২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
যমুনায় ধসে পড়ছে ‘মুজিব কিল্লা’

তার মেয়ের আমলেই যদি...

-

একটি সহযোগী দৈনিকের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় চরাঞ্চলের মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় কাজীপুরে ‘মুজিব কিল্লা’ তৈরির কাজ চলছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের এ কাজটি জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ৫ জুলাই যমুনার পানির স্রোতে মুজিব কিল্লার একাংশ ভেঙে গেছে। কাজীপুর উপজেলার চরগিরিশ ইউনিয়নের ছালাল ও চরডগলাস মৌজায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এই মুজিব কিল্লা। ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কাজটি বাস্তবায়ন করছে সজীব কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ৫ জুলাই যমুনায় ভেঙে পড়েছে ভবনটির একাংশ। স্থানীয় লোকজন জানান, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে চরাঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় নির্মিত এই মুজিব কিল্লা আদৌ টিকবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মুজিব কিল্লার পূর্বপাশে নদীর পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট আছে। এটি দুই বছর আগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর ফলে পানি দ্রুত সরতে পারছে না। ডগলাস-ভেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, নতুন মাটির ওপর স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্থাপনাটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় মুজিব কিল্লার একাংশ ভেঙে পড়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এটি বি-টাইপের স্থাপনা। আয়তন ৯ হাজার ৩০০ বর্গফুট। প্রকল্পের নাম ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’।

মুজিব কিল্লার প্রকল্প পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিল্লাটি টিকবে কি না যাচাই করার জন্য তিন সদস্যের কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী মাসের শুরুতেই কমিটি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রিপন মিয়া বলেন, মূল মাটির এক ফুট নিচ থেকেই পিলার তুলেছেন। পানির প্রবল স্রোতের কারণে মাটি সরে যাওয়ায় ভেঙে গেছে, তারা ৮০ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ করেছেন।
চরগিরিশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘মূল মাটি থেকে পিলার তোলা হলে সহসা ঘর ভাঙত না। আলগা মাটির ওপর স্থাপনা করার কারণে স্রোতে মাটি সরে যাওয়ার সাথে সাথে দেবে গেছে। কিল্লা ছালাল, চরডগলাস, ভেটুয়া ও সিন্দুর আটা- এই চার মৌজার মাঝখানে টিকে থাকলে এসব এলাকার মানুষ দুর্যোগের সময় উপকৃত হতো।’ কাজীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এ কে এম শাহ আলম মোল্লা বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এর ভেতরে মানুষের থাকা-খাওয়া, প্রস্রাব-পায়খানা ও গোসল করার ব্যবস্থা আছে। নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নদীর স্রোতে কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় প্রকল্প পরিচালক পরিদর্শন করতে কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তার মেয়ের আমলেই যদি, নির্মীয়মান মুজিব কিল্লার এ অবস্থা হয়, পরে না জানি অবস্থা কী দাঁড়ায়।


আরো সংবাদ



premium cement