২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
আর নয় দমন-পীড়নের চিন্তা

এবার আসুক শান্তির ডাক

-

দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্কোচন ও ভোটাধিকার বঞ্চনার ক্ষোভ এখন একসাথে উগড়ে পড়েছে বাংলাদেশে। চাকরিতে কোটা প্রথা নিয়ে এর সূত্রপাত হলেও সরকারের একের পর এক ভুল পদক্ষেপ পুরো দেশকে অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে। সারা দেশে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একের পর এক পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রের সব বাহিনীকে নিয়োজিত করেও বিক্ষুদ্ধ জনতার ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আসা যাচ্ছে না। এমন গণবিস্ফোরণ কোনোভাবে বলপ্রয়োগ করে প্রশমন করা যাবে না তা নিশ্চিতভাবে বোঝা গেলেও সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করেছে।
প্রথম দফায় ছাত্র হত্যার পর এ আন্দোলন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। এরপর তাদের দমন করতে গিয়ে সরকার এতটা বলপ্রয়োগ করেছে যে, এখন তার দায় কেউ নিচ্ছে না। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে ছাত্র-জনতা হত্যা নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলা হচ্ছে। বহু ফুটেজে স্পষ্ট যে- কিভাবে তারা মারা গেছেন। তার পরও একই ধরনের মিথ্যাচার চালিয়ে যাওয়ায় ছাত্র-জনতার ক্ষোভ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, দেশ-বিদেশে এ হত্যা নিয়ে জোরালো কথা উঠেছে। শিশুহত্যা নিয়ে ইতোমধ্যে ইউনিসেফ বিবৃতি দিয়েছে। প্রয়োজন হচ্ছে এ দায় শিকার করে নেয়া এবং পরিবারগুলোর সাথে সমবেদনা প্রকাশ। কিন্তুদায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে এ ধরনের কিছু দেখা যায়নি; বরং এ আন্দোলনে ক্ষতির শিকার হওয়া বিভিন্ন স্থাপনা নিয়ে মায়াকান্না দেখা গেছে। খুনের শিকার হওয়া পরিবার ও তাদের সাথে সহমর্মিরা সরকারের এমন আচরণে হতভম্ব।

আন্দোলনে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। রাস্তায় মাইলের পর মাইল তাদের মিছিল দেখা যাচ্ছে। তারা বহন করছেন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড। তাতে রয়েছে প্রতিবাদী স্লোগান। এগুলোতে এমন সব দাবি দাওয়া লেখা যার সাথে জাতি একাত্ম। ছাত্রদের সাথে অংশগ্রহণ করছেন অভিভাবকরাও। সাধারণ মানুষ রাস্তায় তাদের স্বাগত জানাচ্ছেন, পানি খাবার-দাবার দিয়ে অনেকে এগিয়ে আসছেন। সব মিলিয়ে এ আন্দোলন এক অভূতপূর্ব জাগরণ সৃষ্টি করেছে। এমনকি এতে শুরুর দিকে পুলিশ যতটা আগ্রাসী ভূমিকায় ছিল তাদের সেই ভূমিকা আর দেখা যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যের বিষয় এ আন্দোলনে সরকারি দলের বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনকে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক অবস্থানে দেখা যাচ্ছে। সারা দেশে নয়, কিছু কিছু জায়গায় তারা সশস্ত্র অবস্থায় মহড়া দিচ্ছে। প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ করার ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে।
পুরো জাতি যখন ছাত্রদের দাবির সাথে একাত্ম তখন সরকারি দলের বিচ্ছিন্ন এ আক্রমণ মানুষের ক্ষোভ আরো তীব্রদর করছে। ছাত্রদের ডাকা আন্দোলনে পুরো দেশ অচল হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু আক্রমণ করে এই আন্দোলনকে দমানোর চিন্তা ভুল। এমন দমন-পীড়নের শাসন দেড় দশক ধরে মানুষ দেখেছেন। এমন দমবন্ধ অবস্থা মানুষ আর মেনে নিতে চান না।
এই পরিস্থিতি শান্ত করার জরুরি। অন্যথায় পুরো দেশ এক অন্ধকারের চোরাবালিতে আটকে যেতে পারে। এমন অবস্থা কেউ চান না। এখন প্রয়োজন কাউকে জাতির অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। বলতে হবে- আর কোনো রক্তপাত আমরা চাই না। ডাক দিতে হবে শান্তি ও সম্প্রীতির। আশা রাখি, নিশ্চয় সেই শুভ সূচনা হবে। যেখানে সবার নিরাপত্তা সমান গুরুত্ব পাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফার্মগেটে ৭ তলা ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ইউক্রেনের ডনেটস্ক অঞ্চলের গ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া পর্ণো তারকাকে অর্থ দেয়ার মামলা খারিজের আবেদনের অনুমতি পেলেন ট্রাম্প দোহারে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর নামে ছাত্রলীগ নেতার মামলা ‘কোরআন-সুন্নাহর আদর্শ ছাড়া আলেমদের জন্য রাজনীতি জায়েজ নেই’ চীনা দূতাবাসের আউটস্ট্যান্ডিং পার্টনার অ্যাওয়ার্ড অর্জন অ্যাবকার ঢাবির রাজনীতিবিষয়ক বিশেষ কমিটির কার্যক্রম শুরু রোববার রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের বিক্ষোভ রেহানার সুরের মূর্ছনায় হেমন্তের এক মুগ্ধ সন্ধ্যা একুশে বইমেলায় স্টলভাড়া কমানোর দাবি ২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সপ্তাহ পার করল স্বর্ণের বাজার

সকল