২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

একাদশে প্রি-রেজিস্ট্রেশনের নামে অভিনব প্রতারণা

একাদশে প্রি-রেজিস্ট্রেশনের নামে অভিনব প্রতারণা - ছবি : নয়া দিগন্ত

করোনার কারণে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করেও যথাসময়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করার সাহস পাচ্ছে না আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। তবে থেমে নেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুইফোঁড় ও বাণিজ্যপ্রবণ কলেজগুলোর অপতৎপরতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা প্রক্রিয়ায় ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে তারা। ভর্তির প্রি-রেজিস্ট্রেশন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে কয়েকটি কলেজের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের ফোন, এসএমএস করে ভর্তি করালে নানা ধরনের ছাড়ের অফার দেয়া হচ্ছে। কোনো কোনো কলেজ সরেজমিন দেখে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। বিষয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দৃষ্টিগোচর হলে গত রোববার সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকতে কলেজগুলোকে বলা হয়েছে। একই সাথে ভর্তি সংক্রান্ত নির্দেশনার বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে রেজিস্ট্রেশন এবং পরবর্তীতে বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ফরম পূরণের কোনো সুযোগ থাকবে না বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়েছে। 

জানা গেছে, আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, কেবল বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড নিজস্ব অনলাইনে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব অনলাইনে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে তা ভর্তি নীতিমালা ২০২০-২১ পরিপন্থী। অবিলম্বে এ ধরনের ভর্তির বিজ্ঞপ্তি ও প্রচার-প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলো। 

এ ব্যাপারে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, বেশ কয়েকটি কলেজের এমন অপতৎপরতা আমাদের নজরে আসার পর সবাইকে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। তারপরও কেউ এ ধরনের প্রচারণা চালালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড ভর্তি সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড প্যানেলের বাইরে ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। তারপরেও যদি কেউ ভর্তি করে তাদের বোর্ডের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হবে না। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে কোনো সিদ্বান্ত হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে কার্যক্রম শুরু করবে না সরকার। কারণ ভর্তি প্রক্রিয়ার সাথে অনেক কাজ জড়িত। কলেজ ও মাদরাসার নিজস্ব কার্যক্রম আছে। অনলাইনে আবেদন শুরু হলে শিক্ষার্থীদের বাসার বাইরে দোকানে আবেদন ফরম পূরণ করতে যেতে হবে। আবার ভর্তির ফল প্রকাশের পর বোর্ডে দৈনিক ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থী আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে অতীতে। এতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে ভর্তির ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। 

বিগত বছর এসএসসির ফল প্রকাশের এক সপ্তাহ পরে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিকার্যক্রম শুরু করে বোর্ডগুলো। অনলাইনে ভর্তিকার্যক্রম সমন্বয় করে ঢাকা বোর্ড। সরকারি মোবাইল কোম্পানি টেলিটকের মাধ্যমে এসএমএস ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন নেয়া হয়। এসএসসি ও সমমানের ফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করে বুয়েট। প্রতি বছর পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি সংক্রান্ত নানা সমস্যা নিয়ে ভিড় করেন ঢাকা বোর্ডে। তাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় বোর্ড কর্মকর্তাদের। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাবে না। যে কারণে আপাতত ভর্তি সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভর্তি কমিটি। ফলে আগামী ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণীর ক্লাস শুরু হচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement