২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

১৩৯ উপজেলায় ভোট শুরু

১৩৯ উপজেলায় ভোট শুরু - ফাইল ছবি

দেশে ১৩৯টি উপজেলায় আজ বুধবার ভোট গ্রহণত শুরু হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তা চলবে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম ও বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হবে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন।

প্রধান বিরোধী দলসহ সমমনা দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের মতোই এই নির্বাচনকে বয়কট করেছে। তারা তাদের কর্মীদেরকে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন। ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার দেশের ১৪১টি উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ঢাকায় নির্বাচন কমিশন থেকে সিসিটিভির মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে ভোট গ্রহণ মনিটরিং করা হবে। প্রথম ধাপে মোট তিন পদে বিনা ভোটে ২৮ জন নির্বাচিত হয়েছেন। ৯ জেলার ২২ উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার কথা।

বাকিগুলোয় ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার অর্থাৎ ভোট গ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিন-চালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

ইসির সর্বশেষ তথ্য বলছে, এই ধাপে মোট এক হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী তিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে অর্থাৎ মোট ২৮ জন প্রার্থী ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর- এই পাঁচটি উপজেলার সব পদের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ এই পাঁচ উপজেলায় কোনো পদেই ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। এ ছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট কক্ষে তিন কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ এক কোটি ৬০ লাখ দুই হাজার ২২৪ জন, নারী এক কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ জন এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

ইসির উপজেলা নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন ও গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া বিশেষ এলাকার সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোট কেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুই দিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবে।

৪১৮ প্লাটুন বিজিবি : উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি থেকে জানানো হয়, সারা দেশে জেলা প্রশাসনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো কয়েক প্লাটুন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগামী ১০ মে পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃংখলা রক্ষায় বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

দেড় লাখেরও বেশি আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী : নির্বাচনের প্রথম ধাপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোট কেন্দ্র ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ভোটদানে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এক লাখ ৫২ হাজার ৭৮৬ জন সাধারণ আনসার ও ভিডিপি মোতায়েন করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক মো: রুবেল হোসাইন।

সংস্থাটি বলছে, আজ ৮ মে দেশের ৫৯টি জেলার ১৪১টি উপজেলার ১০ হাজার ৬০৫টি ভোট কেন্দ্রে প্রথম ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রের নিরাপত্তায় মোট ১৩ জন বা ততোধিক আনসার ও ভিডিপি সদস্য সোমবার থেকে ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের মধ্যে একজন প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) ও দু’জন সহকারী প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি)-এর নেতৃত্বে ছয়জন পুরুষ ও চারজন মহিলা আনসার-ভিডিপি সদস্য রয়েছেন। কোনো কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ছয়টির বেশি হলে বুথ-প্রতি অতিরিক্ত আরো একজন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পিসি ও এপিসিরা (তিনজন) অস্ত্রসহ এবং আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যরা অস্ত্রবিহীন ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।

পাশাপাশি ৭৬ প্লাটুন বা দুই হাজার ২৮৮ জন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় দায়িত্ব পালনের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে। মোবাইল টিমে/স্ট্রাইকিং ফোর্সে দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা ন্যূনতম সেকশন (প্রতি সেকশন ১০ জন করে) ফরমেশনে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া এবার প্রথমবারের মতো পুলিশের মোবাইল টিম/স্ট্রাইকিং টিমের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন প্রায় ৯৪ প্লাটুন বা দুই হাজার ৮২০ জন সশস্ত্র আনসার ভিডিপি সদস্য।


আরো সংবাদ



premium cement