২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

‘নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে’

নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা - প্রতীকী ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণ করার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্কের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটি গঠন হয়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বাক্ষরের পর প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে। হয়তো ইতোমধ্যে স্বাক্ষর হয়ে থাকতে পারে। না হলে শিগগিরই হয়ে যাবে। সার্চ কমিটি হয়ে গেলে ইসি গঠন হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া গ্রহণ শুরু হয়েছে।

সার্চ কমিটি কত সদস্যের হবে, এ প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনে যা বলা আছে, তা-ই হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভোটার তালিকা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচন ছিল ভুয়া। তাই ভোটার তালিকা নিয়ে তেমন কথা হয়নি। এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা করা হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুন্দর নির্বাচন দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক এসেছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জাতিসঙ্ঘ তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছে। ফলকার তুর্ক সরকারের সংস্কার কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি দুটি প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। এক. বিচার বিভাগ স্বাধীন করা। দুই. মৃত্যুদণ্ড রহিত করা।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা এটিকে নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছি।’

ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে তুর্ক বেশি প্রশ্ন করেছেন। তিনি মৃত্যুদণ্ড রহিত করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এটা রহিত করার সুযোগ আছে কিনা। আমরা বলেছি, বর্তমান বাস্তবতায় মৃত্যুদণ্ড রহিতের সুযোগ নেই। পেনাল কোডে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা আছে। হুট করে এটা পরিবর্তনের সুযোগ নেই।’

ড. আসিফ নজরুল বলেন, যে ফ্যাসিস্ট সরকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী মেরেছে, তাদের বিচারকে সামনে রেখে মৃত্যুদ- বাতিল করার সুযোগ বিদ্যমান বাস্তবতায় নেই। এটা প্রত্যাশা করার সুযোগ নেই।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘ সারা পৃথিবীতে মৃত্যুদণ্ড রহিতের কথা বলে। কিন্তু অল্প দেশই তা রদ করেছে। এটা তাদের প্রতিশ্রুতি, তারা সেটা বলবে। মৃত্যুদণ্ড রহিত অতীতের কোনো সরকারও করেনি।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সব ধরনের আইনি অধিকার দেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন ড. আসিফ নজরুল। জাতিসঙ্ঘ বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করতে তাগিদ দিয়েছেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকার চাইলে জাতিসঙ্ঘের কাছ থেকে ফরেনসিক বা কারিগরি সহযোগিতা নেবে। সুবিচার করা হবে। কোনো অবিচার হবে না। আগে যেমন অবিচার হয়েছে, এবার তা হবে না।’

এরআগে ড. আসিফ নজরুলের সাথে বৈঠক শেষে ফলকার তুর্ক সাংবাদিকদের বলেন, আইন উপদেষ্টার সাথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার নিয়ে তার কথা হয়েছে। দুটি বিষয় একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। বর্তমান সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, এ ক্ষেত্রে মানবাধিকার যেন নিশ্চিত করা হয়, সে বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তুর্ক বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান কমিটি কাজ করছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। আমাদের প্রধান কার্যালয় পুরো বিষয় পর্যবেক্ষণ করছে।’

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement