খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে
- ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০১:৫৪
দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ক্রমে আরো বেশি হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। খাদ্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি অর্থনীতির প্রায় সব খাতে ধসের আলামত স্পষ্ট। গত এক বছরের খাদ্য মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি বিবেচনা করে বিশ্বব্যাংকের ষান্মাসিক রিপোর্টে বাংলাদেশকে এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে ‘লাল’ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অরো বেড়ে ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়লে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি বাড়ে। তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। গত এক যুগের মধ্যে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি চাপে ছিলেন। এ চাপ মূল্যস্ফীতির। সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। গত জানুয়ারিতে যখন খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে ছিল তখনই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের প্রায় ২২ শতাংশ মানুষ ছিলেন মাঝারি বা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বাড়ছে, প্রকৃত আয় কমছে। খরচে কুলাতে না পেরে মধ্যবিত্ত সঞ্চয় ভাঙছে কিংবা খাদ্যবহির্ভূত খাতে খরচ কমাচ্ছে। কিন্তু অতিগরিব মানুষ বাধ্য হচ্ছেন খাবার কেনা কমিয়ে দিতে। গত প্রায় দুই বছর ধরে দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ তাদের প্রয়োজন মাফিক খাবার কিনতে পারছেন না। অনেকে আধপেটা থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। খাবারের পদ কমিয়েছে অথবা মাছ-গোশতের মতো দামি খাবার কেনা বাদ দিয়েছেন।
অর্থনীতির অবস্থা দিন দিন আরো নাজুক হয়ে পড়ছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গোষ্ঠীস্বার্থ সংরক্ষণ ও দুর্নীতি, লুটপাটের প্রবণতা রীতিমতো ধস নামিয়েছে। চলমান ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় অর্থনৈতিক সব কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রেমিট্যান্স আসছে কম। রফতানি আয় কমছে। ডলারের দর বেড়ে ১২৫ টাকায় উঠলেও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বিপজ্জনক পর্যায়ে নেমে যাচ্ছে এবং বাইরের ঋণ গ্রহণের সামর্থ্য হারাচ্ছে বাংলাদেশ।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশের ঋণমান বা ক্রেডিট রেটিং কমিয়ে দিয়েছে বিশ্বের খ্যাতনামা ঋণমান বা ক্রেডিট রেটিং যাচাইকারী কোম্পানি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। এর আগে অন্য দু’টি প্রতিষ্ঠান মুডিস ও ফিচ রেটিংস বাংলাদেশের ঋণমান আগেই হ্রাস করেছিল। এর অর্থ হলো- ঋণদাতাদের কাছে বাংলাদেশে ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য কমে যাওয়া। ফলে বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বৈদেশিক সহায়তা ও ঋণ পেতে সমস্যায় পড়বে সরকার।
এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা বা উত্তরণে সরকারের এ মুহূর্তে তেমন কিছু করারও নেই। তারা গত ১৫ বছরে অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা আনার পরিবর্তে এটিকে নিজেদের ইচ্ছামাফিক ব্যবহার করেছে। ঋণের নামে ব্যাংকের অর্থ যেনতেনভাবে অনুগত খেলাপিদের হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ দিয়েছে।
কিন্তু কোটা সংস্কার বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সরকার যে নজিরবিহীন দমননীতি চালিয়ে যাচ্ছে তাতে পুরো বিষয়টি এ মুহূর্তে বৃহত্তর অসহযোগ ও সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
আন্দোলনের মুখে নিজের অবস্থান ধরে রাখা এখন সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। অর্থনীতি নিয়ে ভাবার অবকাশ তাদের নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা