এবার কান-আবাসিকে সুযোগ পেলেন তারা
- সাকিবুল হাসান
- ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
গোটা বিশ্বের তরুণ চলচ্চিত্র প্রতিভাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘রেসিডেন্স দ্যু ফেস্টিভ্যাল’ বিভাগ। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের কান-আবাসিক আয়োজনে সুযোগ পেয়েছেন বিভিন্ন দেশের ছয় তরুণ নির্মাতা। ৮ অক্টোবর এক মেইল বার্তায় কান উৎসবের প্রেস বিভাগ এমনটাই জানিয়েছে। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে সুযোগ পাওয়া এবারের ছয়জন তরুণ নির্মাতার নাম-পরিচয় এবং তাদের অংশগ্রহণের সূচি।
কান কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১ অক্টোবর থেকে আসছে বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা পাঁচ মাস প্যারিসে অনুষ্ঠিত ৪৮তম রেসিডেন্সে ছয়জন প্রতিশ্রুতিশীল নতুন চলচ্চিত্র নির্মাতা অংশগ্রহণ করছেন। তাদের মধ্যে চারজন নারী ও দুইজন পুরুষ। এই নির্মাতারা হলেন সোফিয়া আলাউই (মরক্কো), রুডলফ ফিটজগারাল্ড-লিওনার্দ (অস্ট্রেলিয়া), থিও মন্টোয়া (কলম্বিয়া), এগ্লে রাজুমাইট (লিথুয়ানিয়া), দিওয়া শাহ (ভারত) এবং আনাস্তাসিয়া ভেবার (জার্মানি)। আগামী বছরের ১৩ থেকে ২৪ মে এই ছয় তরুণ নির্মাতা কান চলচ্চিত্র উৎসবে সরাসরি যোগ দেবেন।
কান চলচ্চিত্র উৎসব তরুণ নির্মাতাদের সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকটি বিভাগ চালু করেছে। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত স্ক্রিপ্ট রাইটিং রেসিডেন্সে প্রতি বছর ১২ জন নতুন নির্মাতা, যারা তাদের প্রথম বা দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে কাজ করছেন, তারা অংশগ্রহণের সুযোগ পান। দুটি চার মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা তাদের চিত্রনাট্য লেখার জন্য দিকনির্দেশনা পান এবং পরবর্তী পর্যায়ে কানের হাত ধরে প্রযোজনার দিকে এগিয়ে যান।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ চলচ্চিত্রের জন্য গ্র্যান্ড প্রিক্স বিজয়ী ভারতীয় পরিচালক পায়েল কাপাডিয়াও এই কান-আবাসিক অংশের সৃষ্টি। ২০১৯ সালে তিনি কান-আবাসিকে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘রেসিডেন্সে আবেদন করার সময় আমার চিত্রনাট্যটি বেশ নাজুক ছিল। তবে সেখানে থেকে অভিজ্ঞতা পেয়ে অন্যান্য নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকারদের সঙ্গে কাজ করে সেটি আরও উন্নত করার সুযোগ পেয়েছিলাম।’
২০২৪ সালের ২ অক্টোবর ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ ফ্রান্সে মুক্তি পেয়েছে এবং সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
২০০০ সালে ‘রেসিডেন্স দ্যু ফেস্টিভ্যাল’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৬০টি দেশের ২৫০ জনেরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাতাকে স্বাগত জানিয়েছে কান কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষে পায়েল কাপাডিয়া ছাড়াও এদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সফলতা অর্জন করেছেন গত ২৪ বছর ধরে। পূর্বের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন লুক্রেসিয়া মার্টেল, কর্নেল মুন্দ্রুসো, সেবাস্টিয়ান লেলিও এবং জোনাস কারপিগনানো; যারা বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসব থেকে বিভিন্ন সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন।
কান-আবাসিকে থাকার পর অনেক নির্মাতা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছেন। রোমানিয়ার কর্নেলিউ পোরুম্বইউ ২০০৬ সালে তার চলচ্চিত্র ‘১২:০৮ ইস্ট অব বুখারেস্ট’-এর জন্য ক্যামেরা দ’র জিতেছিলেন। মেক্সিকোর আমাত এসকালান্তে ২০২৩ সালে ‘লস্ট ইন দ্য নাইট’-এর জন্য কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং ২০১৩ সালে ‘হেলি’-এর জন্য সেরা পরিচালক পুরস্কার অর্জন করেন। মিশেল ফ্রাঙ্কো ২০১২ সালে ‘আফটার লুসিয়া’-এর জন্য আন সাঁর্তে রিগা পুরস্কার এবং ২০১৫ সালে ‘ক্রনিক’-এর জন্য সেরা চিত্রনাট্য পুরস্কার জিতেছিলেন। হাঙ্গেরির লাজলো নেমেস ‘সন অফ সৌল’-এর জন্য ২০১৫ সালে কানে গ্র্যান্ড প্রিক্স এবং ২০১৬ সালে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড ও গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন।
অন্য সফল নির্মাতাদের মধ্যে বেলজিয়ামের লুকাস ধন্ট ২০১৮ সালে ‘গার্ল’-এর জন্য ক্যামেরা দ’র পেয়েছিলেন এবং লেবাননের নাদিন লাবাকি ২০১৮ সালে ‘কাফারনাম’-এর জন্য কানে প্রিক্স দ্যু জুরি জিতেছিলেন। ইসরাইলের নাদাভ লাপিদ ২০১৯ সালে ‘সিনোনিমস’-এর জন্য বার্লিনালে গোল্ডেন বিয়ার এবং ২০২১ সালে কানে ‘আহেদস নিই’-এর জন্য প্রিক্স দ্যু জুরি জিতেছিলেন। একই বছরে ক্রোয়েশিয়ার আন্তোনেতা আলামাত কুসিয়ানোভিচ ‘মুরিনা’-এর জন্য ক্যামেরা দ’র জিতেছিলেন।
ব্রাজিলের করিম আইনাউজ, যিনি কান-আবাসিকের প্রথম অংশগ্রহণকারীদের একজন ছিলেন, ২০২৩ সালে ‘ফায়ারব্র্যান্ড’ এবং ২০২৪ সালে ‘মোটেল ডেসটিনো’ নিয়ে পাম দ’র জন্য পরপর দুইবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। একই বছরে, ভারতের পায়েল কাপাডিয়া এবং সিঙ্গাপুরের চিয়াং ওয়েই লিয়াং যথাক্রমে ২০১৯-২০২০ রেসিডেন্সে লেখা তাদের চলচ্চিত্রের জন্য গ্র্যান্ড প্রিক্স এবং ক্যামেরা দ’র স্পেশাল মেনশন পুরস্কার পেয়েছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা