পদ্ধতিগত দুর্নীতির বিচার হোক
- ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে পুরো বাংলাদেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। কিভাবে কত ভয়ঙ্করভাবে লুটপাট হয়েছে তার বহু নমুনা এর মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। শেখ হাসিনা নিজে, তার ছেলে ও ভাগ্নি মিলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেন। সে খবর বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণসহ প্রকাশ্যে এসেছে। যেটা বাকি আছে সেটা হলো, প্রতিটি মেগা প্রকল্প থেকে তিনি বা তার স্বজন ও সহযোগীরা কে কত টাকা লোপাট করেছেন এবং সেই অর্থ কোন দেশের কোন ব্যাংকে কার অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়েছে সে খবর বের করে আনা। কোনো সন্দেহ নেই, সব প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ লোপাট করেছেন তারা।
পতিত সরকারের প্রধান ও তার সহযোগীরা শুধু অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন তা-ই নয়। তারা তাদের আজ্ঞাবহ দলীয় নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এবং প্রশাসনের প্রত্যেক ব্যক্তিকে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। খোদ শেখ হাসিনার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে তার প্রশ্রয়ে। সে তথ্য আবার নিজে প্রকাশ করেন সংবাদ সম্মেলনে। পুলিশ, রাজস্ব বোর্ডের সদস্য, কী বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন তার গুটিকয়েক আমরা জানতে পেরেছি। জানা যায়নি একইভাবে সম্পদের পাহাড় গড়া লাখ লাখ দুর্নীতিবাজের অপকর্ম।
একটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল সোমবার এক খবর প্রকাশ পেয়েছে সার লোপাটের। এতে বলা হয়েছে, গুদামে ৫০০ কোটি টাকার সার থাকার কথা কাগজ-কলমে লেখা থাকলেও বাস্তবে তার অস্তিত্ব মেলেনি। পরিবহন ঠিকাদার, বাফার গুদাম ইনচার্জ ও বিসিআইসির কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নানা কৌশলে ৯১ হাজার ৬৯৭ টন সার আত্মসাৎ করেছেন।
এটি হয়তো দুর্নীতির সামান্য অংশমাত্র। কিন্তু এ ঘটনায় ঠিকাদার, সরকারি কর্মচারী এবং অন্যদের পারস্পরিক যোগসাজশ বা দুর্নীতির নেটওয়ার্ক কিভাবে সক্রিয় ছিল তার একটি নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। মূলত স্বৈরাচারী শাসকরা সবাইকে সাথে নিয়ে এ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে, যাতে সবাই লাভবান হতে পারেন।
ক্ষমতার নানা স্তর থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা না হলে সংশ্লিষ্ট কারোর শাস্তি এড়ানোর উপায় ছিল না। দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়ে লাভবান হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী, মন্ত্রী-এমপি ও অন্যরা। পুরো দেশটাই তারা পদ্ধতিগতভাবে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে নিয়েছিলেন। ধারণা করা যায়, শুধু সার নয়, দেশের প্রতিটি খাতে একই অবস্থা করে পতিত একনায়ক।
ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে একনায়কের পতন ঘটেছে। নতুন বাংলাদেশে সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের সুযোগ হয়েছে। সেটি করতে সময় লাগবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে। কিন্তু তার আগে প্রথম কাজ গত ১৫ বছরে যারা দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন, জনগণের অর্থ নানাভাবে তছরুপ করেছেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা। প্রতিটি ঘটনা উদ্ঘাটন ও বিচার করা হয়তো কখনো সম্ভব হবে না, তবে পুকুরচুরির মতো বড় ঘটনাগুলো অবশ্যই ধরতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ দুর্নীতিতে জড়াতে সাহস করবেন না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা