অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা
- ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার তিনটি স্তম্ভ নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও নির্বাচিত আইনসভা। এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের উল্লেখ না থাকলেও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। শাসক শ্রেণীর দয়ার দানে এ অবস্থায় গণমাধ্যম আসেনি। দীর্ঘ দিনের পথচলায় মানুষের আস্থা অর্জন করে সংবাদমাধ্যম এ অবস্থান তৈরি করেছে। সে জন্যই গণমাধ্যম গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত।
সংবাদমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কবুল করে নিলেও তৃতীয় বিশ্বে গণমাধ্যম এখনো ক্ষমতাসীনদের চোখের বালি। ক্ষমতায় থাকাকালে ক্ষমতাসীনদের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরলেই তারা মিডিয়ার টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা করেন। আর বিরোধী দলে থাকলে বনে যান সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ঝাণ্ডাবাহী। বাস্তবতা হলো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ক্ষমতাসীনরা প্রায়ই ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবাধে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন করবেন, তাতে কেউ কিছু বলতে পারবে না। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বিশেষ করে বিগত সাড়ে ১৫ বছরে সদ্য পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা এ দেশে মুক্ত গণমাধ্যমের পরিবর্তে ‘গদি মিডিয়া’র গোড়াপত্তন করেন। ভিন্ন মতের সব গণমাধ্যম হয় বন্ধ করে, নতুবা গলা টিপে ধরে রাখেন।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এরপর থেকে আমাদের গণমাধ্যমের অবরুদ্ধ পরিবেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এখন অবাধে সংবাদ পরিবেশনে সংবাদমাধ্যমের কোনো বাধা নেই। কিন্তু আগামীতে কেউ যাতে সংবাদমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরতে না পারেন সে জন্য সাংবাদিকদের তরফে দাবি উঠেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত মঙ্গলবার দেশের ২০টি পত্রিকার সম্পাদকের সাথে মতবিনিময়কালে বলেছেন, বর্তমান সরকার মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করে এবং দেশে একটি গতিশীল ও প্রাণবন্ত গণমাধ্যম দেখতে চায়।
সরকারের পক্ষ থেকে মিডিয়ার ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম মজুমদার বলেন, একটি প্রাণবন্ত ও মুক্তগণমাধ্যমের জন্য মিডিয়া কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই কমিশন আমাদের দেশে মিডিয়া কিভাবে চলবে তা ঠিক করবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা করতে গিয়ে কেউ যেন বিপত্তির মুখে না পড়েন, বাধার সম্মুখীন না হন তা নিশ্চিতে এ কমিশন গঠনের প্রস্তাব এসেছে। কমিশন গঠনের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে সরকার।
হাসিনার আমলে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেভাবে রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল সেই তিক্ততায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের জন্য যেসব কালাকানুন আছে সেগুলো বাতিল বা সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন সম্পাদকরা।
আমরা মনে করি, বাংলাদেশে মিডিয়ার জন্য যদি অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে আগামীতে ক্ষমতায় গিয়ে কেউ অতীতের মতো শাসন ক্ষমতায় দুষ্টু ক্ষত সৃষ্টি করতে চাইলে গণমাধ্যম তা যৌক্তিক ও পেশাদারিত্বের সাথে তুলে ধরতে পারবে। এতে জনসচেতনতা বাড়বে; পরিণামে নাগরিকরা দুর্নীতি-অপশাসন প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করতে পারবে সরকারের ওপর। পরিশেষে মুক্ত গণমাধ্যম সৃষ্টির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা স্বাগত জানাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা