২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ড. বদিউল আলমকে ইসির চ্যালেঞ্জ

কারচুপির প্রমাণ দিতে পারলে ইভিএমে ভোট হবে না : ইসি আলমগীর

ইসি মো: আলমগীর - ছবি : সংগৃহীত

‘ইভিএমে কারচুপি’ নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাম্প্রতিক বক্তব্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো: আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কোনো ধরনের কারচুপির প্রমাণ দিতে পারলে ইভিএমে ভোট হবে না।

তিনি বলেন, যিনি বলছেন তাকে প্রমাণ দিতে হবে। উনি যদি আমাদের কাছে এসে দেখতে চান, জানতে চান, আমরা উত্তর দেবো। উনি যদি প্রমাণ দিতে পারেন (ইভিএমে কারচুপির), তাহলে বাতিল করে দেবো। এর বাইরে কে কী বলবে, তা দেখে তো আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আমাদের কাছে এসে যদি প্রমাণ করতে পারে ইভিএমে কারচুপি করা যায়, তাহলে ইভিএমে ভোট হবে না।

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সোমবার নিজ কার্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইভিএম প্রসঙ্গে বলেন, দেশের সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ অধিকাংশ ব্যক্তি ইভিএমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অথচ কারো কথা না শুনে ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি না দেখে নির্বাচন কমিশন ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের ঘোষণা দিলো। কমিশন কী উদ্দেশে এ কাজ করছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে ইভিএমে কারচুপির সুযোগ নেই। অথচ ইভিএম প্রযুক্তিতে কারিগরি ত্রুটি রয়েছে, সমস্যা রয়েছে। ইভিএম প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্বাচনের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এটি একটি দুর্বল যন্ত্র। এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ইসি আলমগীর বলেন, ইভিএমে নিয়ে যারা আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন তাদেরই আমরা আমলে নিয়েছি। বিএনপি তো আলোচনাতেই আসেনি। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি ইভিএমের পক্ষেই বেশিরভাগ আলোচক মত দিয়েছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ইসি আলমগীর বলেন, নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী একটি নির্দিষ্ট এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তারা টহল দেবে। আর গুরুত্বপূর্ণ, যেমন সম্ভাব্য ভার্নারেবল কেন্দ্রগুলোর একটা রিপোর্ট নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা নিই। র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীর কাছে সে তালিকা আমরা দিই। কারণ, পর্যাপ্ত সদস্য তো তাদের নেই। তারা পর্যালোচনা করে কোথায় সেনা, কোথায় র‌্যাব, কোথায় বিজিবি লাগবে। আলোচনা করে তারা সে সিদ্ধান্ত নেয়।

ইসি আলমগীর বলেন, কেন্দ্রে জোরপূর্বক কেউ ভোট দিতে চাইলে প্রথমে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেবেন। প্রয়োজনে বিজিবি বা সেনার সহায়তা নেবেন। আমাদের কন্ট্রোল রুম থাকে, সবার হাতে মোবাইল আছে, সাথে সাথে যোগাযোগ করবেন। বিজিবি যাবে, বিজিবি না পারলে সেনাকে ডাকবে। আশাকরি র‌্যাব, বিজিবি পারবে না এমন নয়। হয়তো লাখে একটা এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কোথাও সেরকম হলে সেখানকার নির্বাচন বন্ধ থাকবে। পরবর্তী তারিখে আবার নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন দেশের অন্যান্য আইন কভার করে না। এক্ষেত্রে মৌলিক আইন পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া যিনি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন, তার হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকে না। মূল কথা হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী সহযোগিতা করবে। এতে তো আমরা একমত হয়েছি। প্রতিটি কেন্দ্রে সেনা দেয়া তো সম্ভব নয়। তাহলে তাদের আকার অনেক বড় করতে হবে। তবে সরকারের প্রস্তাব থাকবে। আশাকরি সরকার এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে।

পৃথক দিনে ভোটগ্রহণ করার বিষয়ে সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, একাধিক দিনে ভোট বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে করা কঠিন। তবে এজন্য আইনে কোনো বাধা নেই। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আমাদের দেশে একাধিক দিনে নির্বাচন করার ব্যবস্থা আছে। তবে আমাদের এখানে একাধিক দিনে নির্বাচন হয় না। কারণ, এটা তো ছোট দেশ। ভারতে তো এক দিনে সম্ভব নয়। আমাদের এখানে তো সম্ভব। বরং একাধিক দিনে করলে আরো নানা রকম জটিলতা দেখা দেবে। একটা সুবিধা করার জন্য আরো ১০টা অসুবিধা যদি তৈরি হয়, সেই পন্থা অবলম্বন করা ঠিক হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement