চাওয়া-পাওয়া মেটাতে সময় দরকার
- ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ২১:৫৮
সম্প্রতি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র ব্যানারে দেশব্যাপী গড়ে ওঠে ছাত্র-জনতার আন্দোলন। এই আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেড় দশক ধরে জাতির ওপর জগদ্দল পাথর হয়ে বসে থাকা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তবে এ জন্য বিপুলসংখ্যক মানুষকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে।
অভ্যুত্থানের পর এখন দেখা যাচ্ছে, সারা দেশের কত শত মানুষ হাসিনা সরকারের দ্বারা কিভাবে, কত কায়দায় বঞ্চিত হয়েছেন। বিশেষ করে সরকারি চাকরিতে কর্মরত ভিন্নমতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিগত ১৫ বছরে ভয়াবহ বঞ্চনার শিকার। আসলে সবখানে ভিন্নমতের মানুষ পাহাড়সম বঞ্চনা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেছেন। বঞ্চিত হলেও তাদের বলার জায়গা ছিল না। প্রকৃত বাস্তবতায় হাসিনা সরকারের আমলে সব খাতে এমনভাবে দলীয়করণ করা হয়; পতিত স্বৈরাচারের দোসররা ছাড়া আর কারো স্বাভাবিক জীবন ছিল না। ফলে হাসিনার অজান্তে গণমানুষের ক্ষোভ গণবিস্ফোরণে রূপ নেয়। সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। পরিণতিতে হাসিনাকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে বাঁচতে হয়।
হাসিনার পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। এই সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে দেখতে পাচ্ছে, সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচারী হাসিনা রাষ্ট্রের এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যা ধ্বংস করেনি। অর্থনীতি, শিক্ষা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রশাসন সবখানে দলবাজদের বসিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশের আইনশৃঙ্খলা ফেরানোসহ রাষ্ট্র মেরামতের মতো কঠিন কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হচ্ছে। দেশের এমন পরিস্থিতিতে বঞ্চিতরা মাঠে নেমেছেন ১৫ বছরের বঞ্চনার ষোলোআনা উসুল করতে। প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চাইছেন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো পক্ষ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণে প্রধান উপদেষ্টার কাছে ধরনা দিচ্ছে।
বঞ্চিতদের অপূরণীয় ক্ষতির কথা স্বীকার করেও প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়, এই অল্প কয়েক দিন বয়সী সরকারের কাছে সব দাবি-দাওয়া নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত? যে সরকার এখনো ঠিকমতো নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নিতেই ব্যস্ত। সেই সরকারকে গুছিয়ে নেয়ার সময় না দিয়ে দাবি-দাওয়ার বহর নিয়ে মাঠে নামা কতটুকু বিবেচনাপ্রসূত তা কি ভেবে দেখেছেন বঞ্চিতরা। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে অনেক বঞ্চিত কিছুটা হলেও প্রতিকার পেয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার বঞ্চিতদের ব্যাপারে বেশ আন্তরিক, মনোযোগী ও যত্নশীল। অন্তর্বর্তী সরকারের এমন ইতিবাচক মানসিকতা সত্যেও অনেকের আর তর সইছে না। তারা তড়িঘড়ি করে এখনই বিগত ১৫ বছরের বঞ্চনার প্রতিকার এক মুহূর্তে পেতে চাইছেন। এই মানসিকতা আর যাই হোক, সুবিবেচনাপ্রসূত নয়।
আমরা মনে করি, দেশের এক সঙ্কটময় সময়ে এই অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে। সঙ্গতকারণে সবদিক বিবেচনায় এই সরকারকে বিব্রত না করে কাজ করার সুযোগ দেয়াই হচ্ছে সুনাগরিক হিসেবে আমাদের এক নম্বর কাজ। দেশ ধ্বংস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ালে আমরা সবাই বঞ্চনার প্রতিকার পাবো। এর জন্য একটু সময় প্রয়োজন। সেই পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে বৈকি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা