২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অ্যাডহক চিকিৎসকদের প্রতি অবিচার

-


স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ এবং ২০১১ সালে জনস্বার্থে মোট চার হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসককে এমসিকিউ ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যাডহকভিত্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার। পরে তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশনও করা হয়। ২০২২ সালে তাদেরকে পিএসসির মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডারভুক্ত করা হয়। জাতির জরুরি প্রয়োজনে তাদেরকে নিয়োগ দিয়ে ক্যাডারভুক্ত করা হলেও গত দুই বছরে পদোন্নতি না দিয়ে তাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। এদের অনেকে শুরু থেকেই বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বিভাগীয় পরীক্ষা এবং সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পথরুদ্ধ।

তাদের অনেকে পরে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যাডহক থেকে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। কিন্তু বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময় কাউকে কাউকে বলা হয়েছে, ‘আপনাদের অ্যাডহক চাকরি তো নিয়মিতকরণ হয়ে গেছে।’ বিসিএস পাস ক্যাডার চিকিৎসক আর অ্যাডহক থেকে ক্যাডারভুক্ত চিকিৎসক উভয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে একই চিকিৎসা সেবা দেয়।
অ্যাডহক চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য ক্যাডারের ভেতরে থেকেই জনগণকে চিকিৎসা দিয়েছেন, বাইরে থেকে নয়। ফলে সরকারি চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতা নিয়ে নিয়মিত পদোন্নতি পাওয়া অ্যাডহক চিকিৎসকদের অধিকার। তারা সরকারি চাকরি না করে প্রাইভেট খাতে থাকলে এতদিনে তারা অনেকেই সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক থাকতেন।

এ দিকে ২০২১ সালে কোনো এমসিকিউ এবং লিখিত পরীক্ষা ছাড়া শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে ৩৫০ জন অবেদনবিদকে সরাসরি উচ্চতর ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দেয়া হয়। এরা আগে এক দিনও সরকারি চাকরি করেননি, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নেননি এবং বিভাগীয় ও সিনিয়র স্কেল পরীক্ষা দেননি। তাহলে অ্যাডহক থেকে ক্যাডারভুক্ত ১৯৮৯ জন চিকিৎসক ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে সরকারি হাসপাতালে সেবা দিয়ে নবম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি পাবেন না কেন? এ চাকরিবিধি স্পষ্টতই বৈষম্যমূলক।

সুতরাং ন্যায্যতার স্বার্থেই বৈষম্যমূলক চাকরিবিধি দ্রুত সংশোধন করে সরকারি চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতা দিয়ে অ্যাডহক এবং প্রকল্পভুক্ত চিকিৎসকদের ন্যায্য পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। যারা অ্যাডহক থেকে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পরে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছেন, তারাও সরকারি চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকেই জ্যেষ্ঠতা নিয়ে পদোন্নতির অধিকার পাওয়ার যোগ্য। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সচেতন দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক : মেডিক্যাল অফিসার, নেফ্রোলজি, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল


আরো সংবাদ



premium cement