চালুর উদ্যোগ নিতে হবে
- ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
শস্যভাণ্ডার খ্যাত দেশের উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা নওগাঁ। এ জেলায় প্রচুর পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়। এ ধান ঘিরে গড়ে উঠেছে চাতাল শিল্প। নওগাঁয় ক্রমাগত লোকসান ও অসম প্রতিযোগিতার কারণে টিকতে না পেরে গত ১২ বছরে এক হাজার ৭০০ চালকল বন্ধ হয়ে গেছে। একের পর এক মিলগুলো বন্ধ হওয়ায় ৩৫-৪০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। নয়া দিগন্তের নওগাঁ প্রতিনিধির পাঠানো প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হাসকিং চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধান-চাল সংগ্রহে সরকারের ভুলনীতি, মূল্য নির্ধারণে সমন্বয়হীনতার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ ছাড়া বারবার বিদ্যুৎ ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে চাল উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। ব্যাংক ঋণের চড়া সুদসহ নানা কারণে এ শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
নয়া দিগন্তের প্রতিবেদনে প্রকাশ, মামুনি অটো রাইস মিলে গিয়ে জানা যায়- এটি বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় দুই বছর আগে। একই অবস্থা জাহানারা অটো রাইস মিলের। সদর উপজেলার হাঁপানিয়া এলাকার দিশা অটোমেটিক রাইস মিলের গোডাউন ছাড়া যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু বিক্রি করে দিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। বিক্রির অপেক্ষায় নওহাটার ছাম্মী অটো রাইস মিল। ঋণের জন্য আদালতে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন সদরের কফিল উদ্দীন রাইস মিল, বিসমিল্লাহ অটো রাইস মিলসহ করিম অটোমেটিক রাইস মিলের মালিকরা।
নওগাঁ সদরের ফারিহা রাইস মিলের মালিক শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, অটোরাইস মিলে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন শ্রমিক ৩০ টন চাল উৎপাদন করতে পারেন। হাসকিং মিলে এক সপ্তাহে ১৫ জন শ্রমিক ৩০ টন চাল উৎপাদন করতে পারেন।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চাকলাদার বলেন, একসময় হাসকিং চালকলগুলো লাভজনক ছিল। কিন্তু সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকা; অপ্রয়োজনীয় আমদানি, অনাদায়ী টাকা ফেরত না দেয়া, করপোরেট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এবং প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত চালকল তৈরি হওয়ায় চালকলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও রাইস মিলের জন্য মিলারদের প্রতি বছর ১৪ রকম লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন করতে হয়। এসব করতে বৈধ-অবৈধ ফিসহ দুই লাখ টাকা খরচসহ চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।
নওগাঁ অটোমেটিক রাইস মিল সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম বলেন, মাত্র তিন থেকে ৪ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ নিয়ে এসিআই, প্রাণ, আকিজ ও স্কয়ারের মতো বড় বড় করপোরেট কোম্পানি বিপুল ধান চাল কিনছে। অন্য দিকে আমাদের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম ১৩ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ নিয়ে চালকল প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসায় করতে হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুহাম্মদ তানভীর রহমান জানান, জেলার সচল হাসকিং চালকলের সংখ্যা ৩১৫। চুক্তিভুক্ত সচল অটো রাইস মিল ৭৯টি। এর আগে সরকারি গুদামে ৮৮৩টি চালকল চুক্তিবদ্ধ ছিল। এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় চালকল বা অটোমিল ছিল ৫১টি এবং হাসকিং মিল ছিল ৮৩২টি। বন্ধ হওয়া হাসকিং মিলগুলো বিষয়ে তিনি বলেন, অটোরাইস মিলের সাথে অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা, শ্রমিক সঙ্কট এবং সরু চালে প্রতি আকর্ষণ তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়।
নওগাঁয় এতগুলো চালকল একসাথে বন্ধ থাকা কিছুতে ঠিক নয়। নওগাঁ হচ্ছে দেশের চাল সরবরাহের অন্যতম উৎসস্থল। এ জন্য বন্ধ চালকলগুলো চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা