২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ফ্যাসিস্ট হাসিনার শোচনীয় পতন

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয়

-

অভিনন্দন প্রিয় দেশবাসী, দেশের আপামর ছাত্র-জনতা। জনতার সংহতির শক্তি কত বড় তা আবারো প্রমাণিত হলো দেশের স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার ঘটনায়। নির্লজ্জ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়েছে দেশ ছেড়ে। অহমিকা ও আত্মম্ভরিতার পতন হয়েছে। আল্লাহর দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ। দু’দিন আগেও যে স্বৈরাচারের পতন ছিল অকল্পনীয়, অবিশ্বাস্য, আল্লাহর করুণায় তাই সম্ভব করলেন দেশের অকুতোভয় ছাত্র-জনতা। আইয়ুব শাহির পর সবচেয়ে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের রাহুমুক্ত হলো আজ দেশ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিজয়কে অভিহিত করছেন ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে। আমরা বলতে চাই, এটি আমাদের জাতীয় জীবনে হয়ে থাকবে মহত্তর এক অনন্য গৌরবগাথা হয়ে। কারণ, সশস্ত্র যুদ্ধ ছাড়া, বহিঃশক্তির ন্যূনতম সহায়তা ছাড়া অর্জিত হয়েছে এই মুক্তি। এজন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন ছাত্র-জনতা। তাদের বুকের রক্তে রচিত হয়েছে এ মুক্তির সোপান। অনির্বাচিত অবৈধ একদলীয় ফ্যাসিস্ট সরকারের পেটোয়া ও অনুগত নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে তারা শাহাদত বরণ করেছেন। সদ্য পতিত স্বৈরাচারী হাসিনার নৃশংস ও বর্বর হামলায় দুই বছরের শিশু থেকে শুরু করে হাজার খানেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ যারা গত কয়েক দিনে শহীদ হয়েছেন তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। পরকালে আল্লাহ যেন তাদের কবুল করেন।
দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবারের মধ্যে তার কাঠামো স্পষ্ট হবে। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এই বিষয়ে কাজ করছেন। সবার প্রত্যাশা, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে কোনোভাবে যুক্ত ব্যক্তিরা নতুন সরকারে জায়গা পাবে না।
সেনাপ্রধান তার বক্তৃতায় প্রতিটি হত্যার বিচার করার দায়িত্ব নিয়েছেন। এর সাথে গত ১৫ বছরে ভিন্নমতের অনুসারী ব্যক্তি এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা যেসব ফ্যাসিবাদী হামলা, মামলা, নির্যাতন, গুম-খুন, সন্ত্রাস ও হয়রানির শিকার হয়েছেন; সেগুলোর ঘটনার বিচার করতে হবে। সারা দেশে অসংখ্য মানুষের জায়গা-জমি, ঘরবাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গায়ের জোরে দখল করেছে আওয়ামী লীগের গুণ্ডাবাহিনী ও সন্ত্রাসী নেতাকর্মীরা। সেসবেরও প্রতিকার করতে হবে। আওয়ামী লীগের সব নেতা, মন্ত্রী এমপি ও সহযোগীদের অবৈধ সম্পদের পাই পয়সার হিসাব নিতে হবে, প্রয়োজনে বাজেয়াপ্ত করা ও তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অবশ্যই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তবে আমরা এ সরকারের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে একটি শ্বেতপত্র পাওয়ার আশা করি যেটিতে গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার মোশাহেবরা জনগণের কী পরিমাণ সম্পদ ও রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট করেছে তার প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে। এর আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অর্থনীতিসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে এ ধরনের শ্বেতপত্র প্রকাশের উদাহরণ আছে।
দেশের মানুষের ক্রোধ ও ক্ষোভ প্রশমনে অন্তর্বর্তী সরকার সবার আগে আরেকটি কাজ করতে পারে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার যেসব নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং বিভিন্ন মিডিয়া হাউজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; সেই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে তুলে নিয়ে তাদের সব সম্পদ ফিরিয়ে দেয়া ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থার উদ্যোগ নেবে।
স্বৈরাচারের অধীনে সরকারের তাঁবেদারে পরিণত হওয়া প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি প্রচারমাধ্যমসহ প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। তবে এগুলো নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেয়াই যুক্তিযুক্ত।
অন্তর্বর্তী সরকার অবিলম্বে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারবে এ আশা করাই যায়। কারণ জাতীয় যে কোনো কর্মকাণ্ড ব্যাহত করার সেই উচ্ছৃঙ্খল সমাজবিরোধী দুর্বৃত্ত দলটি এখন সক্রিয় নেই। বলা দরকার, আমরা কোনো দল নিষিদ্ধের পক্ষপাতী নই।


আরো সংবাদ



premium cement
পর্ণো তারকাকে অর্থ দেয়ার মামলা খারিজের আবেদনের অনুমতি পেলেন ট্রাম্প দোহারে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর নামে ছাত্রলীগ নেতার মামলা ‘কোরআন-সুন্নাহর আদর্শ ছাড়া আলেমদের জন্য রাজনীতি জায়েজ নেই’ চীনা দূতাবাসের আউটস্ট্যান্ডিং পার্টনার অ্যাওয়ার্ড অর্জন অ্যাবকার ঢাবির রাজনীতিবিষয়ক বিশেষ কমিটির কার্যক্রম শুরু রোববার রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের বিক্ষোভ রেহানার সুরের মূর্ছনায় হেমন্তের এক মুগ্ধ সন্ধ্যা একুশে বইমেলায় স্টলভাড়া কমানোর দাবি ২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সপ্তাহ পার করল স্বর্ণের বাজার নির্বাচনের কোনো বিকল্প দেখছেন না তারেক রহমান গোল করেও দলকে জেতাতে পারলেন না রোনালদো

সকল