আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলেই বিদ্রোহী প্রার্থী
- খালিদ সাইফুল্লাহ
- ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১১:০৮
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই। এরপরও তারা বিজয়ী হওয়ার আশা করছেন। বিএনপির প্রার্থী হেলাল কবির হেলু জানিয়েছেন, জনগণ ভোট দিতে পারলে আমাদের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এতদিন দলের নেতা হিসেবে মানুষের সেবা করেছি। এবার তৃণমূলের মানুষ আমাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ আওতাধীন ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। প্রায় ৪৯ হাজার ভোটার অধ্যুষিত এ ওয়ার্ডে হোল্ডিং রয়েছে ১৭৮২টি। খিলগাঁও ‘বি’ জোন, খিলগাঁও পূর্ব হাজীপাড়া, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া (নূর মসজিদের উত্তর মহল্লাসহ), মালিবাগ এবং মালিবাগ বাজার রোড, (সবুজবাগ অংশ) নিয়ে এ ওয়ার্ড। বিএনপি থেকে এ ওয়ার্ডে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হেলাল কবির হেলুকে। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। ইতঃপূর্বে তিনি খিলগাঁও তালতলা মার্কেট বণিক সমিতির সভাপতি, জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক, খিলগাঁও উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি, দারুল উলুম মাদরাসা মানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ‘ঝুড়ি’ মার্কা পেয়েছেন। ভোটারদের কাছে টানতে তিনি নিয়মিত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে তিনি ২৩টি বিষয়ে কাজ করতে চান।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- এলাকাকে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত করা, ডিজিটাল ল্যাম্প পোস্ট স্থাপন করা, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ ও সম্প্রসারণ, অপ্রশস্ত ড্রেন প্রশস্ত করা, কবরস্থানের আধুনিকায়ন, মশা নিধনে উদ্যোগ, ফুটপাথকে গতিশীল করাসহ সার্বিকভাবে এলাকাকে মডেল ওয়ার্ডে রূপান্তর করতে চান তিনি। হেলাল কবির হেলু নয়া দিগন্তকে বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। এজন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার সাথে এলাকার সব নেতাকর্মী কাজ করছেন। বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-পোস্টার টানানো হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সমর্থন চাচ্ছি। মানুষ যদি সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে তাহলে আমাদের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। মানুষ সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রাখার প্রতিবাদ জানাতে ভোটকেন্দ্রে আসতে মুখিয়ে আছেন। এ ওয়ার্ডে আলহাজ আবুল মেছের নামে বিএনপির একজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। গত দুইবার এ ওয়ার্ডে দলীয় মনোনয়ন পেলেও বিজয়ী হতে পারেননি। এজন্য দল থেকে এবার তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এরপরও তিনি টিফিন ক্যারিয়ার মার্কা নিয়ে মাঠে রয়েছেন।
এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন মো: শাখাওয়াত হোসেন শওকত। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। তার মার্কা ‘রেডিও’। বর্তমান কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদকে এবার দল মনোনয়ন দেয়নি। শাখাওয়াত হোসেন এবারই প্রথম কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকাকে জলাবদ্ধতা, মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত করতে চান। একটি সুপরিকল্পিত আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত গ্রিন জোন মডেল ওয়ার্ড করার ইচ্ছা রয়েছে তার। এ লক্ষ্যে তিনি ১৪টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ড্রেন ব্যবস্থা সংস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, হাট-বাজার সংস্কার, ডেঙ্গু প্রতিরোধের উদ্যোগ ও কবরস্থান উন্নয়ন তার অন্যতম অভিপ্রায়। শাখাওয়াত হোসেন শওকত নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি এলাকার তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি। তৃণমূল মানুষের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক। এতদিন দলীয় পদে থেকে নেতাকর্মীদের সেবায় কাজ করেছি। এখন দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছি জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য। এজন্য আমি তৃণমূলের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছি। এলাকার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে সব সময়ই ভূমিকা রেখেছি। দরিদ্র-অস্বচ্ছল মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এজন্য নির্বাচনে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি নির্বাচনে আমি বিজয়ী হবো।
এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে আতিকুর রহমান আতিক নামে আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তার প্রতীক ঘুড়ি। এলাকার মূল সড়ক থেকে অলিগলি সর্বত্রই তার ব্যানার-পোস্টার শোভা পাচ্ছে। এ ব্যাপারে শাখাওয়াত হোসেন শওকত বলেন, আতিক আমাদের ছোট ভাই। সে নিজে দলের কোনো পদে নেই। সে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের ভাই। মুজিব কোট গায়ে দিয়ে ছবি দেয়ায় মানুষ কিছুটা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে আমি দলের হাইকমান্ডকে জানিয়েছি। আশা করি নির্বাচনের আগে সব মিটমাট হয়ে যাবে।
এ ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টি থেকে নুরুল হক মাসুদ নামে একজন প্রার্থী রয়েছেন। তার মার্কা ঠেলাগাড়ি। এলাকার কিছু জায়গায় তার পোস্টার দেখা গেছে। তবে সব এলাকায় তার পোস্টার দেখা যায়নি।
২২, ২৩ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে মহিলা আসন-৮। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন নিলুফা ইয়াসমিন নীলু। তার মার্কা গ্লাস। এলাকায় তার ব্যাপক ব্যানার-পোস্টার টানানো হয়েছে। নির্বাচিত হলে তিনি এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন মিতু আক্তার। তিনি যুব মহিলা লীগের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক। তার মার্কা আনারস। নয়া দিগন্তকে তিনি বলেন, আমি এলাকার মানুষের সেবায় কাজ করতে চাই। সরকারের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করব। এ আসনে ইয়াসমিন সাঈদ নামে আরেকজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। তিনি বই মার্কায় এলাকাবাসীর ভোট প্রার্থনা করছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা