ভারতের আচরণ পাল্টাতে হবে
- ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের দীর্ঘদিনের অভ্যাস ছাড়তে পারছে না ভারত। ১৯৭১-এর স্বাধীনতার আগে থেকে দিল্লি এটি করে আসছে। আগে গোপনে করত, গত প্রায় দুই দশক ধরে সেটি প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। ভারত হয়ে উঠেছিল ঔপনিবেশিক শক্তির মতো। বাংলাদেশ থেকে তার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সমস্ত স্বার্থ শতভাগ আদায় করে নিয়েছে। বিনিময়ে বাংলাদেশের ন্যূনতম প্রাপ্যটুকু দেয়ার গরজ বোধ করেনি; বরং সীমান্তে একের পর এক বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বতন্ত্র ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চেতনা ধ্বংসের জন্য অনুগত রাজনৈতিক দল এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবিরাম আগ্রাসন চালিয়ে গেছে।
বাংলাদেশে ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানে ভারতের তাঁবেদার হাসিনার পতনের পরও দেশটির ওই আচরণে বিন্দুমাত্র পরিবর্তনের লক্ষণ নেই। তারা পলাতক হাসিনাকে শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, তাকে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘুদের মাঠে নামানোর পেছনে সর্বতোভাবে ইন্ধন জুগিয়েছে।
পরিবর্তনের পর পক্ষকাল পেরিয়ে গেলেও তারা ক্ষান্ত দেয়নি। খোদ সে দেশের মন্ত্রীরাও ভুল ও অনুমাননির্ভর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত রোববার বলেছেন, বাংলাদেশে নাকি জোর করে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। মূলত হিন্দুত্ববাদী ভারতে তারা সংখ্যালঘুদের প্রতি যে আচরণ করতে অভ্যস্ত তা বাংলাদেশেও ঘটে- এমন ধুয়া তুলতে চান।
ভারতের এ দাদাগিরি এখন বাংলাদেশের মানুষ মানবে না। তাদের গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের সাথে সৎ-প্রতিবেশীসুলভ আচরণে অভ্যস্ত হতে হবে।
গত রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারকালে ‘প্রথমবার’ পাঁচ ভারতীয় চোরাচালানিকে আটক করেছে বিজিবি। তাদের ফেরত দেয়া হয়নি। এতে খুব বিস্মিত হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। বিএসএফ দাবি করেছে, অনুপ্রবেশের ঘটনা ‘ভুলক্রমে’ ঘটেছে। অনুপ্রবেশকারীদের ‘খারাপ উদ্দেশ্য’ ছিল না। তাই দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ‘সুসম্পর্কের স্বার্থে’ আটক ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানায় বিএসএফ।
বিএসএফের অবাক হওয়া দেখে আমরা হতবাক। গত ১৭ বছরে বিএসএফ এমনকি বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকেও আমাদের নাগরিকদের হত্যা করে বলেছে, ওরা অনুপ্রবেশকারী। ফেলানীকে গুলি করে কাঁটাতারের বেড়ার ওপর ঝুলিয়ে রাখা এবং এমন হাজারো নির্মম হত্যার ঘটনা আমাদের স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি। বিজিবি যদি বিএসএফের কায়দায় অনুপ্রবেশকারী পাঁচ ভারতীয়কে গুলি করে মারত তাহলে বিস্মিত হওয়ার কারণ হতে পারত। বিজিবি তা করেনি। আটককৃতদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এটাই আইনসম্মত। বিএসএফ বলছে, সুসম্পর্কের কথা। আমরা বলতে চাই, বিএসএফ এতগুলো বছর ধরে চালিয়ে আসা অন্যায় ও ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ আগে সংশোধন করুক। সদিচ্ছার প্রমাণ দিক। তারপর সুসম্পর্কের কথা বললে বিবেচনা করা যাবে।
আর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে চুক্তি অনুযায়ী গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
সুসম্পর্ক রক্ষার দায় একা বাংলাদেশের নয়। এটি ভারতের দ্রুত অনুধাবন করতে হবে। কারণ সীমান্তে অস্থিরতা কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা