শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না
- ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট নাশকতায় সম্পদহানি হয়েছে। এতে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে সেটি ঠিক। সেই সাথে এটিও সত্যি যে, সরকারের দমন নীতিতে দুই শতাধিক মানুষ নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। তবে এত সব হতাহতের ঘটনা ছাপিয়ে নাশকতার বিষয়টি বড় করে দেখাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন সরকারের মন্ত্রীরা।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দেশের অর্থনীতি অনেক আগেই পঙ্গু হয়েছে। এর জন্য কোনো নাশকতা দায়ী নয়। সেটি সরকারের দায়। যখন বিদেশ থেকে স্বাভাবিক আমদানি বন্ধ করে দিয়ে শুধু অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি চালু রাখা হয়, তখন স্পষ্ট হয়ে যায় অর্থনীতি খুঁড়িয়ে চলছে। প্রায় দুই বছর আগেই এ অবস্থায় পৌঁছেছে দেশের অর্থনীতি। এর মধ্যে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং ব্যাংকগুলো এলসি খোলার অর্থ জোগাতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনীতির এ নাজুক অবস্থা কোনো নাশকতার ফল নয়। গত ১৫ বছরে দেশের বিরোধী দলগুলো রাস্তায় নামতে পারেনি মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং দমন-পীড়নে। নাশকতা চালানো দূরের কথা।
অর্থনীতির বেহাল দশার সবশেষ যেসব খবর আসছে, সেগুলোতে নেই কোনো আশার আলো। রফতানি আয় বছরের পর বছর বাড়িয়ে দেখানোর বিষয়টি ধরা পড়ার পর এখন পুরো রফতানির চিত্র নেতিবাচক। রাজস্ব আয়েও ব্যর্থতার পাল্লা অনেক ভারী। অবস্থা এত করুণ যে, বিদায়ী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার কোটি টাকা কমানোর পরও বাকিটা আদায় করা যায়নি। নতুন অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বেশ বড় অঙ্কের। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার কারণগুলো খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘কর্মসম্পাদন’ প্রতিবেদনে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত হয়েছে। এসবের মধ্যে আছে কর সম্প্রসারণে জরিপ কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা ও পদ্ধতিগত সমন্বয়হীনতা এবং কর ব্যবস্থাপনার তথ্য বিনিময়ের অপ্রতুলতা। রয়েছে দক্ষ জনবলের স্বল্পতা ও ভৌত অবকাঠামোসহ প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাব। বলা হয়, সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অটোমেশন বাস্তবায়ন করা মূল চ্যালেঞ্জ।
এর বাইরেও বড় সমস্যা আছে যা সবার জানা। সেটি হলো কর ফাঁকি। বৃহত্তম করদাতাদের মধ্যে যার হাজার কোটি টাকার কর দেয়ার কথা তিনি দিচ্ছেন ১০০ কোটি টাকা। এসব জায়গায় হাত দিতে হলে সব জায়গায় সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সে দায়িত্ব সরকারের। সরকার পনেরো বছরে সেটি করতে পারেনি। বিশাল আকারের ঋণখেলাপির বিষয়টিও স্মরণীয়।
সুশাসন ও জবাবদিহির অভাব, গোষ্ঠীস্বার্থে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া অর্থনীতি পঙ্গু হওয়ার প্রধানতম কারণ। ব্যাংক খাতে বিপর্যয়ের কারণ বিশেষ গোষ্ঠীর ঋণের নামে লুটপাট।
সুতরাং অর্থনীতি পঙ্গু হওয়ায় নাশকতার বাইরের কারণগুলো বেশি দায়ী। নাশকতায় ক্ষতির তুলনায় বহুগুণ বেশি আর্থিক যে ক্ষতি হয়েছে কারফিউ জারি, সরকারি ছুটি ঘোষণা, ইন্টারনেট বন্ধ ইত্যাদি কারণে। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে দীর্ঘমেয়াদে। এখন সময় ওই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার দিকে মনোযোগ দেয়া। জাতি দেখেছে, নাশকতার দায়ে সরকারি দলের নেতাই ধরা পড়েছে ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা