সংস্কার শেষে জাকসু নির্বাচনের আহ্বান জাবির বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের
- জাবি সংবাদদাতা
- ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:১৩
প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অংশগ্রহণমূলক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সবার বহুল আকাঙ্ক্ষিত জাকসু ও হল সংসদসমূহের নির্বাচন এবং নির্বাচনপূর্ব ন্যূনতম সংস্কারের যৌক্তিক দাবিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে যে সামান্য মতভেদ রয়েছে। তাকে পুঁজি করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার একটা পাঁয়তারা চলছে।
এতে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাত আছে উল্লেখ করে বলা হয়, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার এই হীন ষড়যন্ত্রের পেছনে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাত আছে বলে অনেকেই অনুমান করছেন। আমরা এই অনুমানকে অযৌক্তিক বলে মনে করি না। কেননা ইতোমধ্যে দেখা গেছে, প্রশাসন কর্তৃক গঠিত 'পরিবেশ পরিষদ: জাকসু নির্বাচন ২০২৫' এর গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখের সভা চলাকালে পরিষদের সভাপতি মহোদয়ের অনুমোদনক্রমে একটি ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন প্রতিনিধি জাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য তাদের ভাবনা ও দাবি উত্থাপনকালে তাদের ছবি গোপনে ধারণ করে। ওই আলোচনা চলাকালেই তা বিকৃতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গোপনে ছবি ধারণের সময়ে গোপনে আলোচনাও রেকর্ড করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে তা বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। এই ঘটনা সুস্পষ্টভাবে এই ইঙ্গিত দেয় যে, প্রশাসনে এখনও পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের দোসররা অবস্থান করছে। তারা নানাবিধ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা ডেকে এনে তাদের প্রভুদের মতলব হাসিল করতে চাইছে।
প্রশাসনে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসরদের অপসারণের দাবি করে এতে বলা হয়, একটি সুষ্ঠু জাকসু নির্বাচন এবং সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রশাসনে লুকিয়ে থাকা স্বৈরাচার ফ্যসিস্টের দোসরদেরকে চিহ্নিত করে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় পতিত ফ্যাসিস্টের দোসররা ক্যাম্পাসে বিরাজমান শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বিঘ্নিত করবে বলে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
'জাকসু' নির্বাচন নিশ্চিত করা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্রীয়াশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের মধ্যে মতভিন্নতা থাকা অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। ক্রিয়াশীল সকল সংগঠনকেই তাদের ভিন্নমত প্রদানের সমান সুযোগ দিতে হবে। সবার মতকে শ্রদ্ধায় রেখে সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে একটি ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা প্রশাসনকে করতে হবে। এই ঐক্যমতের ভিত্তিতেই দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে একটি অংশগ্রহণমূলক, অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জাকসু ও হল সংসদসমূহ গঠন করার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনীয় সংস্কার সাপেক্ষে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত জাকসু ও হল সংসদসমূহ গঠন করার দাবি ২০২৪ এর মহান গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ দাবি বাস্তাবায়নের ব্যর্থতা হবে ২৪ এর চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, যা পতিত ফ্যাসিস্টের দোসরদেরকে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ করে দেবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অত্যন্ত সতর্ক কিন্তু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।