গণহয়রানিতে রূপান্তর
- ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
বিভিন্ন সময় দেশে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোনো সঙ্কট দেখা দিলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। বিশেষ করে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় গণগ্রেফতার এদেশে পুরনা সংস্কৃতি। সঙ্কটকালে পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেফতার-বাণিজ্যের অভিযোগও পুরনো।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলাগুলোতে বিপুলসংখ্যক অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর ফাঁদে পড়ছেন নিরপরাধ অনেকে। যাদের প্রায় সবাই সাধারণ মানুষ। গভীর সঙ্কটের সময়ে গ্রেফতারের ওপর তদারকি না থাকলে ঘোরতর সমস্যা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী হন সাধারণ মানুষ। রাজধানীতে এখন প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ স্বজনের খোঁজে ভিড় করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়, বিভিন্ন থানা ও আদালতের সামনে।
ঢাকার আদালত সূত্রের বরাতে জাতীয় একটি দৈনিকের প্রতিবেদন, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ঢাকায় ২৭০টি মামলায় দুই হাজার ৮৯১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক হিসাব মতে, গত সোমবার পর্যন্ত রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ২৪৩টি মামলায় মোট দুই হাজার ৬৩০ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ২৮৪ জনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি, যা মোট গ্র্রেফতারের ৮৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ কোনো দলের সাথে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মী ২৬৯ জন, জামায়াতের ৬৩ এবং শিবিরের আছেন ১০ জন। এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদের তিনজন এবং জেপির আছেন একজন, যা মোট গ্রেফতারের ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।
গণগ্রেফতারের অভিযোগ নাকচ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করছেন না। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য ও ভিডিও ফুটেজ এবং সাক্ষীসাবুদ নিয়ে যাদের শনাক্ত করা গেছে, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ভুলক্রমে যদি কেউ নিয়ে আসে তাহলে থানায় যাচাই করে যাদের নিরপরাধ মনে হচ্ছে, তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।’
সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘যখন গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে টার্গেট দেয়া হয়, তখনই এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে। গ্রেফতারগুলো বাণিজ্যে রূপান্তরিত হয়। এ জন্য রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা না বলে পুলিশকে তার কাজের সীমারেখার মধ্যে থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতিটি বিষয় গুরুত্বসহকারে তদারকি করতে হবে।’
সাম্প্রতিক সহিংসতায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার কথা সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হলেও এত বেশি সংখ্যক সাধারণ মানুষ কেন গ্রেফতার হচ্ছেন, এর কোনো সদুত্তর নেই। তাই সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে পুলিশের অভিযোগ কার্যত সরকারবিরোধী নেতাকর্মীদের নতুন করে হয়রানির অজুহাত কি না এমন প্রশ্ন উঠছে।
আমরা মনে করি, সরকার যদি সম্প্রতি রাজধানীতে ঘটে যাওয়া ধ্বংসযজ্ঞের জন্য প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে চায়, তা হলে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের আগে কারো ওপর দোষারোপ করা বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। তবেই প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা