জোরালো পদক্ষেপ নিন
- ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ফেলানীর মতো আরেক কিশোরীকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ হত্যা করেছে। তবে পরিস্থিতি এখন আর আগের মতো নেই। এবার দেশপ্রেমিক অন্তর্বর্তী সরকার এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। সীমান্ত পাহারাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন ও উভয় দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ভারতকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। ঠিক এ কাজ বিগত সরকারগুলো করলে হয়তো পয়লা সেপ্টেম্বর কিশোরী স্বর্ণা দাশকে বেআইনিভাবে গুলি করে হত্যা করার সাহস পেত না বিএসএফ। বন্ধুত্বের আড়ালে শত্রুতা চরিতার্থ করার এ নীতি আর চলতে দেয়া যায় না। পাখির মতো বাংলাদেশী হত্যার সংস্কৃতি বদলাতে ভারতের সাথে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন ও দু’দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি মেনে চলতে ভারতকে নমনীয় হতে হবে।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফেলানীর হত্যার পর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ বিগত ১৩ বছরে আরো কয়েক শ’ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। খুব কাছে থেকে গুলি করে সীমান্তের কাঁটাতারে ফেলানীকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। মৃত্যুর মুহূর্তে পানি চাইলেও তা দেয়া হয়নি। হত্যা করে প্রকাশ্যে নির্মমতা প্রদর্শন করার ঘটনা সারা বিশ্বে আলোচিত হয়। সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় এ ধরনের নিষ্ঠুরতার নজির পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। বিএসএফের খুনি সদস্যরা ছিল চিহ্নিত। দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংগঠনের প্রবল চাপে বিচারের আয়োজন করা হয়। কয়েক দফা বিচার করা হলেও অভিযুক্তদের খালাস দেয়া হয়। এর মাধ্যমে হত্যাকারীদের আশকারা দেয়া হয়। সে কারণে বাংলাদেশের সব সীমান্তে বিএসএফ গুলি করে মানুষ মারছে, যা তাদের শত্রুরাষ্ট্র পাকিস্তান ও চীনের বিরুদ্ধেও তারা করে না।
স্বর্ণা মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। অষ্টম শ্রেণীর এ ছাত্রী ত্রিপুরায় তার ভাইকে দেখতে যাচ্ছিল পরিবারের সাথে মিলে। তার ওপর যখন বিএসএফ গুলি করছিল, সে বিনীত অনুরোধ করেছিল, এভাবে গুলি না করে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রাণ হারানো স্বর্ণার অনুরোধ কার্যকর করাই বাংলাদেশী মানুষের দাবি। তারা যেন যেনতেনভাবে এ দেশের নাগরিকদের হত্যা করতে না পারে। প্রায় সব ধরনের খুনের পর বিএসএফের পক্ষ থেকে একটি গতানুগতিক ব্যাখ্যা দেয়া হয়। কখনো বলা হয় চোরাচালানি, কখনো বলা হয় সন্ত্রাসী আবার কখনো বলা হয় তাদের আক্রমণ করার পর তারা গুলি ছুড়েছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বিগত বছরগুলোতে একটি খুনেরও সঠিক তদন্ত হয়নি। ফেলানী হত্যার বিচার না হওয়ার মতো প্রত্যেকটি ঘটনায় খুনিরা পার পেয়ে গেছে। এ কারণে ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে পাঠানো চিঠিতে সরকার উল্লেখ করেছে, এ হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালে সীমান্ত প্রটোকলের লঙ্ঘন। সীমান্তে সব হত্যাকাণ্ড তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। দু’দেশের সম্পর্ক একটি নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পেনাল কোড এবং আন্তর্জাতিক কোনো আইনেই নিরস্ত্র নাগরিককে গুলি বা নির্যাতন করে মেরে ফেলার কোনো বিধান নেই। তারপরও কিভাবে এমন অমানবিকতা ভারত চালিয়ে যেতে পারছে? সেটি এক বিস্ময়!
বিগত সরকারের আমলে সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের একচেটিয়া বয়ান বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে। সেখানে তারা প্রতিনিয়ত বলে গেছে- সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার করবে না। বাস্তবে তারা গ্রহণ করেছে এর বিপরীত নীতি। দুর্ভাগ্য হলো, ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ভারতকে কখনো প্রশ্নও করেনি। তাদের প্রতারণাপূর্ণ আচরণকে জো হুজুর করেছে। আশা রাখি অন্তর্বর্তী সরকার সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার বিষয়টি জবাবদিহির আওতায় আনতে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেবে। বন্ধ হবে সীমান্তে একচেটিয়া বাংলাদেশী হত্যা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা