ভারতে গণতন্ত্র পরিপক্ক, বাংলাদেশে নয় : সিইসি
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১০ জুন ২০২৪, ২১:০৫
বাংলাদেশের গণতন্ত্র পরিপক্ক নয়। ভারতের গণতন্ত্র পরিপক্ক। তাদের ৮০ বছরের গণতন্ত্র। সেখানে কোনো ধরনের সামরিক শাসন কাজ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে দেশে এখনো রাজনৈতিক সঙ্কট বিরাজ করছে। সঙ্কট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকেই মৌলিক প্রশ্নে সমঝোতায় আসতে হবে। বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি, এটা অস্বিকার করার কোনো উপায় নেই। রাজনৈতিক সঙ্কট দেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলতে পারে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কতিপয় মৌলিক সমঝোতা প্রয়োজন।’
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)’ আয়োজিত ‘আরএফইডি টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরএফইডির সভাপতি একরামুল হক সায়েমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো: হুমায়ূন কবীরের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসি সচিব শফিউল আজিম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ও জনসংযোগ পরিচালক মো: শরিফুল আলম।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে এখনো দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল না। রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ঘাটতি রয়েছে নির্বাচনে। অন্তর্ভূক্তিমূলকে ঘাটতি। এটা আমাদের জন্য নয়। তবে বিরোধী পক্ষ অংশ নেবে এটা আমাদের আশা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন সমাপ্তের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জমাট বরফ এখনো গলেনি। সার্বিক পরিবেশ এখনো পুরোপুরি অনুকূলে হয়ে ওঠেনি। তবুও আমি আশাবাদী, সঙ্কট নিরসন হবে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে।’
জাতীয় পরিচয়পত্র স্থানান্তর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনও যদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে দেয়া হয় আইন করে, তাহলে আমি থাকব না। পদত্যাগ করব।’
বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন ও বিধিবিধান প্রয়োগ করে। যারা প্রার্থী তাদের দক্ষতা ও জনসম্পৃক্ততার ওপর নির্ভর করে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। একটি বড় রাজনৈতিক দলের ভোটে না থাকায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয়নি। তবে এখানে আমাদের করার কিছুই ছিল না।’
নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সঙ্কট নিয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকেই সংলাপের মধ্য দিয়ে এর সমাধান করতে হবে। পরাজয় মেনে নিয়ে বিজয়ী দলকে অভিন্দন জানানোর মাধ্যমে একটি সুস্থ নির্বাচনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আর যারা নির্বাচিত হবেন তারা সেবার মনোভাব নিয়ে জনগণের কাছে গেলে সংস্কৃতিতে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন হবে।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আজিজ সাহেবের ভাইয়েরা, বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনের পরিবার ভুল তথ্য দিয়ে এনআইডি করেছে জেনেছি। ২০-২৫ বছর পর হঠাৎ জানা গেল। এখন দু’টি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।’
সিইসি বলেন, ‘এনআইডি একটা প্রযুক্তিগত দিক রয়েছে। এ প্রযুক্তির ফাঁক ফোকর থাকতে পারে। একটা জিনিসের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ লোক সুবিধা পেয়ে থাকে, ০ দশমিক ০১ শতাংশ লোক যদি এর অপব্যবহার করে। অপব্যবহারকারীকে আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রযুক্তিটি বর্জন করা যাবে না। স্থায়ী চাকরি করে তারা নয়, ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা হয়তো প্রলুব্ধ হয়ে, লোভের বশবর্তী হয়ে কিছু কিছু কাজ করেছে। ব্যাপকভাবে হয়েছে তা কিন্তু নয়।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএম গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে অনেক বেশি সহায়ক হবে। ইভিএমের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ানো দরকার।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা