বন্দীদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখুন
- ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশব্যাপী সহিংস ঘটনায় এখনো গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। গত ১৪ দিনে অর্থাৎ মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশে ১০ হাজার ৪৫০ জন গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় গ্রেফতার অন্তত তিন হাজার। কোন অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানেন না ভুক্তভোগীরা। নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ঢাকার আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ঢাকায় ২৭০টি মামলায় দুই হাজার ৮৯১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জামিনে মুক্ত করতে পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় স্বজনের ভিড় বেড়েই চলছে। গ্রেফতারকৃতদের জামিন চাইতে গিয়ে দিনভর আদালতের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটছেন স্বজনরা। একদিকে সীমাহীন দুর্ভোগ, অন্য দিকে জামিন করাতে গিয়ে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকে।
লক্ষণীয়, গ্রেফতার হওয়া অনেকে বিএনপি ও জামায়াত এবং দল দু’টির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। এ ছাড়া বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিশাল একটি অংশের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের অনেকে শিক্ষার্থী, বেসরকারি চাকরিজীবী, ফুটপাথের দোকানদার বা পথচারী। অবশ্য পুলিশের দাবি, সহিংসতায় যারা জড়িত, শুধু তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে, তা থেকে অপরাধী শনাক্তের পর গ্রেফতার করছেন তারা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক হিসাব মতে, গত সোমবার পর্যন্ত রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ২৪৩টি মামলায় দুই হাজার ৬৩০ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মোট গ্রেফতারের প্রায় ৮৭ শতাংশেরই রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ।
কারাগার মূলত সংশোধনের জায়গা। সম্প্রতি এ দেশে কারাগার সরকারবিরোধীদের বন্দিখানা হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ উদাহরণ, কোটা আন্দোলন ঘিরে গণগ্রেফতার। আন্দোলনে কার কী দায় এবং সহিংসতায় কারা জড়িত তা আমলে না নিয়ে গণহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কারাগারের ধারণক্ষমতা না থাকলেও চলছে গ্রেফতার। এতে করে কারাগারে বিভীষিকাময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
বন্দীর চাপে আগে থেকে কারাগারগুলো ছিল জেরবার। গত ৯ মাস আগে থেকে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দী আটক আছেন জেলখানায়। আমাদের কারাগারগুলোতে বন্দী ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬৮৮ জন। সেখানে বন্দী রাখা হয়ছে ৮৭ হাজার ৮১২ জন। কিছু কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন-চারগুণ বন্দী রয়েছেন। অবস্থা এমন যে, এক বন্দীর জায়গায় থাকছেন তিন-চারজন। কোটা আন্দোলনের পর ঢালাওভাবে গ্রেফতারে কারাগারের পরিস্থিতি আরো শোচনীয় হয়ে উঠেছে। মাত্রাতিরিক্ত বন্দীর চাপে বন্দীদের জীবন মানবেতর পর্যায়ে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
যেকোনো অজুহাতে সরকারবিরোধী হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে ঢোকানো মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। বন্দীদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে হবে। তা না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমর্যাদা আরো ক্ষুণœ হবে। ইতোমধ্যে কোটা আন্দোলনে বিপুলসংখ্যক হতাহতের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দেশের ইমেজ রক্ষায় সরকারকে নজর দিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা