২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের জাদুঘর হচ্ছে গণভবন

স্মারক হয়ে থাকুক ঘটনাপ্রবাহ

-

বাংলাদেশের মানুষের স্মৃতি খুব দুর্বল, এ কথা বেশ জোরালোভাবে আলোচিত। আমাদের স্মৃতিদুর্বলতার সুযোগ নিয়ে দেশে হাসিনা ও তার দোসররা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন। হাসিনার শাসনামলে শত শত বছরের ইতিহাস ভুলিয়ে মাত্র কয়েক দশকের চেতনার বড়ি গিলিয়ে জাতিকে বন্দী করে রাখা হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি এড়ায়নি বিষয়টি। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানকে জাতির স্মৃতিতে জাগরূক রাখতে গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর ফলে গুম, খুন ও নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের সর্বনিকৃষ্ট নজির ইতিহাসে সদা জাগ্রত থাকবে। আশা করা যায়, এমন জাদুঘর প্রতিষ্ঠা হাসিনার মতো দানব সৃষ্টির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘর বানানোর বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়। সে সূত্রে সরকারের তিন উপদেষ্টা গত শনিবার গণভবন পরিদর্শন করে বলেন, এখানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ৩৪ দিনের পুরো সময়ের স্মৃতির দিনলিপি থাকবে। এতে আত্মবিসর্জন দেয়া ও আহত পীড়িত ছাত্র-জনতার তালিকা থাকবে। এখানে যে স্থাপনা ভাঙা অবস্থায় রয়েছে, তা সেই অবস্থায় রেখে জাদুঘর করা হবে।
বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা বিশ্বরাজনীতির ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, খুনি একনায়কদের কী পরিণতি হয়, ওই স্মৃতি এই জাদুঘরের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হবে। তাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা গণপূর্ত ও স্থাপত্য বিভাগের সাথে কথা বলে তাদের আকাক্সক্ষা ও পরামর্শ ব্যক্ত করেছেন। জাদুঘর ও স্থাপত্যশিল্পের সাথে সম্পৃক্তদের নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করবে। এর সাথে বিদেশীদেরও যুক্ত করা হবে। বিশেষ করে যাদের স্মৃতি জাদুঘর করার অভিজ্ঞতা আছে, যারা গণ-অভ্যুত্থানকে জাদুঘরের মাধ্যমে স্মৃতি সংরক্ষণ করেছেন।

একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন- ৫ আগস্টের চূড়ান্ত বিজয়ের পাটাতন রচিত হয় কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের সীমাহীন পীড়ন থেকে। বলা হচ্ছে, গুম-খুনের ইতিহাস এই জাদুঘরে স্থান পাবে। হাসিনার দানবীয় শাসন জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হলে এর সাথে আয়নাঘর, গুপ্ত কারাগার এবং রাজনৈতিক কারণে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের ইতিহাসও সংরক্ষণ করতে হবে। বিশেষ করে আয়নাঘর যে জাতীয় ট্র্যাজেডির জন্ম দিয়েছে তা কোনোভাবে অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না। বিস্তৃত গুম যে ভীতির পরিবেশ দেশের জনমনে ছড়িয়ে দিয়েছিল, নিঃসন্দেহে সেটি ছিল জঘন্য। এ জন্য আয়নাঘরের জায়গাটি শনাক্ত করা দরকার। সেখানে বন্দী নির্যাতনের চিত্রটি সামনে আনতে হবে। সেটিকেও অবিকৃত রেখে জাদুঘরে রূপান্তরের বিষয়টি জোরালো বিবেচনায় নিতে হবে। বিগত ১৫ বছরে যত গুম, খুন ও পীড়নের ঘটনা ঘটেছে তা এই জাদুঘরে সংরক্ষণ করতে হবে। জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি।
বাংলাদেশের মানুষের একটি সুপ্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে। অসংখ্য উপজাতি-গোত্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর দেয়া-নেয়ার মাধ্যমে আমাদের জাতি গঠিত হয়েছে। সর্বোপরি বাংলাদেশীরা একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ জাতির প্রতিটি যুগের কীর্তি জনমানসে জারি থাকা একান্ত দরকার। সেই অর্থে ২০২৪ আমাদের ইতিহাসের অন্যতম গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। একে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে তুল ধরতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সাথে কাজ করব : ড. ইউনূস ‘দিনে দাওয়াতি কাজ করতে হবে আর রাতে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে’ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রাণি ও পরিবেশের জন্য বড় হুমকি নতুন পর্যটন গন্তব্যের সন্ধান করছে সরকার : হাসান আরিফ বানারীপাড়ায় হত্যা ও প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার ২ রাবির আরবি বিভাগের নতুন সভাপতি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম ‘ট্রাম্পের সাথে অভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজে পাবেন অধ্যাপক ইউনূস’ তাজিকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে : মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ফেরতের দাবি জানালেন আলাল টানা দুই ওভারে ২ উইকেট শিকার তাসকিনের

সকল