২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
রাতেই শুরু চামড়া পোড়ানো, ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

পদক্ষেপ নিতে হবে

-

একটি সহযোগী দৈনিকের সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, হরিরামপুরে পশুর চামড়া (ট্যানারির বর্জ্য) পুড়িয়ে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে মশার কয়েল ও মাছের খাদ্যের কাঁচামাল। ধুলশুড়া ইউনিয়নের আইলকুণ্ডি গ্রামে ফসলি জমিতে হয়েছে উন্মুক্ত এ কারখানা। মাঝরাতে পোড়ানো হচ্ছে পশুর চামড়া। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী। তাদের দাবি, শিগগিরই এ কারখানা বন্ধ করা না হলে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে যাবে। কারখানাটির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলার বনড়া ইউনিয়নের নারীসদস্য ছবুরা বেগমের স্বামী লোকমান হোসেন।
কারখানার মালিকের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। শ্রমিকদের কাছে মালিকের নাম জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা কিছুই জানি না।’ শুধু জানান, একজন লোক সাভারের হেমায়েতপুর থেকে সন্ধ্যায় আসে, রাতেই চলে যায়। ফসলি জমি বছর চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে দুই মাস আগে কারখানাটি গড়ে উঠেছে।
খোলা আকাশের নিচে বেশ কিছু জায়গাজুড়ে চলে মশার কয়েল ও মাছের খাদ্যের কাঁচামাল তৈরি। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ১০-১২ জন শ্রমিক প্রতিনিয়ত কাজ করছেন এ কারখানায়। রাতে চামড়ার উচ্ছিষ্ট অংশ ও প্লাস্টিকের বর্জ্য পোড়ানো হয়। পরে চুলায় সেদ্ধ করা হয়। দিনে শুকানো হয়। পরে সেগুলো ঢাকায় ১৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানার দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় তারা খুবই বিপাকে। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। জমির ফসলও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী লোককে ম্যানেজ করে কারখানা চালানো হচ্ছে। তাই তারা প্রতিবাদ করতেও সাহস পাচ্ছেন না।
কারখানার এলাকার জহির উদ্দিন বলেন, ‘রাতে যখন চামড়া পোড়ানো শুরু হয় তখন গন্ধে ঘুমাতে পারি না। ভাত খাওয়ার সময় গন্ধে বমি পর্যন্ত হয়। গরিব মানুষ হওয়ায় এ অত্যাচার নীরবে সহ্য করতে হচ্ছে।
আইলকুণ্ডি গ্রামের তোতা মিয়া বলেন, ‘সন্ধ্যার পর বাড়িঘরে থাকা দুষ্কর। গন্ধে বমি আসে।’ গ্রামপুলিশ সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, ‘পচা চামড়ার দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। পোড়ানোর সময় নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়।’
তদারকির দায়িত্বে থাকা লোকমান হোসেন বলেন, ‘মালিকের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ দেখভালের দায়িত্বে আছি। এতে খুব একটা গন্ধ হয় না।’ মালিকের নাম জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
ধুলশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জায়েদ খান বলেন, ‘বিষয়টি কয়েক দিন আগে শুনেছি। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেহেরুবা পান্না বলেন, ‘ট্যানারির বর্জ্য পোড়ানোর ধোঁয়া ও দুর্গন্ধ ক্ষতিকর।’ হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম। অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement