দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করুন
- ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয় হলেও এমন কিছু দগদগে ঘা রেখে গেছে, যা দশকের পর দশক পৈশাচিক ও বর্বরতার প্রতীক থাকবে। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইকে কিভাবে গুলি করে হত্যা করতে হয় সে নির্মমতার সাক্ষী হয়ে থাকবে। পুলিশকে এমন এক দানবে পরিণত করা হয়, কাকে হত্যা করছে তার হুঁশজ্ঞানও ছিল না। এতে পুলিশের সন্তানও নিজেদের করা গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। তারপরও এ বাহিনীর বোধোদয় ছিল না। পুলিশি বর্বরতার এমন কিছু ঘটনা ফাঁস হচ্ছে, রক্ত হিম হয়ে যায়। এমন একটি ঘটনায় আশুলিয়ার পুলিশ পুড়িয়ে দেয় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজ ও পত্রিকার অনুসন্ধানে এ ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য বিবরণ মিলেছে। পুলিশের গুলিতে নিহত এবং আহত রক্তে ভেসে গোঙ্গানো এমন ১১ জনকে স্তূপ করে পুড়িয়ে দেয়া হয়। তাদের একজন ১৭ বছর বয়সী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাহমুদ সুজন। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আগের দিন এই কিশোর জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে লড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তার এক আত্মীয় জানান, পকেটে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র দেখে তার পুড়ে যাওয়া লাশ শনাক্ত করেছেন তারা।
আরেক তরুণ আশুলিয়ার শাহীন স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র আস-সাবুর। তিনি জামগড়া শিমুলতলা এলাকার এনাফ নায়েদের ছেলে। ভিডিওতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ লাশগুলোর সাথে জীবিতদের তোলা হয়। মুমূর্ষু রক্তাক্ত দেহগুলো মালামালের মতো করে পিকআপে ছুড়ে মারছে পুলিশ। যারা এ বীভৎসতা চালিয়েছে তাদের একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আরাফাত হোসেন। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর আরাফাত আত্মগোপনে চলে যান।
ওই সময় রোমহর্ষক ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে পুলিশের যেসব আচরণের উদাহরণ পাওয়া যায়, সেটি শঙ্কা জাগায়। হত্যা করে মানুষ পুড়িয়ে দেয়ার পরও এ ঘটনা ধামচাপা দিতে তারা তৎপরতা চালায়। স্থানীয়দের তারা হুমকি দিয়েছে, এ ব্যাপারে যেন কেউ মুখ না খোলেন। তারা আরো জানায়, পালিয়ে যাওয়া সরকার অচিরে ক্ষমতায় ফিরবে, তখন তারা দেখে নেবে। সারা দেশে পুলিশ, র্যাব, সোয়াতসহ বিশেষায়িত বিভিন্ন বাহিনীর খুনে সদস্যকে দেখা গেছে। বাহিনীর মধ্যে এদের উপস্থিতি ভবিষ্যতে বড় ধরেনের ঝুঁকির কারণ হবে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের হয়ে বিভিন্ন জায়গায় মানুষ হত্যা করতে দেখা গেছে। তাদের কিছু ব্যক্তির সশস্ত্র অ্যাকশনের ছবি রয়েছে। আন্দোলনের একেবারে শেষপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সারা দেশে এমন অসংখ্য অস্ত্রধারীকে মাঠে নামিয়েছিল। যাদের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ছিল। প্রাণঘাতী অস্ত্রের এলোপাতাড়ি ব্যবহারকারী পুলিশ এবং দলীয় লোকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফ্যাসিবাদী সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। এদের মধ্যে একটি অংশ নিজেরাই অপরাধী হয়ে গেছে। পুরো বাহিনীর মধ্য থেকে তাদের বাছাই করে আলাদা করা না গেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা টেকসই হবে না। এটি দুরূহ হলেও পুরো বাহিনী থেকে এদের আলাদা করার কাজটি করতে হবে দক্ষতার সাথে। আমরা আশা রাখব, অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা