ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৮ মে ২০১৯, ১৭:০৮
সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না। আর এজন্য ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের চেয়ে সুরক্ষিত বাড়ি নির্মাণ বেশি জরুরি। তবে সার্বিক ব্যাপারে সরকারকে বিদেশি সাহায্যের আশায় বসে না থেকে নিজস্ব সম্পদ দিয়েই যাত্রা শুরু করতে হবে।
বুধবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে উপকূলীয় নাগরিক সমাজ সংগঠন কোস্ট সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় ফণী’র অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতে করণীয় বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা উঠে অসে।
‘দুর্যোগের পূর্বে অতি প্রস্তুতি ও দুর্যোগের পরদিন সব ভুলে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসুন: দুর্যোগ মোকাবেলায় চাই স্থায়িত্বশীল ও স্থানীয় সক্ষমতা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করে কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নঈম গওহর ওয়ারা, এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশনের এএইচএম বজলুর রহমান, কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম এবং কোস্ট ট্রাস্টের উপপরিচালক সৈয়দ আমিনুল হক। সংবাদ সম্মেলন মূল বক্তব্য পাঠ করেন কোস্ট ট্রাস্টের বরকত উল্লাহ মারুফ এবং সূচনা বক্তব্য রাখেন কোস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দ।
নঈম গওহর ওয়ারা তার বক্তব্যে বলেন, সরকার সম্প্রতি নতুন সাত হাজার ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে এসব ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ন্যূনতম মানবিক সুবিধা পাওয়া যায় না বিধায় মানুষ এখানে যেতে চায়না। যেমন, সরকারী হিসেবে একজন মানুষের জন্য সর্বোচ্চ ২ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ রয়েছে।
সেখানে একজন মানুষের পক্ষে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান করা সম্ভব নয়। একটি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যয় দিয়ে উপকূলে ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সক্ষম অন্তত ৩৫টি দ্বোতালা বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব। এসব বাড়ি হস্তান্তর করে দিলে বাড়ির অধিবাসীরা নিজেরাই যেমন এর যতœ করতে পারবে তেমনি দুর্যোগে প্রতিবেশীকে আশ্রয়ও দিতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার ঘুর্ণিঝড়ের আগে মানুষের প্রস্তুতির কথা বলেন, কিন্তু অনেক সরকারী প্রতিষ্ঠানের ঘুর্ণিঝড় নিয়ে কোনো প্রস্তুতি নাই। যেমন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের সারা বছর ঘুর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। ঘুর্ণিঝড় ফনীর ৩৬ ঘণ্টা আগে থেকে পাথরঘাটায় বিদ্যুৎ ছিল না। ৮ হাজার কিলোমিটারের মতো বেড়িবাঁধ সংস্কারের প্রয়োজন ছিল এই ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য।
কোস্ট ট্রাস্টে সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ ঘুর্ণিঝড় বা দুর্যোগের পূর্বাভাস পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে, যা মূলত বন্দরসমূহের জন্য এবং সাধারণ মানুষের জন্য যা বিভ্রান্তিকর। সুনির্দিষ্ট, বোধগম্য ও নির্দেশনামূলক পূর্বাভাস পদ্ধতি চালু করতে হবে। সমুদ্রগামী জেলে ও নৌকাসমূহের নিবদ্ধন ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে ঘুর্ণিঝড়ের সময় চিহ্নিত করা যায় কারা ফিরে এসেছে এবং কারা ফিরতে পারেননি।
এএইচএম বজলুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, সমুদ্রগামী জেলে নৌকাসমূহে স্বল্প মূল্যের ভিএইচএফ বা ইউএইচএফ রেডিও প্রদান করা গেলে তারা ঘুর্ণিঝড় বা অন্যান্য বিপদের সময় গভীর সমুদ্র থেকেও উপকূলে যোগাযোগ করতে পারে।
সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, জলবায়ু সম্মেলনসমূহে দেন দরবার করার জন্য বিশেষ করে লস এন্ড ড্যামেজে দর কষাকষির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উচিত এসব ঘুর্ণিঝড়ে বাংলাদেশে যে ক্ষয়ক্ষতি হয় তা সঠিকভাবে নিরূপণ করা এবং সে তথ্য আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে দেয়া।
বদরুল আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড়ে আক্রান্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেবার সময় শুধু জমির মালিকের কথা বিবেচনা না করে বর্গাচাষীর কথা আগে বিবেচনা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনাকালে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ যেভাবে বলা আছে সেই ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোর পাশাপাশি জলবায়ু মোকাবেলা সংক্রান্ত অবকাঠামোও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা