১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
বিপুল খেলাপি ঋণের তথ্য

সুবিধা দেয়া বন্ধ হোক

-


২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন খেলাপি ঋণ ছিল ২৩ হাজার ৪৮১ কোটি টাকার কম। সদ্য পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ অব্যাহতভাবে বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে কখনো দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করা হয়নি। প্রতিটি পরিসংখ্যান ছিল বানোয়াট ও অতিরঞ্জিত। শেষ সময়েও বলা হতো খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। কিন্তু বাস্তবতা কারো অজানা ছিল না। আইএমএফের মতো সংস্থা এবং দেশের অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ সতর্কতার সাথে আভাস দেয়ার চেষ্টা করেছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি হবে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ যে হিসাব পাওয়া গেল সেটিও যথার্থ কিনা বলা মুশকিল। কারণ, এত কম সময়ে প্রকৃত চিত্র তুলে আনা খুব কঠিন কাজ। প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাঁচ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ।
গত সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র লুটপাটের মেশিনে পরিণত করা হয়। বিশেষ করে আর্থিক খাতে। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয় ব্যাংকের অর্থ। এমনকি চর দখলের মতো দখল করে নেয়া হয় বেশ কিছু ব্যাংক। ক্ষমতার একেবারে শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে নিম্নতম স্তর পর্যন্ত সবাই অর্থ লুটপাটে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অর্থনীতিতে এমন চরম বিশৃঙ্খলা স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শুধু দেখা গিয়েছিল।

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকার ঋণখেলাপিদের যেভাবে সুবিধা দিয়েছে তেমনটি আগের কোনো সরকারের সময় দেয়া হয়নি। সুবিধা দিতে বারবার খেলাপির সংজ্ঞা পাল্টানো হয়েছে। ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের নামে সুযোগ দেয়া হয়েছে। মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, খেলাপিরা সরকারকে নির্দেশনা দিত কিভাবে কোন পদ্ধতিতে তাদের জন্য নতুন করে ঋণ পাওয়া এবং আগের ঋণ পরিশোধের দায় থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ করে দেয়া যায়। সরকার সেভাবে সুযোগ দিয়েছে। কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারের একমাত্র লক্ষ্য ছিল ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিল করা। পালিয়ে যাওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত ওই চেষ্টা করেন শেখ হাসিনা।
এখন অন্তর্বর্তী সরকার চতুর্মুখী চ্যালেঞ্জের মুখে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সম্ভবত ধ্বংস করে ফেলা অর্থনীতি পুনরুদ্ধার। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর দায়িত্ব নিয়েছেন। বেদখল হওয়া ব্যাংকগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। যোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা নিরূপণে শ্বেতপত্র প্রকাশের কাজ শুরু করা হয়েছে। এসব চলমান প্রক্রিয়া।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের একটিই চাওয়া, সেটি হলো গত সাড়ে ১৫ বছরের লুটপাটের সংস্কৃতির সম্পূর্ণ অবসান। জাতীয় অর্থনীতিতে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং প্রভাবশালী লুটেরাদের কবল থেকে বের করে আনা। নতুন করে কাউকে অন্যায় সুবিধা দেয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা।


আরো সংবাদ



premium cement
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় আসলে কী হয়েছিল? মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করুন : তথ্য উপদেষ্টা বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টায় নজর ভারতের এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট নাটোরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে যুবদল নেতাসহ গ্রেফতার ৬ বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ ভিসা সমস্যার সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা মার্চেন্ট শিপিং ফেডারেশনের শহীদ পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ, আহতরা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হলেন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম

সকল