২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জাতিসঙ্ঘের অধীনে স্বচ্ছ তদন্ত দাবি

মানবাধিকারের জয় হোক

-

ছাত্র আন্দোলন দমাতে নির্মম বলপ্রয়োগে শত শত প্রাণহানি ঘটেছে। ছাত্ররা বন্দুকের নলের মুখোমুখি হয়ে জীবন দিলেও নারী শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এই সময় প্রাণ হারিয়েছে। রেহাই পায়নি ছাদে বেড়াতে গিয়ে কোলের শিশু। এই সময় সরকার সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়ায় সন্দেহ ও সংশয় বাড়িয়েছে। কী এমন ঘটেছে, শত শত মানুষকে প্রাণ দিতে হলো সে রহস্য উদঘাটন করা সবচেয়ে জরুরি। বর্তমান সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতায় বহু মানুষ হতাহত হলেও তা নিয়ে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হয়নি। এবার নির্বিচারে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর একটি অবাধ বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি উঠেছে সারা বিশ্ব থেকে। মানবাধিকার কর্মী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, দেশে বিদেশে আন্তর্জাতিক পরিসরে এ ধরনের একটি তদন্তের জোরালো দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন।
দেশের ৭৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক কোটা আন্দোলন নিয়ে ঘটা নির্মমতা নিয়ে জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন। ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকেরা’ ব্যানারে সংবাদপত্রে তাদের বিবৃতি প্রকাশ হয়। বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, এত অল্প সময়ে কোনো একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এমন বিপুলসংখ্যক হতাহতের নজির গত ১০০ বছরের ইতিহাসে এ দেশে তো বটেই, এ উপমহাদেশেও মিলবে না। দেশের বৃহত্তর স্বার্থ, শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ও সামগ্রিকভাবে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ, শিক্ষামুখী রাখতে তারা কয়েকটি দাবি সরকারের কাছে পেশ করেছেন। নিহত, নির্যাতিত ও আহত হওয়ার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হতে হবে। স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্তের স্বার্থে তা জাতিসঙ্ঘের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে হওয়া জরুরি। এ ছাড়া এই আন্দোলনে মানুষ হত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিভিন্ন দেশ, সংগঠন ও বৈশ্বিক নাগরিক ও সুশীল সমাজ এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কয়েক দিন আগে বিশ্বের ১৪০ জনের বেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ককে উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। এরা সমসাময়িক বিশ্বের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, লেখক ও বুদ্ধিজীবী। তারাও একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনার জন্য জোর তাগিদ দেন। তাদের আহ্বানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী সহিংসতা ঘটানো এবং সংবাদ প্রকাশ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়। সারা বিশ্বের সংবেদনশীল মানবতাবাদী মানুষেরা একই ধরনের দাবি জানাচ্ছেন।
সামাজিকমাধ্যম চালু হওয়ার পর বেশ কিছু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র সামনে এসেছে। এক আহত তরুণকে মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে সরাসরি গুলি করা হয়েছে। মরতে যাওয়া একজন মুমূর্ষুকে কেন গুলি করতে হবে? নির্মাণাধীন বাড়িতে আটকে পড়া আরেক তরুণকে কাছে থেকে সরাসরি গুলি করা হচ্ছে। এ ধরনের বহু নির্মম দৃশ্য সামনে চলে এসেছে। মানবাধিকারের স্বার্থে প্রত্যেকটি ঘটনার নির্মোহ তদন্ত দরকার। এই দায় থেকে রাষ্ট্র, সরকার, জনগণ, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেউ মুক্ত নয়। তাই সবাইকে এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে।
বিচার ও শাস্তির বিষয়টি পাশ কাটিয়ে গেলেও শত শত মানুষ হত্যার কেন প্রয়োজন হলো সেই বিষয় অজানা থেকে যাবে তা কোনোভাবে মানা যায় না। তাই দেশী বিদেশী বিভিন্ন মঞ্চ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার যে আওয়াজ উঠেছে তার বাস্তবায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রয়োজনে ইটনা-মিঠামইন সড়ক ভাঙা হবে : উপদেষ্টা ফরিদা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কেন ভোলা উচিত নয় কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক নরসিংদীতে পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার আড়াইহাজারে অটোরিকশার বেপরোয়া গতিতে গৃহবধূর মৃত্যু মহারাষ্ট্রে জয়ের পথে এনডিএ রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা রাশিয়ার সেই আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে যা জানা গেছে বড়াইগ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : উপদেষ্টা

সকল