিক মহাবিশ্ব, যেখানে কোনো চরিত্রই একেবারে ভালো বা খারাপ নয় এবং এই দৃষ্টিভঙ্গি তাকে আকর্ষণ করে। তার চরিত্র, ভাল্যা। যে ভক্তির জন্য অনুপ্রাণিত হয়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার পথে চলে, তা আসলে একটি নৈতিক সঙ্কটের দিকে এগিয়ে যায়। ওয়াটসন এটিকেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে করেন।
অভিনয়ের অস্থির জীবন
অভিনয়ের জীবন অনেকটাই অপ্রত্যাশিত এবং ওয়াটসন তা সাদরে গ্রহণ করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি ঠিক যেমন ট্যাক্সির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, আপনি কিছুটা পরিকল্পনা করতে পারেন, কিন্তু শেষমেশ যা আসে সেটিই গ্রহণ করতে হয়।’ তবে, এই অস্থিরতা সত্ত্বেও, তাকে যে ধরনের কাজের প্রস্তাব আসে তা অনেক সময় মনের মতো হয় এবং তিনি তা গ্রহণ করেন। ৫০-এরও বেশি বয়সে, পরিবারের দায়িত্ব এবং অভিনয়ের জীবন নিয়ে তার কিছু হতাশা থাকলেও, এই জীবনকেই তিনি নিজের কাছে চমৎকার মনে করেন।
ওয়াটসন সবসময় এমন চরিত্রের পেছনে ছুটেন, যা তাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং শক্তিশালী কাহিনী তৈরি করতে সাহায্য করে। তার পথটি হয়তো কিছুটা অনিশ্চিত, তবে তিনি তার এই জীবনের প্রতি সম্পূর্ণভাবে নিষ্ঠাবান।
সূত্র : গার্ডিয়ান
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা