ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয়
- ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্বৈরশাসকের কবল থেকে দেশ উদ্ধারের ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে নৃশংস গণহত্যা ঘটেছে। মাত্র দ্ইু সপ্তাহের মধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষ হত্যা করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। এ ছাড়াও গত ১৬ বছরে অসংখ্য মানুষকে অন্যায়ভাবে গুম, খুন করেছে এ জালিম সরকার। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও দেশ ছেড়ে পালানোর পর এখন হত্যার শিকার পরিবারের সদস্যরা বিচার চেয়ে থানায় মামলা করছেন। দেশের সব শ্রেণীর মানুষও চান গণহত্যা ও নির্যাতন-নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার হোক। হত্যাকারী শাস্তি পাক।
কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় এখন মামলা দায়ের হচ্ছে তাতে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ এখানে পতিত স্বৈরাচারের আমলের মতো কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, মামলাগুলো হচ্ছে কোনোরকম যাচাই-বাছাই ছাড়া। এতে ঢালাওভাবে বহু মানুষের নামে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। চিহ্নিত হত্যাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে আওয়ামী স্টাইলের গায়েবি মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের পক্ষে প্রতিটি মামলা নেয়ার আগে যাচাই-বাছাই বা প্রাথমিক তদন্তের পরিবেশও এ মুহূর্তে নেই। তার পরও ভবিষ্যতে বাণিজ্য করা যাবে এমন কাণ্ডকারখানা কিন্তু জোরেশোরে চলছে। ক্ষেত্রবিশেষে বাদির অজান্তে আসামির তালিকায় অনেকের নাম ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমন ঘটনায় বাদি মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া মামলা করা হলে ক্ষতিগ্রস্তরা ন্যায়বিচার পাবেন ন- এটি একরকম নিশ্চিত। হত্যা মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হয়। কিন্তু এখন যেসব মামলা হচ্ছে, তাতে বেশির ভাগ আসামিকে ‘হুকুমদাতা-নির্দেশদাতা’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। এ ধরনের মামলা আদালতে টেকার সম্ভাবনা সামান্যই; বরং যারা প্রকৃত অপরাধী অথবা ক্ষমতার অপব্যবহার বা দুর্নীতি করেছেন, তারা পার পেয়ে যাবেন। আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিপীড়িত যেসব মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর পর ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারা চরম হতাশায় নিমজ্জিত হবেন।
ধানমন্ডিতে পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা একটি পত্রিকাকে বলেন, এক আইনজীবীর চেম্বার থেকে মামলা ও আসামিদের নাম ঠিক করে আনা হয়। পরে মামলা নিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা অসহযোগিতা করায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই দু’জনের নামও মামলায় ঢুকিয়ে দেন।
মেহেরপুরে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রীসহ ১৬৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিয়েছেন বাদি হাসনাত জামান। বলেছেন, তিনি যাদের নামে মামলা করেছিলেন তার বাইরেও অনেক নাম মামলায় ঢুকানো হয়েছে। তাই মামলা তুলে নিয়েছেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মামলা দায়েরের সময় ন্যায়বিচার পেতে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে উচ্চপর্যায়ে কমিটি বা টাস্কফোর্স গঠন করতে পারে অন্তর্র্বর্তী সরকার। মামলাগুলোর সঠিক তদন্তও নিশ্চিত করা উচিত। মোট কথা, মামলা করতে হবে আইনের চাহিদা পূরণ করে, গুছিয়ে। যাতে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাওয়া নিশ্চিত হয় এবং অপরাধী কোনোভাবে পার পেয়ে না যায়। ভুক্তভোগীরা যাতে ন্যায়বিচার পান, সেজন্য মামলা নেয়ার ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া দরকার। আমরা এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা