সাংবিধানিক শূন্যতা কাম্য নয়
- ০৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের পথ ধরে সংঘটিত বিশাল গণ-অভ্যুত্থানে গণধিকৃত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটেছে। ১৫ বছরের শ্বাসরুদ্ধকর স্বৈরাচারী শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট মানুষ মুক্তি পেয়েছে, খোলা হাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু এরপর সবার আগে দরকার সম্ভব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা। কারণ, দেশে শাসনতান্ত্রিক শূন্যতা বেশি সময় চলতে পারে না।
গত সোমবার শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও পলায়নের পর থেকে দেশে কেবল একজন রাষ্ট্রপতি আছেন। কোনো সরকার নেই। সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলার কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় হামলা, অগ্নিসংযোগের মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে। এসব অবিলম্বে বন্ধ হতে হবে। সরকার গঠনে যত দেরি হবে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তত বাড়বে। এক ধরনের অনিশ্চয়তাও দেখা দিতে পারে।
এরই মধ্যে সেনাবাহিনীতে বড় রদবদল করা হয়েছে। উদ্বেগজনক কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে হাওয়ায়। বিশ্বের যেকোনো গণ-অভ্যুত্থানে বা বিপ্লবের বিপরীতে প্রতিবিপ্লবের ঝুঁকি থাকে। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এবং পতিত স্বৈরাচারের দোসররা ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করে যেকোনো দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিপ্লব উল্টে দেয়ার। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত, এমনকি তার পরও সে ঝুঁকি থাকতে পারে।
এরই মধ্যে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী, সশস্ত্রবাহিনীর তিন প্রধান এবং জনতার প্রতিনিধি শিক্ষকরা। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিয়েছেন। ড. ইউনূস দেশে ফিরলে দায়িত্ব নেবেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে সরকারের সম্ভাব্য সদস্যদের একটি তালিকাও দেয়া হয়েছে। ১০ থেকে ১৫ জনের এ তালিকায় কাদের নাম আছে তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে দেশের জনগণ আশা করে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার সমর্থক কারো উপস্থিতি যেন অন্তর্বর্তী সরকারে না থাকে। সমাজের অন্য সব শ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব এতে রাখতে হবে। বিশেষ করে রাষ্ট্র পরিচালনায় ন্যূনতম অভিজ্ঞতা আছে এমন নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের রাখা দরকার।
কী প্রক্রিয়ায় সরকার গঠন হবে এবং তার মেয়াদ কতদিন হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতদ্বৈধতা থাকতে পারে। আগের কেয়ারটেকার সরকারগুলো তিন মাসের মেয়াদে সুষ্ঠু নির্বাচন করেছে। আবার ইয়াজউদ্দিন আহমেদের কেয়ারটেকার সরকার কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। এর পেছনে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত ছিল। সুষ্ঠু স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারলে তিন মাসে নির্বাচন করা সম্ভব। তবে ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিপুল আবর্জনা সৃষ্টি করে রেখে গেছে। পুলিশ, প্রশাসন, বিচার বিভাগ- সব দলীয় ব্যক্তিদের হাতে। এসব জঞ্জাল পরিষ্কার করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া মাত্র তিন মাসে কঠিন হতে পারে। এ বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অন্তত ছয় মাস করা যেতে পারে বলে আমরা মনে করি।
কিন্তু যা কিছু করা হোক, দ্রুত করতে হবে। সরকারের হাতে দেশের দায়িত্ব তুলে দিতে হবে।
আমরা মনে করি, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের পছন্দসই একটি সরকার প্রতিষ্ঠার পর সম্পন্ন হতে পারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বীর সেনানীদের দায়িত্ব। তার আগে নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা