ইবিতে র্যাগিংরত অবস্থায় আটক ৫
- ইবি সংবাদদাতা
- ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ২০:১৬
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) র্যাগিংয়ের অভিযোগে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ইবি থানায় সোপর্দ করেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটি আগামী রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন।
এর আগে, সোমবার রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে জুনিয়রদের ওপর র্যাগিং করা হয়।
এ দিকে, ভুক্তভোগীদের পক্ষে থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ফরিদ উদ্দীন।
তিনি জানান, ‘পাঁচজন এখনো থানায় আছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর ড. ফখরুল ইসলাম, হলের আবাসিক শিক্ষক রাসুল-ই-ইলাহী, সদস্য সচিব হলের সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমান।
আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া ও ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সঞ্চয় বড়ুয়া।
এছাড়াও অন্য অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল ও মুকুল।
জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভুক্তভোগীদের ওই হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে ডাকেন অভিযুক্ত শেহান শরীফ শেখ। পরে ভুক্তভোগী সাইম, রাকিবুল, শামীম, রাকিব, হামজা, তারেক, রিশান, তানভীর এবং মামুনসহ ১২ থেকে ১৩জন ওই কক্ষে যান। তারা সবাই ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে চারজনকে রেখে (শামীম, সাইম, রাকিবুল, হামজা) বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর অবশিষ্ট চারজনের ওপর অভিযুক্ত সাব্বির ও সঞ্চয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান।
ভুক্তভোগীরা জানান, ‘আমরা ক্যাম্পাসে আসছি ১৭ দিন হয়েছে। তারা আমাদের ১৭ দিনে কী পরিমাণ যে মানসিক নির্যাতন করছেন ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেখানে আমাদের পাঁচ রকমের হাসি দেয়া, কল দিয়ে বাজে ভাষা বলা ও নাচতে বাধ্য করা হয়। এর আগে, গত ১৬ নভেম্বর রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আমাদের ১২ জন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের পাশের সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা।
এ সময় কয়েকজনকে পর্ন সিনেমার তারকাদের নাম জিজ্ঞাসা, পর্ন তারকা সেজে অভিনয় করা, অশ্লীল কবিতা পাঠ করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। তারা আমাদের কয়েকজনকে সিগারেট খাওয়ার অভিনয়, গাঁজা-পট কীভাবে টানে সেটির অভিনয়, পাছা ঘুরিয়ে হাস লিখা, পকের নামতা বলা ও রিলেশনশিপের ওপর ‘খারাপ’ এসাইনমেন্ট লিখতে বলেন। এ সময় সেখানে ছিলেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, সাব্বির, সাকিব, শেহান, কান্ত বড়ুয়া ও জিহাদ।’
লালন শাহ প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমি নিজেই এর আহ্বায়ক। আগামী রোববারের মধ্যে আমরা সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু হলের বিষয়। হল বডি তদন্তের পর আমাদের প্রতিবেদন ও সুপারিশ পেশ করবে। তারপর আমরা যেখানে যা করার করব। আমরা সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথেই বসেছি। এ ব্যাপারটা আমরা সিরিয়াসলি নিচ্ছি। কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা