আগে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করুন
- ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সাথে সাথে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠছে। এখন পর্যন্ত যে চিত্র, তাতে বেশি ক্ষতি হয়েছে মৎস্য, কৃষি ও প্রাণিসম্পদের। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য- ১১টি জেলার ৬৪টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট। সাম্প্রতিক বন্যা দেশের পূর্বাঞ্চলে বিগত ৩৪ বছরের মধ্যে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়।
এবারের বন্যায় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়িতে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ফেনীর ৬০ শতাংশ জমি বালুতে পূর্ণ হয়ে চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে গেছে। লোকজন ঘরে ফিরে বিধ্বস্ত বাড়িঘর দেখতে পাচ্ছেন। বিস্তীর্ণ এলাকার সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আছে। যেসব এলাকায় বন্যা হয়েছে, যেমন- ফেনী বা কুমিল্লার মতো এলাকাগুলো দীর্ঘকাল এ অবস্থার মধ্যে পড়েনি। এবারের বন্যা ছিল অস্বাভাবিক, অভূতপূর্ব।
বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবন্দী ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবারের ৫৪ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৫৯ জন। মৃতের সংখ্যা বেশি ফেনীতে, ২৩ জন। জাতিসঙ্ঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বন্যায় ৫৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। জাতিসঙ্ঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারের বন্যায় ২০ লাখের বেশি শিশু ঝুঁকির মধ্যে আছে।
চলতি বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক চিত্র এখনই পাওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। বন্যার ক্ষতির সঠিক চিত্র পাওয়ার জন্য প্রথমে বন্যার তিন সপ্তাহ পর, দ্বিতীয় দফায় আট সপ্তাহ পর এবং তৃতীয় দফায় ১২ সপ্তাহ পর করতে হয়।
দুর্যোগ নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর জোট ইন্টার কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ ও হিউম্যানিটারিয়ান টাস্কফোর্স টিম এই বন্যা নিয়ে যৌথ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে বলা হয়েছে, বন্যাকবলিত ১১টি জেলায় সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের খাওয়ার পানির উৎস, পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা, পাঠদান কক্ষসহ বেশির ভাগ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন।
এবারের বন্যা ছিল মূলত আকস্মিক। কিন্তু হঠাৎ ভয়াবহ প্লাবন হলেও পানি নামছে খুব ধীরে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য, অন্য সময়ের আকস্মিক বন্যার তুলনায় এবার পানি নেমে যাওয়ার হার কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি ধীরে নামার কারণ- বন্যার শুরুতে পূর্ণিমার জন্য সাগরে অস্বাভাবিক জোয়ার, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও উপদ্রুত এলাকার নদীগুলোর নাব্য কমে যাওয়া। এর সাথে উজানে ভারতের বাঁধ ছেড়ে দেয়া অন্যতম কারণ।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দুর্গতদের পুনর্বাসনের বিষয়টি সামনে আসবে। তবে সবার আগে জরুরি ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা। বন্যার ভয়াবহতা বিবেচনায় বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে শুধু সরকারি নয়, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা দাতাদের সাহায্য জরুরি। ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সহায়তার জন্য সরকারের সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এটি আশার কথা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা