২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ছাত্র আন্দোলনে ফের ঝরল প্রাণ

বলপ্রয়োগ নীতিই দায়ী

-


সরকারের পুনঃপুন দাবি, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করছে। একই সাথে দাবি করা হচ্ছে, বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবতা কি তাই? যদিও কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগ করা হবে না এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুতি যে অন্তঃসারশূন্য সে কথার জাজ্বল্যমান প্রমাণ এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে বিপুল মানুষের প্রাণহানি। এত অল্প সময়ে এত মানুষের প্রাণহানি এ দেশে কোনো ছাত্র আন্দোলনে আগে ঘটেনি।
সহিংস ঘটনা-পরবর্তী ‘ব্লক রেইডের’ নামে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে গণগ্রেফতার অভিযান চালানো হয়েছে। দেশী-বিদেশী তীব্র সমালোচনার মুখে সরকার আপাতত গণগ্রেফতার বন্ধ করেছে। পুলিশ-র্যাব যে কাণ্ডজ্ঞান রাখতে পারেনি তার নজির- ওই সময় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও আটক করা হয়। বেগতিক দেখে গত শুক্রবার ছুটির দিন আদালত বসিয়ে ৪৯ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে জামিন দেয়া হয়।
এ দিকে গত শুক্রবার শিক্ষার্থীদের আহ্বানে প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিলের কর্মসূচি পালিত হয় সারা দেশে। সর্বস্তরের মানুষ সক্রিয়ভাবে কর্মসূচি পালন করেন। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হলেও বেশ কিছু স্থানে পুলিশ ও তাদের সাথে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা মাঠে নামেন। খুলনা, হবিগঞ্জ ও রাজধানীর উত্তরায় সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবারো ঘটেছে প্রাণহানি। আহত হয়েছেন অনেকে।
গণমাধ্যমের খবর, চলমান ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা এবং পুলিশ ও সরকারের পেটোয়া বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে গত শুক্রবার ফের দু’জন নিহত হয়েছেন। এর কারণ যে সরকারের বলপ্রয়োগ নীতি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সরকার যে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলন দমাতে চেয়েছে এবং এখনো সেই নীতিতেই অটল, সে কথা বলে দেয় গত দুই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে রক্তপাত, প্রাণহানি। এ পর্যন্ত যত প্রাণহানি প্রাণঘাতী ঘটেছে সেগুলোর সবই অস্ত্রের বেপরোয়া ব্যবহারে হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্ত থেকে জানা যায়, তাদের শরীরের ক্ষত প্রাণঘাতী অস্ত্রের। যে ধরনের অস্ত্রের গুলিতে এত বিপুল মানুষ হতাহত হয়েছেন, সে ধরনের অস্ত্র শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে থাকার কথা। শুধু তা-ই নয়, গত ১৫ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত আন্দোলন দমাতে সরকার কত মরিয়া ছিল, সে আলামত পাওয়া যায় ইউনিসেফের এক তথ্যে। সংস্থাটি বলছে, দেশে গত এক সপ্তাহের আন্দোলনে ৩২ শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন শুরু করেন, তখন সরকার তা পাত্তা দেয়নি। কেউ কেউ আন্দোলন মোকাবেলায় ছাত্রলীগকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশের সহায়তায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা যখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখনই সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ শুরু হয়। সরকার কোনোভাবেই এ প্রাণহানির দায় এড়াতে পারে না।
প্রকৃত বাস্তবতায় সরকারের বলপ্রয়োগ নীতি আজ দেশকে এই পর্যায়ে এনে দাঁড় করিয়েছে। অথচ সবার জানা, বলপ্রয়োগ কারো জন্যই কল্যাণ বয়ে আনে না। সরকার সেই ফাঁদে পড়েছে; যা থেকে উত্তরণ কঠিন।


আরো সংবাদ



premium cement
জয়সাওয়ালের রেকর্ড ছক্কার দিনে পার্থে দাপট ভারতের তারেক রহমান ও কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুমকি ‘বাবা বলে ডাকতে পারি না’ বিএনপি নির্বাচন চায় দেশকে রক্ষার জন্য : মির্জা ফখরুল জাতীয় ঐক্যের মধ্যদিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : গোলাম পরওয়ার সাঙ্গু নদীতে নৌকা বাইচের মাধ্যমে শুরু হলো বান্দরবানে সপ্তাহব্যাপী ক্রীড়া মেলা ফার্মগেটে ৭ তলা ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ইউক্রেনের ডনেটস্ক অঞ্চলের গ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া পর্ণো তারকাকে অর্থ দেয়ার মামলা খারিজের আবেদনের অনুমতি পেলেন ট্রাম্প দোহারে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর নামে ছাত্রলীগ নেতার মামলা ‘কোরআন-সুন্নাহর আদর্শ ছাড়া আলেমদের জন্য রাজনীতি জায়েজ নেই’

সকল