এ পরিষেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখুন
- ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দেশে অবশেষে চালু করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। ১২ দিন বন্ধ রাখার পর এটি চালু করা হলো। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে বন্ধ রাখায় ফেসবুকভিত্তিক বাণিজ্যিক উদ্যোক্তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন। পরিষেবাটি চালু হওয়ায় সাধারণ ব্যবহারকারীসহ সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
করোনা মহামারীর সময় থেকে দেশে ইন্টারনেটভিত্তিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমের প্রসার ঘটে। বহু উদ্যোক্তা এগিয়ে আসেন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পণ্য বিপণনের নতুন সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। বিশেষ করে, নগরে বসবাসকারী বিপুলসংখ্যক মানুষ অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন।
বর্তমানে শুধু ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পণ্য বিপণনকারী উদ্যোক্তার সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। জড়িত ১৫ লাখের বেশি কর্মী। গ্রাহকের সংখ্যাও বিপুল। ফেসবুক বন্ধ থাকায় প্রতিদিন এসব উদ্যোক্তা ও কর্মী বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রতিদিনের আর্থিক ক্ষতির অঙ্ক ছিল ৭০ কোটি টাকার বেশি, যা কোনোভাবে উপেক্ষা করার মতো নয়।
১০-১২ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় গোটা ই-কমার্স খাতে মোট ক্ষতির হিসাব দিয়েছে ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ী সংগঠন ই-ক্যাব। সংস্থাটির হিসাবে, ১০ দিনে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে এমন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ফেসবুকভিত্তিক এফ-কমার্স ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ৬০০ কোটি টাকা। ই-লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ই-পর্যটন ও ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ডিজিটাল ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে আরো ৩০০ কোটি টাকা। ফেসবুকভিত্তিক এফ-কমার্সের প্রতিদিনের ক্ষতির পরিমাণ ৬০ কোটি টাকার মতো। কারো মতে, এর পরিমাণ ৬০-৭০ কোটি টাকার বেশি।
দেশের অর্থনীতি যখন ভঙ্গুর এবং ক্রমেই নিম্নগামী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সে সময় এই ক্ষতি মোটেও সামান্য নয়। ই-কমার্সের সব উদ্যোক্তা তাদের পণ্যের ছবি ও বিবরণ ফেসবুকে প্রদর্শন করেন গ্রাহক আকৃষ্ট করতে। ফেসবুকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ক্রেতা পান তারা। তাই ফেসবুক বন্ধ থাকা সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। ফেসবুক বন্ধ থাকায় অনেকে বেকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েন।
ফেসবুকভিত্তিক নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স (উই) ট্রাস্ট জানায়, উই ফেসবুক গ্রুপে ১৪ লাখের বেশি নারী যুক্ত। এর মধ্যে সাড়ে চার লাখ উদ্যোক্তা। একেকজন উদ্যোক্তা প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন। নেট বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৬৭-৬৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফেসবুক বন্ধ থাকায় তাদের পুরো ব্যবসায় বন্ধ ছিল।
গতকাল দুপুরের পর ফেসবুক চালু করে দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কবে ফের চালু হবে, তা বুধবার জানাবেন। তবে গতকাল সভা করে ফেসবুক চালু করেন।
ইন্টারনেট পরিষেবা বর্তমান বিশ্বে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। কারণ, এটি বাকস্বাধীনতার সাথে যুক্ত। তাই এ পরিষেবা যেকোনো পরিস্থিতিতে অবাধ ও নিরবচ্ছিন্ন রাখা সময়ের দাবি। জরুরি অবস্থা ছাড়া সরকার এ মৌলিক মানবাধিকার খর্ব করতে পারে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা